জমাকৃত টাকার উপর যাকাত সম্পর্কিত ৬ টি মাসআলা।
বিশেষ প্রয়োজনে সঞ্চয়কৃত টাকার বিধান ০১. মাসআলা : নেসাব পরিমাণ টাকা বিশেষ উদ্দেশ্যে (যেমন; বোনের বিয়ের জন্য) জমা করে রাখলে তাতেও যাকাত ওয়াজিব (আপকে মাসায়েল : ৩/৩৬৩)
চাকরির উদ্দেশ্যে রাখা জামানতের টাকার যাকাত। ০২.মাসআলা : কোন ব্যক্তি চাকরির উদ্দেশ্যে কারো কাছে এক হাজার টাকা জামানত রেখেছে । চাকরি কালীন সময়ে এ টাকা ফেরত পাবে না। চাকরি শেষ হলে কিংবা কোন কারণে চাকুরিচ্যুত হলে উক্ত টাকা তাকে ফেরত দেওয়া হবে। উক্ত টাকা ফেরত পাওয়ার পর বিগত সকল বছর এর যাকাত আদায় করতে হবে। পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার আশংকা হলে প্রতি বছর অন্যান্য টাকার সাথে এ টাকার যাকাতও আদায় করে দেওয়া যাবে। (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম : ৬/১৩০)
এডভান্সের যাকাত কার উপর ওয়াজিব ০৩. মাসআলা : বাড়ী, দোকান ইত্যাদি ভাড়ার ক্ষেত্রে জামানত স্বরূপ ভাড়াটিয়া থেকে অগ্রিম (এডভান্স) যে অর্থ গ্রহণ করা হয়, তা বাড়ীর মালিকের কাছে কয়েক বছর থাকে এবং ফেরতযোগ্য হয়। তাহলে যে ব্যক্তি উক্ত টাকার মালিক, তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। অতএব, আমানতের টাকার যাকাত তার (বাড়ীর মালিকের) উপর ওয়াজিব নয়, বরং আমানত দাতা (ভাড়াটিয়ার) উপর ওয়াজিব। আর যে টাকা ভাড়াটিয়া থেকে ফেরত দেওয়ার শর্তে গ্রহণ করেছে উক্ত আমানতের টাকার মালিক ভাড়াটিয়া বিধায় এর যাকাত তাকেই আদায় করতে হবে। (আপকে মাসায়েল : ৩/৩৫৩)
হজ্জের জন্য জমাকৃত টাকার যাকাত ০৪. মাসআলা : কোন ব্যক্তি ছয় বছর পূর্বে হজ্জের জন্য ফান্ড পৃথক করে রেখে দিয়েছে, এ বছর সে হজ্জে যেতে চায়, তাহলে উক্ত টাকা ব্যয় না হওয়া পর্যন্ত বিগত বছর সমূহের যাকাত আদায় করা ওয়াজিব । (হেদায়া : ১/১৬৭)
কোম্পানিতে জমাকৃত নেসাব পরিমাণ টাকার যাকাত। ০৫. মাসআলা : যে টাকা আপনি কোম্পানিতে জমা রেখেছেন তা যদি নেসাব পরিমাণ (তথা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার বরাবর) হয় তবে আপনার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। যাকাত আদায়ের যে কোন পদ্ধতি আপনি গ্রহণ করতে পারেন। (আপকে মাসায়েল : ৩/৩৭৫)
প্রভিডেন্ট ফান্ডের যাকাত। ০৬. মাসআলা : কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বেতন থেকে নির্দিষ্ট হারে টাকা কর্তন করে সাথে কিছু সংযোজন করে চাকুরি শেষে তাদেরকে যে টাকা দেয়, তা সরকারী পুরস্কার হিসেবে ধর্তব্য হয়। তাই উক্ত টাকার বিগত বছর সমূহের যাকাত ওয়াজিব হয় না; বরং ভবিষ্যতে তা হস্তগত হওয়ার পর নেসাব পরিমাণ হলে এবং বছর অতিবাহিত হলে যাকাত ফরজ হবে। (নেযামুল ফাতাওয়া : ১/২১২)
তথ্যসূত্রঃ
যাকাত আদায় করি, দোযখ থেকে বাচি।
লেখকঃমাওলানা মুমিনুল হক জাদীদ, ফেনী