ইসলাম

হারানো মালের সন্ধান লাভ

ইমাম আবু ইউসুফ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি ইমাম আবু হানীফা রহ. এর নিকট এসে বললো, হযরত! আমি এক সমস্যায় পড়েছি, আমাকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন। ইমাম আযম রহ. বললেন, কী সমস্যা তোমার? খুলে বলো। লোকটি বললো, হযরত! আমি ঘরের এক কোণে কিছু সম্পদ লুকিয়ে রেখেছিলাম । কিন্তু এখন কিছুতেই সে সম্পদ খুঁজে পাচ্ছি না। কোথায় রেখেছিলাম তা কোনোভাবেই মনে করতে পারছি না। মেহেরবানী করে আমাকে কোনো পন্থা বলে দিন।

ইমাম আবু ইউসুফ রহ. বলেন, লোকটি তার অবস্থা বর্ণনা করে কান্না করতে লাগলো। তখন ইমাম আবু হানীফা রহ. তাঁর ছাত্রদের বললেন, চলো, তোমরা আমার সাথে। একথা বলে তিনি লোকটিকে নিয়ে তার বাড়ির দিকে চলতে লাগলেন। তাঁর সাথে ছাত্রদেরও এক বড় জামাত ছিলো।

অতঃপর তিনি ছাত্রদের নিয়ে সে লোকটির বাড়িতে উপস্থিত হলেন। ইমাম আযম রহ. লোকটিকে বললেন, কোথায় তোমার ঘর, যেখানে তুমি তোমার মাল হিফাযত করেছিলে? লোকটি তার ঘর দেখিয়ে দিলো। ইমাম আযম রহ. ঘরটি দেখিয়ে ছাত্রদের বললেন, হিফাযতের জন্য তোমরা যদি তোমাদের মাল পুঁতে রাখতে, তাহলে এই ঘরের কোথায় রাখতে?

একজন ছাত্র ইঙ্গিত করে একটি জায়গা দেখিয়ে বললো, এখানে। দ্বিতীয়জন অন্য আরেকটি জায়গা দেখিয়ে বললো, ওখানে। এভাবে পাঁচজন নিজ নিজ ধারণা অনুযায়ী পাঁচটি জায়গা চিহ্নিত করে দেখালো ।

এবার ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, এই পাঁচ জায়গার কোনো একটিতে অবশ্যই মালগুলো পাওয়া যাবে। তিনি জায়গাগুলো খননের নির্দেশ দিলেন ।

খনন কাজ শুরু হলো। পর্যায়ক্রমে তৃতীয় স্থানটি যখন খনন করা হলো, তখন সমস্ত মাল বের হয়ে এলো। অতঃপর ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, আল্লাহর শুকর আদায় করো, যিনি তোমার হারানো সম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছেন।

তালাক হলো না

এক মহিলার হাতে পানির পাত্র ছিলো। মহিলার স্বামী বললো, যদি তুমি এই পানি পান করো অথবা পানি পাত্র থেকে ফেলে দাও কিংবা পাত্রটি মাটিতে রেখে দাও বা অন্য কারো হাতে দিয়ে দাও, তাহলে তুমি তিন তালাক ।

ইমাম আবু হানীফা রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হলো, বর্ণিত অবস্থায় মহিলার তালাক থেকে বাঁচার কোনো উপায় আছে কি না? বাহ্যিক দৃষ্টিতে তালাক থেকে বাঁচার কোনো উপায় ছিলো না। প্রশ্নকারী এবং উপস্থিত সকলে এটাই মনে করেছিলো। তারা ভেবে ছিলো, ইমাম আবু হানীফা রহ.ও জবাব দেবেন, না, বর্ণিত অবস্থায় তালাক থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই ৷

কিন্তু না, ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, হ্যা, এ অবস্থায়ও তালাক থেকে বাঁচার উপায় আছে। একটি কাপড় পাত্রে রেখে দেবে। কাপড়টি পাত্রের সব পানি চুষে নেবে। তাতে পাত্র খালি হয়ে যাবে। পাত্রটি খালি হওয়ার পর যে কোনো পদ্ধতিই অবলম্বন করা হোক না কেন, তালাক হবে না। কেননা, পাত্র খালি হওয়ার সাথে তালাক সম্পৃক্ত করা হয়নি।

তথ্যসূত্র:

বই : ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. এর ঈমানদীপ্ত গল্প

লেখক : মুফতি মাহফুজ মোসলেহ

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *