হারাম মালের যাকাত সংক্রান্ত।
হারাম মালের যাকাত সম্পর্কিত ৫টি মাসআলা। ০১. মাসআলা : সম্পদ যদি একেবারেই হারাম হয়, তবে তাতে যাকাত ওয়াজিব হয় না, এর মালিক জানা থাকলে তা ফেরত দেওয়া ওয়াজিব। মালিক জানা না থাকলে তা সদকা করা আবশ্যক। আর যদি হালাল হারাম মিশ্রিত হয়, তবে দেখতে হবে হারামের পরিমাণ বাদ দেওয়ার পর নেসাব অবশিষ্ট থাকে কি না? যদি থাকে, তবে যাকাত ওয়াজিব হবে। অন্যথায় যাকাত ওয়াজিব হবে না। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/২৮৩)
০২. মাসআলা : যদি অধিক সম্পদের পাশাপাশি অন্য বৈধ সম্পদও থাকে আর তাতে অবৈধ সম্পদ মিশ্রিত করে দেওয়া হয় তবে ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মতে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। আর যদি হালাল সম্পদ নেসাব পরিমাণ না হয়, তাহলে উক্ত হারাম সম্পদ মালিকদের কিংবা তাদের উত্তরাধিকারীদেরকে ফেরত দেওয়া সম্ভব না হলে, সাদাকা করে দিবে। হারাম সম্পদ দ্বারা মসজিদ নির্মাণ করা বৈধ নয়। তবে (মালিকদের সন্ধান না পাওয়া গেলে কিংবা তাদের উত্তরাধিকারীদের হদিস না মিললে) মাদ্রাসার গরীব ছাত্রদের জন্য সাদাকা করে দেওয়া যাবে।(ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৩/৮৪)
আত্মসাৎকৃত ও ঘুষের টাকার উপর যাকাতের বিধান। ০৩.মাসআলা : আত্মসাৎকৃত ও ঘুষের সম্পদের প্রকৃত মালিক কিংবা তাদের উত্তরাধিকারীদের সন্ধান না পাওয়া গেলে পূর্ণ সম্পদ দান করে দেওয়া আব্যশক। (রদ্দুল মুহতার : ২/৩৪)
ব্যাংকের সুদের যাকাতের বিধান ০৪.মাসআলা : ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট থেকে যে সুদ উত্তোলন করা হয়, উহা খাঁটি সুদ। খাঁটি সুদের টাকার উপর যাকাত ওয়াজিব হয় না। তা সম্পূর্ণটাই সাদাকা করে দেওয়া ওয়াজিব। (কেফায়াতুল মুফতী : ৪/১৪২)
দালালী করে সঞ্চয়কৃত টাকার যাকাত। ০৫.মাসআলা : যায়েদ দালালী করে ক্রেতাকে এরূপ বলে যে, এটা ইমরানের মাল, খালেদ এ পরিমাণ টাকা দিতে চেয়েছিল কিন্তু আমি তাকে দেইনি অথচ খালেদের বলা দাম থেকে বাড়িয়ে বলায় তার কথায় উৎসাহিত হয়ে ক্রেতা পণ্য ক্রয় করে তাকে দালালীর পারিশ্রমিক দিয়ে দেয়। এ জাতীয় পারিশ্রমিকের টাকা সঞ্চয় হয়ে যায়েদের নেসাব পূর্ণ হয়েছে, তাতে যাকাতও দিতে হবে। বাকি এভাবে মিথ্যা বলার কারণে যায়েদ গুনাহগার হবে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, এ জাতীয় ক্রয়- বিক্রয়ে বরকত নেই। (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম : ৬/৯৪)
তথ্যসূত্রঃ
যাকাত আদায় করি, দোযখ থেকে বাচি।
লেখকঃমাওলানা মুমিনুল হক জাদীদ, ফেনী