ইবাদত

সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় বাচ্চাদের বাইরে যেতে না দেওয়া

শিশুরা জান্নাতের ফুল। তুলতুলে নরম দেহাবয়বের মতো তাদের হৃদয়ের পাপড়িগুলোও থাকে কোমল। মহানবী (সা.) শিশুদের মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। যেকোনো শিশুকে তিনি নিজের সন্তানের মতো আদর-সোহাগ করতেন। শিশুদের বিপদাপদ থেকে বাঁচিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

বিশেষত সন্ধ্যার সময় তিনি শিশুদের দেখেশুনে রাখতে বলেছেন। কারণ, সন্ধ্যার পর কিছুক্ষণ জিন-শয়তানরা বাইরে ঘোরাফেরা করে। এ জন্য তাদের কুপপ্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষার উদ্দেশ্যে এ সময় তথা মাগরিব থেকে এশার ওয়াক্ত শুরু হওয়া পর্যন্ত শিশুদের বাইরে নিয়ে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের গৃহপালিত পশু এবং ছেলেমেয়েদের সূর্য ডোবার সময় বের হতে দেবে না—যতক্ষণ না সন্ধ্যার আভা বিলীন হয়ে যায়। কারণ এ সময় শয়তান বিচরণরত থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ২০১৩)

যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পর শিশুদের ঘরে ঢুকিয়ে এবং ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন রাতের আঁধার নেমে আসবে, তখন তোমরা তোমাদের শিশুদের আটকে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন রাতের কিছু অংশ অতিক্রান্ত হবে, তখন তাদের ছাড়তে পারো। তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ করবে এবং এ সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩০৪)

হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু এক হাদিসে বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রাতের সূচনায় (সন্ধ্যার শুরু থেকে) অন্ধকার দূর না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের শিশুদের সামলিয়ে রাখো। এই সময় শয়তানেরা (চারদিকে মানুষের ক্ষতি ও অনিষ্টতায়) ছড়িয়ে পড়ে।’ (আদাবুল মুফরাদ, মুসলিম)

হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা গভীর রাত পর্যন্ত গল্প-গুজবে মশগুল থেকে না। কারণ তোমাদের কেউ জানে না যে, আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকুলের অনেককে রাতে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে ছড়িয়ে দেন। তোমরা (রাতের বেলা) ঘরের দরজাগুলো বন্ধ রাখো; পানপাত্রের (খাবারের পাত্রের) মুখ বেঁধে বা বন্ধ করে রাখ; পাত্রসমূহ ঢেকে রাখো এবং আলো নিভিয়ে দাও।’ (আদাবুল মুফরাদ)

তবে এই হাদিসের এই নির্দেশনাগুলো সতর্কতামূলক। সুতরাং প্রয়োজনবশত এ সময় দোয়া পাঠ করে সতর্কতার সঙ্গে শিশুদের বাইরে নেওয়া যাবে। (ইমাম নববি, শরহ মুসলিম ১৩/১৮৫-৮৬; ইবন হাজার, ফাতহুল বারি ১১/৮৭; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২৬/৩১৭)

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *