হাদিসের আলোকে চারটি মহৎ গুণ, যার অন্যতম হলো আমানত রক্ষা করা
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি গুণ এতই মূল্যবান যে, তা যদি তোমার মধ্যে থাকে তাহলে দুনিয়ার আর কী তোমার নেই সে চিন্তারই দরকার নেই।
এই চার গুণ কী
এই চার গুণ হচ্ছে
১. আমানত রক্ষা করা।
২. সত্য কথা বলা।
৩. উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া।
৪. রিজিক হালাল হওয়া। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৩৬৫
এই চারটি ছিফাত শুনতে সাধারণ ও ছোট ছোট কয়েকটি বাক্য মনে হলেও মূলত এর মাঝে পুরো দ্বীন ও তার সকল গুণাবলি নিহীত রয়েছে।
এবার আমরা এই চার ছিফাতের প্রতিটির উপর পৃথক পৃথক আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ।
প্রথম গুণ : আমানত রক্ষা করা
এ বিষয়ে কুরআন-হাদীসে অত্যন্ত তাকিদ এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে এই আদেশ করেছেন যে, আমানতসমূহ তার হকদারের কাছে পৌঁছে দাও।-সূরা নিসা : ৫৮
হাদীস শরীফে আমানতের খেয়ানত করাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুনাফিকের খাছলত বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, তিনটা স্বভাব যার মাঝে পাওয়া যাবে সে পাক্কা মুনাফিক। ১. ওয়াদা খেলাফ করা ২. আমানতের খেয়ানত করা ৩. মিথ্যা বলা।
এই তিন মন্দ স্বভাবকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুনাফিকের আলামত বলেছেন। সুতরাং একজন মুসলমানের মাঝে কখনোই এগুলো থাকতে পারে না।
মোটকথা, আমানত এমন একটি গুণ, যার মাধ্যমে একজন মুসলমান প্রকৃত মুসলমান হয়।
নবুওয়তের পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কয়েকটি প্রসিদ্ধ গুণ
নবুওয়ত লাভের আগে থেকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদিক ও আমীন অর্থাৎ সত্যবাদী ও আমানতদার বলে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে বড় দুশমনও তাঁর কাছে আমানত রাখতে প্রস্ত্তত ছিল।
এমনকি তিনি যখন মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত করলেন তখনও তাঁর কাছে মক্কাবাসীর আমানত গচ্ছিত ছিল এবং সে আমানত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি আলী রা.কে মক্কায় রেখে গিয়েছিলেন। তো এটা ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিশেষ গুণ, যা মক্কার কাফেরদের মাঝেও প্রসিদ্ধ ছিল।
সুতরাং তাঁর উম্মত হওয়ার দাবিই হল আমানত রক্ষার বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগী হওয়া।