ইবাদত

ওযুর ফরজ ও সুন্নাতসমূহ বিস্তারিত রেফারেন্স সহ

ওযুর ফরজ ৪ টি

ক. সমস্ত মুথ ধোয়া

খ. দুই হাতের কনুইসহ ধোয়া

গ. মাথার চারভাগের একভাগ মাসেহ করা

ঘ. দুই পা টাখনু গিরাসহ ধোয়া

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণী يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ

“হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর, পা দুটি টাকনুসহ ধৌত কর এবং মাথা মাসেহ কর ।”(আল কুর’আন, সূরা মায়িদা ৫:৬।)

ওযুর সুন্নাত মোট ১৬টি

ক. নিয়্যত করা

খ. ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা

গ. দুই হাতের কব্জিসহ তিনবার ধোয়া

ঘ. তিনবার মিসওয়াক করা

ঙ. তিনবার কুলি করা সুন্নাত

চ. তিনবার নাকে পানি দেয়া

ছ. সমস্ত মুখ তিনবার ধোয়া

জ. ডান হাতের কনুইসহ তিনবার ধোয়া

ঝ. বাম হাতের কনুইসহ তিনবার ধোয়া

ঞ. দুই হাতের আঙ্গুলি খিলাল করা

ট. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা

ঠ. কান মাসেহ করা

ড. গর্দান মাসেহ করা

ঢ. ডান পায়ের টাখনুহ তিনবার ধোয়া

ণ. বাম পায়ের টাখনুহ তিনবার ধোয়া

ত. দুই পায়ের আঙ্গুলি খিলাল করা

ওযুর সুন্নাতসমূহ বিস্তারিত রেফারেন্স সহ

১। বিসমিল্লাহ বলে ওযু শুরু করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عن أبى هريرةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وسلم لا وضوء لمن لم يذكر اسم اللهِ عَلَيْهِ .

“হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, (ওযুর শুরুতে) যে ‘বিসমিল্লাহ” বলে না তার ওযু শুদ্ধ হয় না । (আবু দাউদ,, হাদীস নং: ১০১, তিরমিযী,, হাদীস নং: ২৫। হাদীস বিশারদগণের মাঝে এ হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কিন্তু শেখ নাসির উদ্দিন আলবানী আলোচ্য হাদিসটিকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে মত দেন।)

২। ওযুর শুরুতে দু’হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধোয়া সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عن أبى هريرةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اسْتَيْقَظَ أَحَدُكُمْ مِنْ نَوْمِهِ فَلَا يَغْمِس يَدُهُ فِي الْإِنَاءِ حَتَّى يَغْسِلَهَا ثَلَاثًا فَإِنَّهُ لَا يَدْرِي أَيْنَ بَاتَتْ يَدُهُ .

“হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘ঘুম থেকে উঠে যেন কেউ তার হাত তিনবার না ধুয়ে পানির পাত্রে ডুবিয়ে না দেয়। কেননা, সে তো জানে না ঘুমের অবস্থায় তার হাত কোথায় অবস্থান করেছে।”(বুখারী ১৬২, মুসলিম ২৭৮।)

৩। ওযুর সময় মিসওয়াক করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَن أبي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلم قالَ : لَوْلَا أَنْ أَشْقَ عَلَى أُمَّتَى لَأَمَرْتُهُمْ بِالسّوَاكِ مَعَ كُلّ وُضُوءِ.

“হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘আমি আমার উম্মতের উপর কঠিন হবে বলে বিবেচনা না করলে প্রত্যেক ওযুর সঙ্গে মিসওয়াক (দাঁতন) করার নির্দেশ দিতাম।(”মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ৯৯২৮ ও বুখাবী, হাদীস নং: ৮৮৭। মালেক, আহমদ, একে সহীহ্ বলেছেন। ইমাম বুখারী (রহ) এর হাদীসটিকে মুআল্লাক রূপে বর্ণনা করেছেন ।

৪। গড়গড়ার সাথে কুলি করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ عَلِيِّ رَضِى اللهُ عَنْهُ فِي صِفَةِ الْوَضُوءِ ثُمَّ تَمَضْمَضَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاسْتَنْشَر ثَلَاثًا يُمَضَضْ وَيَنْقُرُ مِنَ الْكَفِ الَّذِى يَأْخُذُ مِنْهُ

হযরত আলী রা. হতে ওযুর বিবরণ সম্বন্ধে বর্ণিত হয়েছে, ‘নবী করীম সা. আউপর কুলকুচা করলেন ও নাকে পানি দিয়ে তিনবার ঝাড়লেন। তিনি কুলি ও নাক ঝাড়ার কাজ একই দফায় গৃহীত হাতের পানিতেই করলেন।(আবু দাউদ ১১১।)

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. অন্যত্র বলেন حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ ، قَالَ فِيهِ: إِذَا تَوَضَّأْتَ فَمَضْمِضْ.

“হযরত ইবনে জুরায়েজ রা. হতে উপরিউক্ত হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে, তাঁর উক্ত হাদীসে আরো আছে, মহানবী সা. বলেন, যখন তুমি ওযু কর তখন কুলি করবে ।”(আবু দাউদ, হাদীস নং: ১৪৪ ।)

৫। পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ أَبي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا تَوَضَّا أَحَدُكُمْ فَلْيَجْعَل فِي أَنْفِهِ، ثُمَّ لِيَنقُرُ.

“হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, যখন তোমাদের কেউ ওযু করে তখন সে যেন নাকে পানি দেয় এবং নাক ঝেড়ে নেয় ।” (আল বুখারী,, হাদীস নং: ১৬৪, মুসলিম,, হাদীস নং: ২২৬। আলোচ্য হাদিসে বাম হাতের কথা হয়নি। কিন্তু ইমাম দারেমী সূত্রে বর্ণিত হাদিসে বাম হাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। শেখ নাসির উদ্দিন আলবানী আলোচ্য হাদিসের বর্ণনাসূত্র ও সনদকে সহীহ বলেছেন যাহা মিশকাতে বর্ণিত হয়েছে)

৬। সমস্ত মুখ ৩ বার ধোয়া সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ حُمْرَانَ أَنَّ عُثْمَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ دَعَا بِوُضُوءٍ فَغَسَلَ كَفَيْهِ ثَلَاثَ مراتِ, ثُمَّ مَضَمَضَ, وَاسْتَنْشَقَ, وَاسْتَنْثَر, ثُمَّ غَسَلَ وَجَهَهُ ثَلَاثَ مَرَاتِ ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْمَرَافِقِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ الْيُسْرَى مثلَ ذَلِكَ, ثُمَّ مَسَحَ بَرَأْسِهِ, ثُمَّ غَسَلَ رَجُلَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْكَعْبَيْنِ ثلاثَ مَرَّاتٍ, ثُمَّ الْيُسْرَى مِثْلَ ذلِكَ, ثُمَّ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عليه وسلم توضأ نحو وضوئي هذا .ৎ

হযরত হোমরান রা. হতে বর্ণিত, একদা উসমান রা. [৩য় খলিফা ও মহানবী সা. এর জামাতা] ওযুর পানির পাত্র চাইলেন এবং তিনি প্রথমে দু হাত (কব্জি) পর্যন্ত ৩ বার ধুলেন। তাউপর ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন এবং বাম হাতও ঐরূপভাবে ধুলেন। তাউপর ডান পা টাখনু’ (গিরা) সহ তিনবার ধুলেন, পরে বাম পা ঐভাবে ধুলেন । তাপউপর বললেন, ‘আমার এই ওযুর মতোই ওযু করতে রাসূলুল্লাহ সা. কে দেখেছি ।(”বুখারী, হাদীস নং: ১৫৯, মুসলিম, হাদীস নং: ২২৬।)

৭। মুখ ধোয়ার সময় ঘন দাড়ির মধ্যে আঙ্গুল চালানো সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ عُثمَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُخَدِل لحيته فى الوضوء.

“হযরত উসমান রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সা. তাঁর দাড়ি মুবারক ওযুর সময় খেলাল করতেন (ভিজা আঙ্গুল দিয়ে দাড়ির গোড়া ভিজাতেন)।(”আত তিরমিযী, হাদীস নং: ৩১ ও ইবনে খুযায়মা ৭৬৮-৭৯/১ একে সহীহ বলেছেন।)

৮। দুই হাতের কনুইসহ তিনবার ধোয়া সুন্নাত

স্রষ্টব্য: ৬ নং শিরোনামের (সমস্ত মুখ ৩বার ধোয়া সুন্নাত) এর হাদীস দেখুন।

৯। ডান হাত এবং ডান দিক থেকে শুরু করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَن أبي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وَسَلَّمَ إِذَا تَوضَأْتُمْ فَأَبْدَأُوا بِيَمِيْنِكُمْ.

হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যখন তোমরা ওযূ করবে তখন তোমরা ডান দিক হতে আরম্ভ করাবে। (”বুখারী, ১৩৬, মুসলিম ২৪৬, আবু দাউদ ৪১৪১, তিরমিযী ১৭৬৬, নাসায়ী ৪৮২/৫, ইবনে মাজাহ ইবনে খুযায়মা ১৭৮) ৪ জনে। ইবনে খুযায়মা সহীহ্ বলেছেন।)ৎ

১০। ওযুর সময় মাথা মাসেহ করা ফরজ

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ عَاصِمٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي صِفَةِ الوَضُوءِ قَالَ: وَمَسَحَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَرَأْسِهِ فَأَقْبَلَ بَيدَيْهِ وَأَدْبَرَ .

“হযরত আবদুল্লাহ বিন যায়েদ রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম সা. তাঁর (মাথা মাসেহের সময়) দু’হাতকে আগে হতে পিছে এবং পিছে হতে আগে নিয়ে এলেন।(আল বুখারী, হাদীস নং: ১৮৫, মুসলিম, হাদীস নং: ২৩৫।)

১১। দুই পায়ের টাখনুসহ ১ বার ধোয়া ফরজ এবং ৩ বার ধোয়া সুন্নাত

দ্রঃ সূরা মায়েদার ৬ নং আয়াত এবং ৬ নং পয়েন্টের হাদীস দেখুন ।

১২। ওযুর সময় আঙ্গুল এবং পায়ের পাতায় পানি পৌঁছানো সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ لَقِيطِ بُنِ صَبرَةَ ….. فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَخْبِرْنِي. عَن لْوُضُوءِ ، قَالَ : أَسْبِغِ الْوُضُوءَ، وَخَلِلْ بَيْنَ الْأَصَابِعِ .

“হযরত লকিত বিন সাবুরা রা. হতে বর্ণিত,……(একটি বৃহৎ হাদিসের শেষাংশ) হে রাসূলুল্লাহ সা. আমাকে ওযু সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন পরিপূর্ণভাবে ওযু করবে এবং অঙ্গুলিসমূহ খিলাল করবে।(আবু দাউদ, হাদীস নং: ১৪২, আত তিরমিযী, হাদীস নং: ৭৮৮, আন নাসায়ী, হাদীস নং: ১১৪।)

১৩। পানি পৌঁছানোর অঙ্গগুলো ঘষা বা মর্দন করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ عَبْدِ اللهِ بْن زَيْدِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتى بثُلُثَى مِّدٍ, فَجَعَلَ يَدْلُكَ ذَرَاعَيْهِ .

“হযরত আবদুল্লাহ বিন যায়েদ রা. হতে বর্ণিত, ‘নবী করীম সা. এর নিকট দুই তৃতীয়াংশ মুদ পরিমাণ পানি আনা হলে তিনি তা তাঁর উভয় হাতের কনুই পর্যন্ত রগড়িয়ে ধুতে লাগলেন।(ইবনে খুজাইমাহ, হাদীস নং: ১১৮)

১৪ । ওযু শেষে কালিমাহ শাহাদাহ পাঠ করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: فَإِذَا عُمَرُ قَالَ: إِنِّي قَدْ رَأَيْتُكَ جِئْتَ آنِفًا، قَالَ: ” مَا مِنْكُمْ مِنْ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِخُ أَوْ فَيُسْبِغُ الْوَضُوءَ ثُمَّ يَقُولُ:

হযরত ওমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দেখলাম তুমি এখন এসেছো, এর পূর্বে রাসূলুল্লাহ সা. যা বলেছেন তা হলো: ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সুষ্ঠুভাবে ওযু সমাধা করে অতঃপর, এই দু’আ পাঠ করবে, أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ

”আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো মা’বুদ নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল ।” إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيْهَا شَاءَ

আর যে ব্যক্তি এ দু’আ পড়বে তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুলে দেয়া হবে। সে ইচ্ছা করলে যেকোনো দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম, হাদীস নং: ২৩৪।)

১৫। বাড়িতে ওযু করা সুন্নাত

এ প্রসঙ্গে হাদীসের বাণী: أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِي قَالَ: كَانَتْ صَلَاةُ الظُّهْرِ تُقَامُ فَيَنْطَلِقُ أَحَدُنَا إِلَ الْبَقِيعِ فَيَقْضِي حَاجَتَهُ ، ثُمَّ يَأْتِ أَهْلَهُ فَيَتَوَضَّأُ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى الْمَسْجِدِ

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন যুহর নামাযের ওয়াক্ত আরম্ভ হতো তখন আমাদের মধ্যে কেউ বাকীঈ‘তে জায়গার নাম) গিয়ে তার হাজত (প্রাকৃতিক কাজ) পুরা করত। তাউপর পরিবারের নিকট এসে ওযু করত এউপর নামাযে ফিরে যেত। (মুসলিম, হাদীস নং: ৬৬৬)

১৬। হিসাব করে পানি ব্যবহার করা সুন্নাত

হিসাব করে পানি ব্যবহার করা সুন্নাত। যেমন: এক মুদ। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَم يَتَوضَاً بالمُدِ وَيَغْتَسِلُ بِالصَّاعِ إِلَى خَمْسَةِ أَمَدَادِ .

“হযরত আনাস রা. হতে আরো বর্ণিত, নবী করীম সা. এক ‘মুদ্দ’ পানিতে ওযু এক ‘সা’ হতে পাঁচ ‘মুদ্দ’ পরিমাণ পানিতে গোসল করতেন।”(আল বুখারী, হাদীস নং: ২০১, মুসলিম, হাদীস নং: ৩২৫।)

১৭। হাত এবং পায়ের ফরজ অঙ্গগুলো ধোয়ার সময় এর সীমা বাড়ানো সুন্নাত।

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عن أبي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ

وَسَلَم يَقُولُ: إِنَّ أُمَّتِي يَأْتُونَ يَوْمَ القيامةِ غُرًّا مُحَجَّلِيْنَ مِنْ أَثَرِ الْوَضُوءِ, فَمَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَن يُطِيْلَ غُرَّتُهُ فَلْيَفْعَل.

“হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সা. কে বলতে শুনেছেন, ‘আমার উম্মত কিয়ামতের দিনে ওযুর নিদর্শনবাহী নিজেদের উজ্জ্বল মুখমণ্ডল ও হাত-পা-সহ উপস্থিত হবে।’ তাই যারা তাদের ঐ উজ্জ্বলতা বাড়াতে চায় তারা যেন তা বাড়িয়ে নেয়। (মুসলিম, হাদীস নং: ২৪৬।)

১৮। ওযুর শেষে দু’রাকা’আত সালাত আদায় করা সুন্নাত।

ওযু শেষে দু’রাকা’আত সালাত আদায় করা সুন্নাত। আর এ দু’রাকা’আত সালাত এর সাওয়াব হচ্ছে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায় ৷

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণী: عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ ، قَالَ : كَانَتْ عَلَيْنَا رِعَايَةُ الْإِبِلِ فَجَاءَتْ نَوْبَتِي فَرَوْحُتُهَا بِعَشِي فَأَدْرَكْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمًا يُحَدِّثُ النَّاسَ فَأَدْرَكْتُ مِنْ قَوْلِهِ: مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ، ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، مُقْبِل عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ، إِلَّا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ

“হযরত ওকবা বিন আমের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের উপর উট চরানোর দায়িত্ব ছিলো। একদিন আমার পালা এলে আমি উটগুলো সন্ধ্যায় চারণভূমি থেকে নিয়ে দেখলাম রাসূল সা. দাঁড়িয়ে লোকদের সামনে ভাষণ দিচ্ছেন। আমি তাঁর বক্তৃতার যে অংশ শুনতে পেলাম তা হলো: তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সুষ্ঠুভাবে ওযু সমাধা করে অতঃপর একাগ্রচিত্তে আল্লাহর দিকে রুজু হয়ে দু’রাকাআত নামায পড়ে তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায় ৷ (মুসলিম, হাদীস নং: ২৩৪।)

একজন মুসলমান দিন ও রাতে অনেকবার ওযু করে থাকে। কেউ কেউ দিনে পাঁচবার ওযু করে আবার এমন অনেক আছে বিভিন্ন সময়ে অনেকবার ওযু করে থাকে, তারা হলো যারা ফরজ নামায ব্যতীত অন্যান্য নামায মাদায় করে। যথা: সালাতুল যোহা, কিয়ামুল লাইল তথা: তাহাজ্জুদ নামায।

তথ্যসূত্র :

বই: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ১০০০ সুন্নাত

লেখক: শাইখ খালীল আল হোসেনান

অনুবাদক: মাওলানা ডক্টর শাহ্‌ মুহাম্মাদ আবদুর রাহীম

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *