ইবাদত

তাকওয়ার উপর অটল থাকলে রিজিক বৃদ্ধি পায়

তাকওয়া অর্থ হলো আল্লাহভীতি ও তাঁর নির্দেশ মেনে জীবন পরিচালনা করা। ইসলামে তাকওয়া শুধু আত্মিক উন্নতির মাধ্যম নয়, বরং এটি দুনিয়াতে রিজিক বৃদ্ধিরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি তাকওয়ার ওপর অবিচল থাকে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য রিজিকের দরজা খুলে দেন এবং এমন উৎস থেকে তাকে জীবিকা দান করেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না।


তাকওয়ার মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধি—কুরআনের দৃষ্টিতে

আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجْعَل لَّهُۥ مَخْرَجًۭا ۝ وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ

“যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে (তাকওয়া অবলম্বন করে), আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।”(সূরা আত-তালাক: ২-৩)

➡ এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, তাকওয়া অবলম্বন করলে আল্লাহ তাআলা কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ দেখান এবং অবিশ্বাস্যভাবে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন।

আবার, তিনি বলেন:

وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ ٱلْقُرَىٰٓ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّقَوْا۟ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَـٰتٍۢ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ

“যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর বরকতের দরজা খুলে দিতাম।”(সূরা আল-আ’রাফ: ৯৬)

➡ এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, তাকওয়া শুধু ব্যক্তিগত বরকতের মাধ্যম নয়, বরং এটি সমগ্র সমাজের জন্য কল্যাণ ও রিজিক বৃদ্ধির কারণ।


তাকওয়ার মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধি—হাদিসের দৃষ্টিতে

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

“তুমি যদি প্রকৃতভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করতে (তাকওয়া অবলম্বন করতে), তবে তিনি তোমাকে এমনভাবে রিজিক দিতেন, যেমনটি তিনি পাখিদের দেন। তারা সকালে ক্ষুধার্ত বের হয় এবং সন্ধ্যায় তৃপ্ত হয়ে ফিরে আসে।”(সুনান আত-তিরমিজি: ২৩৪৪)

➡ এই হাদিসে তাকওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ফুটে উঠেছে—যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে তাকওয়ার সাথে জীবনযাপন করে, আল্লাহ তার জন্য রিজিকের ব্যবস্থা করেন।

আরেক হাদিসে এসেছে:“যে ব্যক্তি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে (তাকওয়া অবলম্বন করে), তার রিজিক বৃদ্ধি করা হয়।” (মুসনাদ আহমাদ: ২০৭৩৯)

➡ অর্থাৎ, গুনাহ পরিত্যাগ করে তাকওয়া অবলম্বন করলে আল্লাহ রিজিকে বরকত দান করেন এবং অভাবমুক্ত রাখেন।


কীভাবে তাকওয়া রিজিক বৃদ্ধি করে?

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়: যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন হন এবং তাদের জীবনে বরকত দান করেন।

পাপ থেকে দূরে থাকলে বরকত আসে: গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা বরকত লাভের অন্যতম মাধ্যম, কারণ গুনাহ বরকত কমিয়ে দেয়।

আল্লাহর ওপর ভরসার কারণে নতুন জীবিকার দরজা খোলে: তাকওয়াবান ব্যক্তির জন্য আল্লাহ এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।

আখিরাতের পাশাপাশি দুনিয়ার কল্যাণ: তাকওয়া অবলম্বন করলে শুধু আখিরাতে নয়, দুনিয়াতেও সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ হয়।

সংকলক:

মুফতি রাশেদুল ইসলাম

ইফতা: জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম ঢাকা,মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *