কৃপণতা অকল্যাণ নিয়ে আসে
মহান আল্লাহ মানুষকে মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। মধ্যপন্থা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি এনে দেয়। মধ্যপন্থায় রয়েছে অবারিত কল্যাণ, কিন্তু কৃপণতায় কোনো কল্যাণ নেই। মহান আল্লাহ কৃপণদের পছন্দ করেন না।
কৃপণতা অবলম্বন করে জমানো সম্পদ মানুষকে দুনিয়া-আখিরাতের কোনো কল্যাণ এনে দিতে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ যাদের তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে।
আর আসমানসমূহ ও জমিনের উত্তরাধিকার আল্লাহরই জন্য। আর তোমরা যা আমল করো সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮০)
এ জন্য আল্লাহপ্রদত্ত রিজিক তাঁর নেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী খরচ করা উচিত, দ্বিন ও মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করা উচিত। যারা এ সমস্ত বিষয়ে কৃপণতা করে এবং সম্পদ গোপন করে, তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ইবাদত করো আল্লাহর, তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক কোরো না। আর সদ্ব্যবহার করো মাতা-পিতার সঙ্গে, নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে, এতিম, মিসকিন, নিকটাত্মীয়-প্রতিবেশী, অনাত্মীয়-প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সঙ্গী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে, যারা দাম্ভিক, অহংকারী। যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয়; আর গোপন করে তা, যা আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে দান করেছেন। আর আমি প্রস্তুত করে রেখেছি কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি। (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৬-৩৭) এ জন্য মহানবী (সা.) সব সময় আল্লাহর কাছে এই বদ-অভ্যাসটি থেকে আশ্রয় চাইতেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলতেন, হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা, পেরেশানি, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, ঋণভার ও মানুষের প্রভাবাধীন হওয়া থেকে। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৬৯)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বদ-অভ্যাস থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।