ব্রাশ দ্বারা কি মিসওয়াকের সুন্নাত আদায় হবে?
প্রশ্ন : আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছেন, টুথব্রাশ ও পেস্ট দিয়েই মিসওয়াকের সুন্নত আদায় হয়ে যায়; লাকড়ির মিসওয়াকের প্রয়োজন নেই। আমি বললাম, আমাদের ইমাম সাহেবের কাছে শুনেছি, টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে মিসওয়াকের সুন্নত পরিপূর্ণ আদায় হয় না। উত্তরে তিনি বলেন, হুজুরের কথা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী?
উত্তর : মিসওয়াকের সুন্নতের দুটি দিক আছে।
এক. দাঁতের পরিচ্ছন্নতা; যেমন—কয়েক দিন মিসওয়াক না করার দরুন মুখে দুর্গন্ধ হলে তা মাকরুহ। দুই. আরেকটি দিক হলো মিসওয়াক করার মাধ্যম, যার দ্বারা দাঁত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে।
টুথপেস্ট, ব্রাশ ও মাজন দিয়ে মিসওয়াক করার ক্ষেত্রে মিসওয়াকের সুন্নতের প্রথম দিকটি আদায় হবে। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, দাঁতের দুর্গন্ধ ও ময়লা দাগ পরিষ্কার করার জন্য যেকোনো জিনিস দিয়ে মিসওয়াক করলেই দুর্গন্ধ থেকে মুক্ত করার সুন্নত আদায় হয়ে যায়।(শরহে মাজহাব ১/২৮১)
কিন্তু দ্বিতীয় সুন্নতটি আদায় তখনই হবে, যখন মিসওয়াকটি রাসুল (সা.)-এর মিসওয়াকের মতো (লাকড়ির) হবে। (জাদিদ ফিকহি মাসায়েল ১/৬৫)
তাহলে বোঝা গেল, টুথব্রাশ দিয়ে মিসওয়াক করলে পরিপূর্ণ সুন্নত আদায় হয় না।
দ্বিতীয়ত ব্রাশ তো করা হয়ে থাকে সাধারণত এক-দু’বার। সকালে ও রাতে। ওযুর সাথে পাঁচ ওয়াক্ত ব্রাশ করার জন্য পকেটে ব্রাশ ও পেস্ট রাখে কে? তাই মিসওয়াকের সাথে ব্রাশের প্রসঙ্গ টেনে আনা কোনোভাবেই ঠিক নয়। সুন্নাহর উপর আমল সুন্নাহসম্মত পদ্ধতিতে হওয়া চাই। তবেই পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ সুন্নাহ পালনের নূর ও বরকত।
ব্রাশ ও মেসওয়াকের পার্থক্যঃ
ব্রাশ ও মেসওয়াকের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ব্রাশ ব্যবহার করার জন্য অ্যান্টিসেপটিকসমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হয়। অথচ মেসওয়াকে উন্নত মানের অ্যান্টিসেপটিক উপাদান আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। একই ব্রাশে জীবাণুর স্তর জমে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু মেসওয়াক সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আলাদা। নিয়মিত মেসওয়াক ব্যবহারের ফলে মুখের ভেতরের রোগজীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। ছত্রাক নিঃশেষ হয়ে যায়। ব্যবহারকারী আরো অসংখ্য রোগবালাই থেকে সুরক্ষিত থাকে। তাই সবার নিয়মিত মেসওয়াক করা উচিত।