তায়াম্মুমের ফরজ,তায়াম্মুম করার সহীহ পদ্ধতি ও তায়াম্মুম ভঙ্গের কারণ
তায়াম্মুমের ফরজ ৩টি
১. নিয়্যত করা তায়াম্মুমের ফরজ
২. সমস্ত মুখ একবার মাসেহ করা
৩. দুই হাতের কনুইসহ একবার মাসেহ করা
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণী- وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ أَوْ لَاَمَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ مِنْةَ.
“যদি তোমরা অসুস্থ হও, অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মাসেহ কর ।”(আল কুর’আন, সূরা মায়িদা ৫:৬৷)
যে সকল বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করা জায়েয পবিত্র মাটি এবং মাটির ন্যায় সকল বস্তু (যেমন: পাথর, বালি, কাঁকর, সিমেন্ট প্রভৃতি) দ্বারা তায়াম্মুম করা জায়েয । ধুলাযুক্ত মাটি পাওয়া না গেলে বুলাহীন পাথর বা বালিতে তায়াম্মুম করা যাবে।
তায়াম্মুম করার সহীহ পদ্ধতি
সহীহ হাদীস অনুসারে তায়াম্মুম করার পদ্ধতি হলো: (নিয়্যত করার পর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে) দুই হাতের তালু মাটির উপর মারতে হবে। তাউপর তুলে নিয়ে তার উপর ফুঁক দিয়ে অতিরিক্ত ধুলোবালি উড়িয়ে দিয়ে উভয় হাত দ্বারা চেহারা মাসেহ করতে হবে। এউপর ডান হাত দ্বারা বাম হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করতে হবে। (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাতুত মাসাবীহ ৫২৮ )
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: التَّيَتُم ضَرْبَتَانِ ضَرْبَةٌ لِلْوَجْهِ، وَضَرْبَةٌ لِلْيَدَيْنِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ»
ইবনে উমর (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল (স) বলেছেন, ‘তায়াম্মুমের জন্য মাটিতে দু’দফা হাত মারা বিধেয়। এক দফা মুখমন্ডলের জন্য আর এক দকা কনুই পর্যন্ত দু’হাতের জন্য ।(’মুসনাদুল কাবীর তাবরানী, হাদীস নং- ১৩৩৬৬, দারাকুত্নী ১৮০৬। মুহাদ্দিসগণ হাদীসটির মওকুফ হওয়াকেই ঠিক বলে সাব্যস্ত করেছেন। -সুবুলুস সালাম। (মাওকুফ যে হাদীসের সনদ সাহাবী পর্যন্ত পৌছায়। রাসূলুল্লাহ (স) পর্যন্ত পৌঁছান সাব্যস্ত নয়।)
তায়াম্মুম ভঙ্গের কারণ
যে যে কারণে ওযু ভঙ্গ হয়, ঠিক সে সে কারণে তায়াম্মুমও ভেঙে যায়। কারণ তায়াম্মুম হলো ওযুর বিকল্প। এ ছাড়া যে কারণে তায়াম্মুম করা হয়েছে, সেই অসুবিধা দূর হয়ে গেলে তায়াম্মুম ভেঙে যায়। যেমন- পানি না পাওয়ার কারণে তায়াম্মুম করলে, পানি পাওয়ার সাথে তায়াম্মুম ভেঙে যায়। অসুস্থতার জন্য তায়াম্মুম করলে, সুস্থ হওয়ার পর তায়াম্মুম ভেঙে যায়। ১৫৭
তথ্যসূত্র :
বই: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ১০০০ সুন্নাত
লেখক: শাইখ খালীল আল হোসেনান
অনুবাদক: মাওলানা ডক্টর শাহ্ মুহাম্মাদ আবদুর রাহীম