ইসলাম

প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা অতি বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, জলচ্ছ্বাস, ঝড়, টর্নেডো, মহামারি ইত্যাদিকে গালি দেয়া যাবেনা

ইসলামে গালিগালাজ করা সম্পূর্ণ হারাম। কোনো কারণেই কাউকে গালি দেওয়া যাবে না। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যারা বিনা অপরাধে ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে।’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৮)

ইমানদার ব্যক্তি কখনো কাউকে গালি দিতে পারে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালাগালকারী হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২০৪৩)

জগতের সবকিছু আল্লাহর সৃষ্টি। এর সংখ্যা অসংখ্য ও অগণিত। আল্লাহ এদের যেভাবে নির্দেশ দেন, তারা সেভাবেই চলেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই।’ (সুরা ফাতহ, আয়াত: ৭)এর মধ্যে একটি হলো বাতাস। আল্লাহ একে যেভাবে নির্দেশ করেন সেভাবেই সে বয়ে যায়। কল্যাণ বয়ে আনুক বা অকল্যাণ। তা আল্লাহর আদেশেই আসে। সুতরাং নিজের সুবিধামতো না এলে বাতাসকে গালমন্দ করার কোনো অধিকার মানুষের নেই। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর

সামনে একবার বাতাসকে অভিশাপ দিল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি বাতাসকে অভিশাপ দিয়ো না। কারণ, সে নির্দেশিত। কেউ যদি কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেয় আর তা যদি ওই অভিশাপের উপযুক্ত না হয়, তবে সেই অভিশাপ অভিশাপকারীর দিকে ফিরে আসে।” (তিরমিজি, হাদিস: ১৮৭৮)

বাতাস আল্লাহর সৈনিক। এর দ্বারা আল্লাহতায়ালা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সাহায্য করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে পুবালি বায়ু দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। আর আদ জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে পশ্চিমা বায়ু দিয়ে।’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৩৩)

খন্দক যুদ্ধের দিন পূর্ব দিক থেকে বাতাস পাঠিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সাহায্য করা হয়েছে। আর আদ জাতির ওপর ধ্বংস নেমেছে পশ্চিমা বায়ুর মাধ্যমে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালি দিয়ো না। কারণ, তা আল্লাহর অপার দয়াসমূহের একটি; তা রহমত ও আজাব বয়ে আনে। এর মধ্যে থাকা কল্যাণ তোমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো এবং এর মধ্যে থাকা অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৭২৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালমন্দ করবে না। অপছন্দনীয় কিছু দেখলে বলবে, হে আল্লাহ, আমরা তোমার কাছে এই বাতাসের কল্যাণ এবং তাতে নিহিত বিষয়ের কল্যাণ এবং সে যে বিষয়ে নির্দেশিত হয়েছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করি। তোমার কাছে আশ্রয় চাই এই বাতাসের অকল্যাণ থেকে, তাতে নিহিত বিষয়ের অমঙ্গল থেকে এবং সে যে বিষয়ে নির্দেশিত তার অমঙ্গল থেকে। (মুসনাদ লিল ইমাম আহমাদ, হাদিস: ২১১৭৬)

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *