ইসলাম

ব্যক্তি তাকলীদ বা তাকলীদে শাখসী

উপরে উল্লিখিত দৃষ্টান্তগুলো ছিল তাকলীদে মুতলাক তথা মুক্ত তাকলীদ সংক্রান্ত। এতে প্রতিভাত হয়েছে যে, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈনে ইযাম বিশেষ কোন এক ব্যক্তির তাকলীদ করেননি। বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করেছেন এবং তদনুযায়ী আমল করেছেন।

অনুরূপভাবে ঐ যুগে তাকলীদে শাখসী তথা নির্ধারিত বিশেষ ব্যক্তির তাকলীদেরও অনেক উপমা হাদীসের কিতাবাদিতে মজুদ রয়েছে। ওগুলো থেকে কয়েকটি এখানে উপস্থাপন করা হল।

প্রথম নযীর

বুখারী শরীফে হযরত হুযাইফা ইবনে শুরাহবীল (রাযি.) থেকে রেওয়ায়াত, হযরত আবূ মূসা আশ’আরী (রাযি.) কে একবার মাসআলা জিজ্ঞেস করা হল, তিনি উত্তর দিলেন, তবে সেই সাথে প্রশ্নকারীকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাযি.)-এর মতামত জেনে নেওয়ারও নির্দেশ দিলেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.)-এর বরাবরে বিষয়টি উত্থাপন করা হলে তিনি বিপরীত সিদ্ধান্ত দিলেন। হযরত আবূ মূসা (রাযি.) সব বিষয়ে অগবত হয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.)-এর উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা করে বললেন- لَا تَسْأَلُونِي مَادَامَ هَذَا الْحِبْرُ فِيكُمْ. তোমরা আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করো না। বুখারী, কিতাবুল ফারায়িয ২/৯৯৭, মুসনাদে আহমাদ ১/৪৬৪ ।

“এ মহা জ্ঞানসমুদ্র যতদিন তোমাদের মাঝে বিদ্যমান আছেন, ততদিন হযরত আবূ মূসা আশ’আরী (রাযি.) সবাইকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.)-এর জীবদ্দশায় তার কাছেই মাসায়িল জিজ্ঞেস করার পরামর্শ দানের মাধ্যমে কি সুন্দরভাবে ব্যক্তি তাকলীদকে উৎসাহিত করলেন।

দ্বিতীয় নযীর

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ لَمَّا بَعَثَهُ إلَى الْيَمَنِ قَالَ كَيْفَ تَقْضِي إِذَا عَرَضَ لَكَ قَضَاءُ، قَالَ أَقْضِي بِكِتَابِ. اللهِ، قَالَ فَإِذَا لَمْ تَجِدْ فِى كِتابِ الله؟ قَالَ فَبِسُنَّةِ رَسُولِ الله ﷺ قَالَ فَإِنْ لَمْ تَجِدْ فِى سُنَّةِ رَسُولِ الله له ﷺ وَلَا فِي كِتَابِ اللهِ؟ قَالَ اجْتَهِدُ رَائِي وَلَا آلُو فَضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ لا لا صَدْرَهُ فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِى وَفْقَ رَسُولَ رَسُولِ اللهِ لِمَا يَرْضَى بِهِ رَسُولُ الله .

তিরমিযী ও আবু দাউদ শরীফে রেওয়ায়াত আছে যে,হযরত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) কে করেছিলেন, ইয়ামানে প্রেরণকালে ইরশাদ করেছিলেন, “তুমি কিভাবে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করবে? হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) আরয কিতাবুল্লাহর আলোকে সমস্যার সমাধান করব। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রশ্ন করলেন, সেখানে কোন সমাধান পাওয়া না গেলে? হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) বললেন, তাহলে সুন্নাতে রাসূলের আলোকে ফয়সালা করব। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুনরায় প্রশ্ন করলেন, সেখানেও কোন ফয়সালা খুঁজে না পেলে?

হযরত মু’আয (রাযি.) বললেন, তখন আমি ইজতিহাদ করব এবং ইজতিহাদ করতে গিয়ে চেষ্টায় ত্রুটি করব না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তাঁর প্রিয় সাহাবীর বুকে পবিত্র হাত খানা দ্বারা মৃদু আঘাত করলেন এবং বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ পাক তাঁর রাসূলের দূতকে রাসূলের সন্তুষ্টি মোতাবেক কথা বলার তাওফীক দান করেছেন। (আবূ দাউদ ২/৫০৫, কিতাবুল আকযিয়া, ইজতিহাদুর রায় ফিল কাযা, তিরমিযী ১৩২৭, ১৩২৮, মুসান্নাফ ৫১১-৫১৫, জামিউ বায়ানিল ইলম ২/৬৯, তালখীসুল হাবীর ৪/১৮২, কিতাবুল ফকীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ ১/৩৯৮।

তাকলীদ ও ইজতিহাদের ব্যাপারে এ হাদীস এমন এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা যার আলোতে আমরা সবাই সত্যের নির্ভুল সন্ধান পেতে পারি অবশ্য পূর্বশর্ত হল, মনের পবিত্রতা এবং চিন্তার বিশুদ্ধতা। আলোচ্য হাদীসের একটি বিশেষ অংশের উপর আলোচনা হওয়া চাই।

ফকীহ ও মুজতাহিদ সাহাবাদের মধ্য থেকে একজনকেই শুধু আল্লাহর রাসূল শাসক, বিচারক ও শিক্ষকরূপে ইয়ামানে পাঠিয়েছিলেন। কুরআন-সুন্নাহ অনুসরণের পাশাপাশি প্রয়োজনে নিজস্ব জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলোকে ইজতিহাদ করার অধিকারও তাকে দিয়েছিলেন আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর ইয়ামানবাসীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন তার আনুগত্যের। আরো স্পষ্টভাবে বলতে হয় ইয়ামানবাসীকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.)-এর তাকলীদে শাছী বা একক আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) সূত্রে যারা এ হাদীসটি রেওয়ায়াত করেছেন তাদের কারো মধ্যেই আপত্তিজনক খুঁত নেই। তদুপরি আল্লামা খতীব বাগদাদী (রহ.)-এর বরাতে ভিন্ন এক সূত্রে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) থেকে (আব্দুর রহমান ইবনে গনম এবং তার কাছ থেকে ওবাদা ইবনে নাসী) হাদীসটি পেশ করে তিনি মন্তব্য করেছেন, এটি মুত্তাসিল সনদ সমৃদ্ধ হাদীস। (হাদীস শাস্ত্রের পরিভাষায় যে সনদের আগাগোড়া সকল বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ রয়েছে এবং কোথাও সংযোগে বিচ্ছিন্নতা নেই সে সনদকে মুত্তাসিল বলা হয়) তদুপরি বর্ণনাকারীদের সকলেই বিশ্বস্ততায় সুপরিচিত আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)-এর সর্বশেষ যুক্তি এই যে, উম্মাহর সর্বস্তরে সাদরে গৃহীত হওয়ার কারণে হাদীসটি দলীলরূপে ব্যবহারযোগ্য।

বুখারী শরীফের রেওয়ায়াত দেখুন- عَنِ الْأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ أَتَانَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ رَضِيَ الله تَعَالَى عَنْهُ بِالْيَمَنِ مُعَلِّماً أَوْ أَمِيراً فَسَأَلْنَاهُ عَنْ رَجُلٍ تُوفَّى وَتَرَكَ ابْنَتَهُ وَأَخْتَهُ فَأَعْطَى الْابْنَةَ النَّصْفَ وَالْأَخْتَ النِّصْفَ. “হযরত আসওয়াদ ইবনে ইয়াযীদ (রাযি.) বলেন, শাসক ও শিক্ষক হয়ে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) আমাদের এলাকায় এসেছিলেন। তাই আমরা তাকে মাসআলা জিজ্ঞেস করেছিলাম, মৃত ব্যক্তির বোন ও কন্যা আছে। (তাদের মাঝে মীরাস কিভাবে বণ্টিত হবে?) তিনি উভয়কে আধাআধি দিয়েছিলেন।

এখানে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) যেমন মুফতী হিসেবে ফতওয়া দিয়েছিলেন, তেমনি হযরত আসওয়াদ সহ সকলে তাকলীদের ভিত্তিতেই প্রমাণ দাবী না করে তা মেনে নিয়েছিলেন। অবশ্য হযরত মু’আয (রাযি.)-এর এ ফয়সালা ছিল কুরআন ও সুন্নাহর প্রত্যক্ষ দলীল নির্ভর। এবার আমরা তার নিছক ইজতিহাদ নির্ভর একটি ফতওয়া পেশ করছি- عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ الدُّوَيْلِي قَالَ كَانَ مُعَاذْ رَضِيَ اللَّهِ تَعَالَى عَنْهُ بِالْيَمَنِ فَارْتَفَعُوا إِلَيْهِ فِي يَهُودِى مَاتَ وَتَرَكَ أَحَاً مُسْلِماً فَقَالَ مُعَادٌ رَضِيَ الله تَعَالَى عَنْهُ إِلَى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ إِنَّ الإِسْلَامَ يَزِيدُ وَلَا يَنقُصُ فَوَرْتَهُ.

“হযরত আবুল আসওয়াদ দোয়ালী (রাযি.) বলেন, “হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) ইয়ামানে অবস্থানকালে একবার একটি মাসআলা উত্থাপিত হল, জনৈক ইয়াহুদী মুসলমান ভাই রেখে মারা গেছে। (এখন সে কি মৃত ইয়াহুদী ভাইয়ের মীরাস পাবে?) সব শুনে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) মীরাস লাভের পক্ষে রায় দিয়ে বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমি বলতে শুনেছি যে, الْإِسْلَامُ يَزِيدُ وَلَا يَنْقُصُ . ইসলাম বৃদ্ধি করে, হ্রাস করে না।”মুসনাদে আহমাদ ৫/২৩৬, আবূ দাউদ ৩/২৯১২, হাকিম ৪/৩৪৫, বায়হাকী ৫/২০৫, তাবরানী ২০/৩৩৯, ইমাম হাকিম হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন এবং ইমাম যাহাবী এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন) সুতরাং ইসলামের কারণে ইয়াহুদী ভাইয়ের মীরাস থেকে মুসলমান ভাইকে বঞ্চিত করা যায় না।

দেখুন, নিজের ফয়সালার সমর্থনে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) এমন একটি হাদীস পেশ করলেন যার সাথে মীরাসের দুরতম সম্পর্কও নেই । لا يَرِثُ الْمُسْلِمُ الْكَافِرَ وَلَا الْكَافِرُ الْمُسْلِمَ. “মুসলমান কাফিরের ওয়ারিস হয় না আর কাফির মুসলমানের ওয়ারিস হয়না। আহমাদ ৫/২০০, বুখারী ১২/৬৭৬৪, মুসলিম ৩/১৬১৪, আবূ দাউদ ২৯০৯, তিরমিযী ৪/২১০৭, নাসাঈ ৪/৬৩৭৯, ইবনে মাজাহ ২/২৭২৯, ফায়ফুল কাদীর ১২/৬৫২৪)

এ হাদীসের আলোকে অন্যান্য সাহাবার সিদ্ধান্ত ছিল ভিন্ন। কিন্তু হযরত ইয়ামানবাসীরা অম্লান বদনে মেনে নিয়েছিল । মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.)-এর নিছক ইজতিহাদ নির্ভর এ ফয়সালাও রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিশিষ্ট সাহাবীদের মাঝে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) ছিলেন অন্যতম। তিনি ৩৮ বৎসর বয়সে ১৭ অথবা ১৮ হিজরী সনে ওফাত প্রাপ্ত হন। ইলমের ময়াদনে তার উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- أَرْحَمُ أُمَّتِي بِأُمَّتِي أَبُو بَكْرٍ وَأَشَدُّهَا فِي دِينِ اللهِ عُمَرُ وَاصْدَقُهَا حَيَاءً عُثْمَانُ وَأَعْلَمُهُمْ بِالْحَلَالِ وَالْحَرَامِ مُعَادٌ وَافْرَضُهُمْ زَيْدٌ .

