মেয়েদের জন্য ফেইসবুকে পুরুষ বন্ধু বানিয়ে তাদের মাঝে দ্বীনী দাওয়াতের কাজ করা কি শরীয়তসম্মত?
প্রশ্ন
মেয়েদের জন্য ফেইসবুকে পুরুষ বন্ধু বানিয়ে তাদের মাঝে দ্বীনী দাওয়াতের কাজ করা কি শরীয়তসম্মত? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
নারীরা যদি শুধুমাত্র নারীদের মাঝে দ্বীনী দাওয়াতী কাজ করে তাহলে আর কোন গোনাহে লিপ্ত হবার সম্ভাবনা না থাকলে ইন্টারনেটে নারীদের দ্বীনী দাওয়াতী কাজ করা জায়েজ আছে।
তবে অনিরাপদ প্লাটফর্ম হওয়ায় ব্যবহার না করাই উত্তম।
কিন্তু যদি অন্য কোন গোনাহে লিপ্ত হবার সম্ভাবনা থাকলে, যেমন চোখের গোনাহ, গান শোনা, নাজায়েজ কিছু দেখা ইত্যাদি। তাহলে জায়েজ নেই।
আর যেহেতু বর্তমানে ইন্টারনেট জগত একটি ফিতনার প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নারীদের জন্য পুরুষ ফ্রেন্ড বানিয়ে দাওয়াতের নিয়তে হলেও কার্যক্রম পরিচালনা করা জায়েজ নয়।
কারণ, এর মাধ্যমে অনেকগুলো গোনাহ করার পরিবেশ তৈরী হয়। যেমন-
১ অপ্রয়োজনীয় আলাপ।
২ কথা বা লেখা দেখে পরস্পর ভালোলাগা তৈরী হয়ে যাওয়া।
৩ নারী পুরুষের আকর্ষণ প্রাকৃতিক। তাই শয়তান পরস্পর নাজায়েজ সম্পর্কের দিকে নিয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ وَمَن يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ ۚ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ مَا زَكَىٰ مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ أَبَدًا وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ [٢٤:٢١]
হে ঈমানদারগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। যে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে। যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকত, তবে তোমাদের কেউ কখনও পবিত্র হতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন। আল্লাহ সবকিছু শোনেন, জানেন। [সূরা নূর-২১]
مُحْصَنَاتٍ غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ وَلَا مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ [٤:٢٥]
তাদের চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা করা হবে, তারা কেবল কাম-চরিতার্থকারিনী এবং গুপ্ত প্রণয় গ্রহণকারীণী হবে না। [সূরা নিসা-২৩]
عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ»
উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পুরুষের জন্য স্ত্রীজাতি অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর কোন ফিতনা আমি রেখে গেলাম না। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৬]
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ الدُّنْيَا حُلْوَةٌ خَضِرَةٌ، وَإِنَّ اللهَ مُسْتَخْلِفُكُمْ فِيهَا، فَيَنْظُرُ كَيْفَ تَعْمَلُونَ، فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاءَ، فَإِنَّ أَوَّلَ فِتْنَةِ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَانَتْ فِي النِّسَاءِ»
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি বলেনঃ নিশ্চয় দুনিয়া লোভনীয় ও সবুজ-শ্যামল। আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে তোমাদেরকে খলীফা (শাসক) বানিয়েছেন। তিনি দেখবেন যে, তোমরা কেমন কাজ করো। সাবধান! দুনিয়া সম্পর্কে সর্তক হও এবং নারীদের সম্পর্কেও সর্তক হও। নিশ্চয় বনী ইসরাইলের মাঝে প্রথম ফিতনা নারীদের মাধ্যমেই হয়েছে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭৪২]
، أَلَا لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا كَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সাবধান! কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে নির্জনে মিলিত হলে সেখানে অবশ্যই তৃতীয়জন হিসাবে শয়তান অবস্থান করে (এবং পাপাচারে প্ররোচনা দেয়)। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২১৬৫]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com
This article answered all my questions—very useful and easy
to follow.
“Happy you liked it! Ask me if you have more questions.”