অহংকারের চিকিৎসা
অহংকার এমন একটি কবীরা গুনাহ যা মানুষকে ধ্বংস করে দেয় এবং একজন মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতকে নষ্ট করে দেয়। এ কারণেই একজন মানুষের জন্য অহংকার থেকে দূরে থাকা বা তার জীবন থেকে অহংকার দূর করা অকাট্য ফরজ। আর এ কথাও সত্য যার মধ্যে অহংকার থাকে সে শুধু আশা করলে বা ইচ্ছা করলেই অহংকারকে দূর করতে বা অহংকার হতে বাঁচতে পারবে না। তাকে অবশ্যই এ মারাত্মক ব্যাধির চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। নিচে অহংকারের কিছু চিকিৎসা আলোচনা করা হলো।
ক. অন্তর থেকে অহংকার মূলোৎপাটন করা:
প্রথমে অহংকারী ব্যক্তি নিজেকে চিনতে হবে। তারপর তার প্রভুকে চিনতে হবে। একজন মানুষ যখন নিজেকে ভালোভাবে চিনতে পারবে এবং আল্লাহ তায়ালার বড়ত্ব ও মহত্বকে সঠিকভাবে বুঝতে পারবে তখন তার মধ্যে বিনয় ও নম্রতা ছাড়া আর কিছুই থাকতে পারে না। অহংকার তার থেকে এমনিতেই দূর হয়ে যাবে। তখন সে অবশ্যই জানতে পারবে বড়ত্ব ও মহত্ব একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য প্রযোজ্য নয়।
নিজেকে চেনার জন্য প্রথমে নিজের সৃষ্টির নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সে প্রথমে কি ছিল? তারপর দুনিয়াতে আসার পর মাঝখানে তার অবস্থা কেমন ছিল এবং তার পরিণতি কী হবে? এসব নিয়ে চিন্তা করলে তার মধ্যে অহংকার থাকতেই পারে না। আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রথমে এক ফোটা নিকৃষ্ট পানি থেকে বীর্য হিসেবে তৈরি করেন। তারপর বীর্যকে আলাকায় রূপান্তরিত করেন। তারপর আলাকাকে গোশতের টুকরা, গোশতের টুকরাকে হাঁড়ে পরিণত করেন। তারপর আবার হাঁড়কে গোশতের আবরণ দিয়ে সাজান। এ ছিল তার সৃষ্টির সূচনা। আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রথমেই পরিপূর্ণ মাখলুকরূপে সৃষ্টি করেন নি; বরং আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তার হায়াতের পূর্বে মৃত্যু দিয়েই শুরু করেন।
অনুরূপভাবে শক্তির পূর্বে দুর্বলতা, ইলমের পূর্বে অজ্ঞতা এবং সম্পদশালী হওয়ার পূর্বে অভাব ও দরিদ্রতা দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি করেন। এতদসত্ত্বেও তার কিসের অহংকার, বড়াই, গৌরব ও অহমিকা? তারপর যখন মানুষ দুনিয়াতে বসবাস করতে থাকে তখন সে তার নিজের ইচ্ছায় বেঁচে থাকতে পারে না। সে যে রকম চায় সবকিছু তার মনের মতো হয় না। সে চায় সুস্থ থাকতে কিন্তু পারে না। চায় ধনী ও অভাবমুক্ত থাকতে কিন্তু তা হয় না। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ওপর বিপদ-আপদ আসতেই থাকে। সে পিপাসিত, ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ হতে বাধ্য হয়, কোনো কিছু তাকে বিরত রাখতে পারে না। কোনো কিছু মনে রাখতে চাইলে সে পারে না, ভুলে যায়। আবার কোনো কিছু ভুলতে চাইলে তা ভুলতে পারে না। কোনো কিছু শিখতে চাইলে তা শিখতে পারে না।
মোটকথা, সে একজন অধীন গোলাম। সে তার নিজের কোনো উপকার করতে পারে না, কোনো ক্ষতিকে সে নিজের থেকে প্রতিহত করতে পারে না। নিজের কোনো কল্যাণ ভয়ে আনতে পারে না এবং কোনো অকল্যাণ বা ক্ষতিকে ঠেকাতেও পারে না। এর চেয়ে অপমানকর আর কি হতে পারে! যদি সে নিজেকে চিনতে পারে! তারপর সর্বশেষ অবস্থা ও পরিণতি হলো, মৃত্যু। মৃত্যু তার জীবন, শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিকে কেড়ে নেবে। আর কোনো কিছু দেখতে পারবে না, শুনতে পারবে না। তার জ্ঞান, বুদ্ধি শক্তি ও অনুভূতি আর অবশিষ্ট থাকবে না। বন্ধ হয়ে যাবে তার দেহের নড়চড় ও অনুভূতি। সে একেবারেই নিস্তেজ ও জড় পদার্থে রূপান্তরিত হবে। যেমনটি সৃষ্টির প্রথমে ছিল। তারপর তাকে মাটিতে পুঁতে রাখা হবে। তখন সে হয়ে যাবে দুর্গন্ধযুক্ত অপবিত্র লাশ। তারপরও যদি এই হতো তার শেষ পরিণতি এবং এ অবস্থার ওপর যদি শেষ হতো সব কিছু! আর যদি জীবিত করা না হতো! কিন্তু না, এতো শেষ নয় বরং শুরু। চূর্ণ-বিচূর্ণ হওয়ার পর তাকে আবারো জীবিত করা হবে। যাতে তাকে কঠিন বিচারের সম্মুখীন করা হবে। তাকে তার কবর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হবে কিয়ামতের ভয়াবহতায় ও উত্তপ্ত মাঠে। তারপর তার কর্মের দফতর তার সম্মুখে খুলে দেওয়া হবে আর তাকে বলা হবে। তুমি তোমার কর্মের দফতর পড়।
আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা দিয়ে বলেন, “আর আমরা প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার ঘাড়ে সংযুক্ত করে দিয়েছি এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য আমি বের করব একটি কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত। পাঠ কর তোমার কিতাব, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশকারী হিসেবে যথেষ্ট।’ (সুরা আল-ইসরা, আয়াত-১৪) যখন সে তার আমলনামা প্রত্যক্ষ করবে, তখন বলবে,“আর আমলনামা রাখা হবে। তখন তুমি অপরাধীদেরকে দেখতে পাবে ভীত, তাতে যা রয়েছে তার কারণে। আর তারা বলবে, ‘হায় ধ্বংস আমাদের! কী হলো এ কিতাবের! তা ছোট-বড় কিছুই ছাড়ে না, শুধু সংরক্ষণ করে’ এবং তারা যা করেছে, তা হাজির পাবে। আর তোমার রব কারো প্রতি জুলম করেন না।” (সূরা আল-কাহাফ, আয়াত-৪৯)
খ. অহংকারের বস্তুসমূহ নিয়ে চিন্তা করা :
যেসব বস্তু নিয়ে অহংকার করে তাতে চিন্তা ফিকির করা এবং মেনে নেওয়া যে, তার জন্য এসব বস্তু নিয়ে অহংকার করা উচিত নয়। কেউ যদি তার বংশ মর্যাদা নিয়ে অহংকার করে, তখন তাকে বুঝতে হবে যে, এটি একটি মূর্খতা বৈ কিছুই হতে পারে না। কারণ, সে তো তার নিজের ভেতরের কোনো যোগ্যতা নিয়ে অহংকার করছে না। সে অহংকার করছে অন্যদের যোগ্যতা নিয়ে, যা একেবারেই বিবেক ও বুদ্ধিহীন কাজ।
উবাই ইবন কাআব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে দুই লোক বংশ নিয়ে বিবাদ করে। অতঃপর তাদের একজন বলল, আমি অমুকের ছেলে অমুক, তুমি কে? তোমার মাতা নেই। তাদের বিবাদ শোনে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মুসা আলাইহিস সালামের যুগে দুই ব্যক্তি বংশ নিয়ে ঝগড়া করে। তখন তাদের একজন অপর জনকে বলে, আমি অমুকের ছেলে অমুক, অমুকের ছেলে অমুক, এভাবে সে তার নয় পুরুষ পর্যন্ত গণনা করে, আর বলে তুমি কে? তোমার মা নেই। তখন সে বলল, আমি অমুকের ছেলে অমুক, আর অমুক হলো ইসলামের অনুসারী। তিনি বলেন, তাদের বিতর্কের কারণে আল্লাহ তায়ালা মুসা আলাইহিস সালামকে ওহি দিয়ে পাঠান যে, আপনি এ দুই ব্যক্তি যারা বংশ নিয়ে বিবাদ করছে তাদের বলেন, হে নয় পর্যন্ত গণনাকারী! তুমি যে নয়জনের নাম উল্লেখ করছ, তারা সবাই জাহান্নামে, আর তুমি হলে তাদের দশম ব্যক্তি। আর অপর ব্যক্তিকে বলেন, হে দুই পুরুষ পর্যন্ত গণনাকারী তুমি যে দুইজনের নাম নিলে তারা উভয়ে জান্নাতে যাবে আর তুমি হলে তৃতীয় ব্যক্তি।’ (আহমদ, হাদিস নং-২০৬৭৪)
একজন অহংকারীকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, অহংকার কেবল আল্লাহ তায়ালার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর কারো জন্য অহংকার প্রযোজ্য নয়। যখন কোনো ব্যক্তি অহংকার করে, তখন সে আল্লাহর নিকট ঘৃণিত ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। এসব চিন্তা যদি একজন মানুষ করে তাহলে তার মধ্যে অহংকার থাকতে পারে না। তাকে বিনয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। ইবাদত-বন্দেগী ও নেক আমল নিয়ে অহংকার করা মানুষের জন্য একটি বড় ধরনের ফিতনা।
এ বিষয়ে হাদিসে একটি ঘটনা বর্ণিত। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, ‘বনী ইসরাইলের মধ্যে দুইজন লোক ছিল, তারা একে অপরের বন্ধু। তাদের একজন গুনাহ করত আর অপরজন ইবাদতে লিপ্ত থাকত। যে লোকটি ইবাদতে লিপ্ত থাকতো সে সব সময় দেখত তার অপর ভাই গুনাহে মগ্ন। তখন সে তাকে বলত, তুমি গুনাহের কাজ ছেড়ে দাও! কিন্তু সে তার কথা শুনত না। তারপর একদিন তাকে গুনাহ করতে দেখে বলল, তুমি গুনাহ করো না। গুনাহ হতে বিরত থাক! সে তার কথায় কোনো ভ্রুক্ষেপ করল না এবং বলল, তুমি আমাকে আমার মতো করে চলতে দাও। আমি এবং আমার রবের মাঝে আমাকে ছেড়ে দাও। তুমি কি আমার দায়িত্বশীল হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরিত? তখন সে রাগ হয়ে তাকে বলল, আল্লাহর শপথ করে বলছি আল্লাহ তায়ালা তোমাকে ক্ষমা করবেন না। অথবা বলল, আল্লাহ তায়ালা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। তারপর আল্লাহ তায়ালা তাদের উভয়ের রুহকে কবজ করল, তারা উভয়ে আল্লাহ তায়ালার দরবারে একত্র হলো, আল্লাহ তায়ালা ইবাদতে যে লোকটি লিপ্ত থাকতো তাকে বললেন, তুমি কি আমার সম্পর্কে জানতে অথবা বললেন, তুমি কি আমার হাতে কি আছে তা করার ক্ষমতা রাখতে? আর অপরাধীকে বলল, তুমি আমার রহমতের বদৌলতে জান্নাতে প্রবেশ করো! আর অপরজনের বিষয়ে ফিরিশতাদের ডেকে বলল, তোমরা তাকে জাহান্নামে নিয়ে যাও এবং তাতে তাকে নিক্ষেপ করো। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি ওই সত্তার কসম করে বলছি,যার হাতে আমার প্রাণ সে এমন একটি কথা বলে ফেলল, যার দ্বারা দুনিয়া ও আখিরাতকে বরবাদ করে দাও।’ (আহমদ, হাদিস নং-১৬৭৬১)
আবু ইয়াযিদ আল-বুসতামী বলেন, যখন কোনো মানুষ মনে করে যে, মানুষের মধ্যে কোনো মানুষ তার থেকে খারাপ আছে, তা হলে সে অবশ্যই অহংকারী। আর আল্লাহ তায়ালা যারা কল্যাণের প্রতি অগ্রগামী তাদের বিষয়ে বলেন, তারা হলেন, যারা ইবাদত ও আমলে সালেহ করেন আর ভয় করেন যে, তা তাদের থেকে কবুল করা হবে না। আল্লাহতায়ালা তাদের বিষয়ে বলেন, ‘আর যারা যা দান করে তা ভীত-কম্পিত হূদয়ে করে থাকে এজন্য যে, তারা তাদের রবের দিকে প্রত্যাবর্তনশীল। তারাই কল্যাণসমূহের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এবং তাতে তারা অগ্রগামী।
গ. দোয়া করা ও আল্লাহর নিকট সাহায্য চাওয়া :
দোয়া ও আল্লাহর নিকট সাহায্য চাওয়া হলো, অহংকার থেকে বাঁচার জন্য সব চেয়ে উপকারী ও কার্যকর ওষুধ। কারণ, আল্লাহ তায়ালা যাদের হেফাজত করেন, তারাই অহংকার থেকে বাঁচতে পারে। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় নেই। এ কারণে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন উম্মতদের দোয়া শিখিয়ে দেন এবং তিনি নিজেও সালাতে বেশি বেশি করে আল্লাহর নিকট দোয়া মুনাজাত করেন।
যুবাইর ইবন মুতয়ীম থেকে বর্ণিত, ‘তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একবার সালাত আদায় করতে দেখেন, তখন তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সালাতে এ কথাগুলো বলতে শোনেন, আল্লাহ তায়ালা সবকিছু হতে বড়, আল্লাহ তায়ালা সবকিছু হতে বড়, আল্লাহ তায়ালা সবকিছু হতে বড়। আর সর্বাধিক প্রশংসা কেবলই আল্লাহর, সর্বাধিক প্রশংসা কেবলই আল্লাহর, সর্বাধিক প্রশংসা কেবলই আল্লাহর। আমি বিতাড়িত শয়তান হতে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, আমি আরো আশ্রয় চাচ্ছি তার অহংকার থেকে তার প্ররোচনা থেকে ও ষড়যন্ত্র থেকে।’ (ইবন হাব্বান, হাদীস নং ১৭৮০)
ঘ, বিনয় অবলম্বর করা
অহংকারের প্রতিকার ও তা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বিনয় অবলম্বনকরতে হবে। আনাস ইবনে মালেকথেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- .[নবীজি এতটাই বিনয়ী ছিলেন যে] মদীনার কোনো একদাসী ও [নিজের সমস্যা সমাধান বা কোনো প্রয়োজনে] রাসূলুল্লাহ-কে যেখানে চাইত নিয়ে যেতে পারত। আর তিনিও তার সাথে যেতেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৭১]
অপর এক হাদিসে বর্ণিত আছে আর তিনি [রাসূলুল্লাহ ] অসহায়-দুর্বলদের সাথে গিয়ে তাদের প্রয়োজন পূরণ করে দিতেও অস্বীকৃতি জানাতেন না [এবং একে নিজের জন্য অসম্মানের মনে করতেন না]। [আল-মু’জামুল কাবীর লিত-তবরানী, হাদীস নং ৮১০৩]
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহিমাহুল্লাহ ও ইবনে হিব্বান রহিমাহুল্লাহ এর সূত্রে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা থেকে বর্ণনা করেন যে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই আর কাপড় সেলাই করতেন এবং জুতায় তালি লাগাতেন (মুসনাদে আহমাদ হাদিস নং ২৪৯০৩ )
এ বিনয় যার যতটা হাসিল হবে, বান্দা হিসেবে সে ততটাই সফল। আল্লাহ তায়ালার বিধি-বিধানের সামনে সে ততটাই নিজেকে সঁপে দিতে পারবে। শোকর আর কৃতজ্ঞতায় ততটাই আপ্লুত হবে তার হৃদয় মন। বাহ্যত নিজের শ্রমে ঘামে কিংবা অর্থ মেধায় অর্পিত সফলতাকেও যখন সে আল্লাহ তাআলার দান বলে বিশ্বাস করবে তখন তার স্তরে উন্নীত নয় এমন কাউকে দেখে তার মনে অহংকারের পরিবর্তে যোগ হবে কৃতজ্ঞতার এক নতুন মাত্রা। পরম বিনয় সে মনে মনে বলবে, সকল কৃতজ্ঞতা সেই আল্লাহর যিনি আমাকে তার অনেক সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। বাস্তবিক অর্থেই সে নিজেকে এভাবে মিশিয়ে দিতে পারে মাটির সঙ্গে।মাটির পৃথিবীতেই তাকে সম্মানের আসনে বসিয়ে আল্লাহ তাআলা তাকে পুরস্কৃত করবেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুস্পষ্ট ঘোষণা ”আল্লাহর জন্য যে বিনয়ী হয় আল্লাহ তাকে সমুন্নত করেন তখন সে নিজের চোখে তুচ্ছ হলেও মানুষের চোখে অনেক বড় বিবেচিত হয় (শুআবুল ঈমান নিল বায়হাকী হাদিস নং ৮১৪০)
এ বিনয় যখন কারো হাসিল হবে তখন এর আলামত প্রকাশ পাবেই তার ওঠা বসায় কথাবার্তায় এমনকি হাঁটাচলায় আল্লাহ তায়ালার প্রকৃত সেই বান্দাদের বৈশিষ্ট্যাবলী পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে ”রাহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মূর্খরা কথা বলতে থাকে তখন তারা বলে সালাম (সূরা ফুরকান :আয়াত ৬৩)