“আমার উম্মতের মাঝে আমার উম্মতের উপর বেশী দয়াবান আবূ বকর, আর আল্লাহর দীনের ব্যাপারে বেশী কঠোর হল উমর, বেশী লজ্জাশীল উসমান, হালাল-হারাম সম্পর্কিত ইলমের ক্ষেত্রে সাহাবাদের মাঝে মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.)-ই শ্রেষ্ঠ। আর ইলমুল ফারায়িয সম্পর্কে বেশী জ্ঞান রাখেন যায়েদ ইবনে সাবিত (রাযিঃ)।”২

আরো ইরশাদ হয়েছে- يَأْتِي مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بين يَدَيِ الْعُلَمَاءِ بِرَنْوة. “কিয়ামতের দিন মু’আয ইবনে জাবাল আলিমদের সামনে এক তীর পরিমাণ অগ্রবর্তী দূরত্বে অবস্থান করবেন।”

মোটকথা, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্নেহবাণী এ কথাই প্রমাণ করে যে, ফকীহ ও মুজতাহিদ সাহাবাদের মাঝেও হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) ছিলেন শ্রেষ্ঠ। এ কারণে সাহাবাগণও বিরোধপূর্ণ বিষয়ে তার তাকলীদ করতেন। একই কারণে শাসক ও শিক্ষকের মর্যাদায় তিনি যখন ইয়ামান প্রেরিত হলেন তখন দরবারে রিসালত থেকে ইয়ামানী মুসলমানদের প্রতি নির্দেশ হল শরীয়তী আহাকামের ব্যাপারে তার নিরংকুশ আনুগত্যের। বলা বাহুল্য যে, ইয়ামানী মুসলমানগণ অক্ষরে অক্ষরেই পালন করেছিলেন দরবারে রিসালতের নির্দেশ। এভাবে খোদ রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নির্দেশেই হয়েছিল একক তাকলীদের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন।

তৃতীয় নযীর

আমর ইবনে মায়মূন আওদী (রহ.) বলেন- عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونِ الْأَوْدِى قَالَ قَدِمَ عَلَيْنَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ الْيَمَنَ رَسُوْلَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِلَيْنَا قَالَ فَسَمِعْتُ تَكْبِيرَهُ مَعَ الْفَجْرِ رَجُلٌ أَجَشَ الصَّوْتِ قَالَ فَأُلْقِيَتْ مَحَبَّتِي عَلَيْهِ، فَمَا فَارَفْتُهُ حَتَّى دَفَتُهُ بِالشَّامِ مَيْنَا، ثُمَّ نَظَرْتُ إِلَى أَفْقَهِ النَّاسِ بَعْدَهُ فَأَتَيْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ فَلَزِمْتُهُ حَتّى مَاتَ

“রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতিনিধি হিসেবে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযি.) ইয়ামানে আমাদের মাঝে এসেছিলেন।ফজরের নামাযে আমি তার তাকবীর শুনতে পেতাম। গভীর ও ভরাট কণ্ঠের অধিকারী ছিলেন তিনি। আমি তাকে ভাল বাসতাম এবং শাম দেশে তাকে দাফন করার পূর্ব পর্যন্ত তার সান্নিধ্য আঁকড়ে থাকলাম। তার পরে আব্দুল্লাহ সৌভাগ্য আমি লাভ করেছি।

হযরত আমর ইবনে মায়মূন (রহ.)-এর মন্তব্য এ কথাই প্রমাণ করে যে, ফিকাহ ও মাসায়িল ছিল যথাক্রমে হযরত মু’আয ইবনে জাবাল ও আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) ছিলেন শ্রেষ্ঠ ফকীহ। একইভাবে আমরণ তার সান্নিধ্য ইবনে মাসউদ (রাযি.)-এর সাথে তার সম্পর্কের বুনিয়াদ এবং হযরত মু’আয (রাযি.)-এর জীবদ্দশায় ফিকাহ ও মাসায়িলের ব্যাপারে তার সাথেই ছিল তার একক সম্পর্ক।শ্রেষ্ঠত্বের ভিত্তিতে পরবর্তীতে সে সম্পর্ক গড়ে উঠে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.)-এর সাথে।

তথসূত্র:

তাকলীদ ও মাযহাব প্রসঙ্গ

মুফতি হিফজুর রহমান

প্রধান মুফতি,জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া,সাতমসজিদ,মুহাম্মদপুর,ঢাকা।

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *