ইসলাম

দেয়াল আর ভাঙতে হলো না

ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ. বর্ণনা করেন, একবার এক ব্যক্তি ইমাম আবু হানীফা রহ. -কে দেয়াল ভেঙে জানালা তৈরি করা সম্পর্কে মাসআলা জিজ্ঞেস করলো। ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, দেয়াল যেহেতু তোমার নিজের, তাই যা ইচ্ছা তা-ই তোমার দেয়ালে খুলতে পারো। তবে তা ভালো উদ্দেশ্যে হতে হবে। সাবধান! এর দ্বারা প্রতিবেশীর ঘরে উঁকি দিতে পারবে না।

দেয়াল ভেঙে জানালা তৈরি করা সম্পর্কে যখন তার প্রতিবেশী জানতে পারলো, তখন সে শহরের প্রধান কাজী ইবনে আবী লায়লার আদালতে গিয়ে অভিযোগ উত্থাপন করলো।

কাজী ইবনে আবী লায়লা দেয়ালে জানালা তৈরি করতে নিষেধ করলেন। ফলে লোকটি পুনরায় ইমাম আবু হানীফা রহ. এর নিকট এসে কাজী সাহেবের নিষেধাজ্ঞার কথা জানালো।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, ঠিক আছে তুমি দেয়াল ভেঙে একটি দরজা খোলো।

লোকটি তা-ই করতে শুরু করলো। কিন্তু প্রতিবেশী লোকটি এবারও এসে বাধা প্রদান করলো এবং কাজী ইবনে আবী লায়লার নিকট নালিশ করলো। এবারও কাজী ইবনে আবী লায়লা দেয়ালের মালিককে দেয়াল ভেঙে দরজা খুলতে নিষেধ করলেন।

লোকটি আবারও শরণাপন্ন হলো ইমাম আবু হানীফা রহ. এর। ইমাম আযম রহ. লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার দেয়ালের মূল্য কতো? লোকটি বললো, তিন দীনার।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, তুমি তোমার দেয়াল ভেঙে ফেলো। তিন দীনার আমি তোমাকে দিয়ে দেবো। ইমাম আবু হানীফা রহ. এর পরামর্শে সেই লোক দেয়াল ভাঙতে লাগলো। কিন্তু প্রতিবেশী পূর্বের মতো বাধা প্রদান করলো এবং কাজীর আদালতে মামলা দায়ের করলো।

কাজী ইবনে আবী লায়লা বললেন, ভাই! তুমি তো বড় বিস্ময়কর মানুষ। দেয়াল হলো তার, সে তাতে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। তুমি কি চাও, আমি তাকে দেয়াল ভাঙতেও নিষেধ করি?

তিনি দেয়ালের মালিককে বললেন, যাও! দেয়াল ভেঙে যা ইচ্ছা তা-ই করো।

তখন প্রতিবেশী বললো, কাজী সাহেব! আপনি তো আমাকে বড় কষ্টে ফেলে দিয়েছেন। এর চেয়ে তো জানালা খোলাই আমার জন্য ভালো ছিলো।

কাজী ইবনে আবী লায়লা রহ. বললেন, ভাই! সে এমন এক ব্যক্তির নিকট আসা-যাওয়া করছে, যে আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দিচ্ছে। আমার ভুল যখন প্রকাশ পেয়েই গেলো এবং তা শোধরানোর কোনো পথ রইলো না, তাই এখন আর আমি কোনো কথা বলবো না।

তথ্যসূত্র:

বই : ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. এর ঈমানদীপ্ত গল্প

লেখক : মুফতি মাহফুজ মোসলেহ

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *