প্রশ্নোত্তর

বিধর্মীদের দেয়া ইফতার গ্রহণ করা যাবে না? তাদের সব কিছুই কি হারাম?

প্রশ্ন

From: আহমাদ

বিষয়ঃ বিধর্মীর দেওয়া ইফতার গ্রহন করা যাবে কি না?

বিধর্মীর দেওয়া ইফতার গ্রহন করা যাবে কি না? যদি গ্রহন করা হালাল হয়? আমি জানি কোন মুসলিম বিধর্মীর সামাজিক সম্পর্ক ছাড়া কোন সম্পর্ক রাখা যাবেনা। আর হারাম উপার্জনকৃত মাল থেকে হাদিয়া ও হারাম উপার্জনকারীর দাওয়াত গ্রহন করা যাবেনা আর বিধর্মীর সকল কিছুই হারাম তো কিভাবে বিধর্মীর দেওয়া ইফতার হালাল হবে?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

বিধর্মীর সাথে আন্তরিক মোহাব্বত রাখা যাবে না। একথা ঠিক আছে। কিন্তু সামাজিক সম্পর্ক রাখা শরীয়তেরই বিধান। তবে অতিরিক্ত টান থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। সেই সাথে এ সম্পর্কে দরূণ যদি দ্বীনী ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তাহলেও সম্পর্ক রাখা যাবে না। দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট করার মানসে, সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে সম্পর্ক রাখাতে শরয়ী কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।

إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَىٰ إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٦٠:٩

আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। {সূরা মুমতাহিনা-৮}

সুতরাং যেসব বিধর্মীগণ আয়াতে উল্লেখিত দোষে দুষ্ট নয়, এমন বিধর্মীদের সাথে সামাজিক বন্ধন অটুট রাখাতে শরয়ী বিধিনিষেধ নেই।

এক ইহুদী কিশোর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমত করত। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন এবং তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। তখন সে মুসলমান হয়ে গেল। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৩৫৬, ৫৬৫৭)

সুতরাং কোন বিধর্মী যদি সামাজিকতা হিসেবে ইফতার প্রদান করে থাকে, তাহলে এতে যদি কোন হারাম খাদ্য না থাকে, বা হারাম উপায়ে তৈরী না হয়ে থাকে, তাহলে তা গ্রহণ করাতে কোন সমস্যা নেই।

وَفِي التَّفَارِيقِ لَا بَأْسَ بِأَنْ يُضِيفَ كَافِرًا لِقَرَابَةٍ أَوْ لِحَاجَةٍ كَذَا فِي التُّمُرْتَاشِيِّ. وَلَا بَأْسَ بِالذَّهَابِ إلَى ضِيَافَةِ أَهْلِ الذِّمَّةِ هَكَذَا ذَكَرَ مُحَمَّدٌ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الرابع فى اهل الذمة-5/347)

আর বিধর্মীদের সকল কিছুই হারাম কথাটি সঠিক নয়। বিধর্মীরা যদি হালাল চাকুরী করে, হালাল ব্যবসা করে, তাহলে তাদের সেই হালাল চাকুরী ও হালাল ব্যবসার টাকা আপনি হারাম বলবেন কিভাবে?

হ্যাঁ, যদি হারাম উপায়ে উপার্জন করে থাকে, তাহলে তা গ্রহণ করা যাবে না।

হারাম টাকার হাদিয়া সংক্রান্ত আমাদের সাইটের প্রকাশিত প্রশ্নোত্তরটি পড়তে পারেন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– [email protected]

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *