ইসলাম

যদি আমি কিয়াস কে প্রাধান্য দিতাম তাহলে

একবার মদীনা মুনাওয়ারায় মুহাম্মদ বিন আলী বিন হুসাইন বিন আলী রা. এর সাথে ইমাম আবু হানীফা রহ. এর সাক্ষাত হয়। যিনি ইমাম বাকের নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। পূর্বেই তার নিকট অনেক হিংসুকরা ইমাম আবু হানীফা রহ. এর দুর্নাম করেছিলো। তাই তিনি ইমাম আবু হানীফা রহ.-কে দেখামাত্রই বললেন, আপনি তো সেই লোক, যে আমার নানার দীনকে কিয়াসের দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক। হযরত! আপনি বসুন! আপনার নিকট আমি প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে চাই। নিশ্চয়ই আপনারও মর্যাদা রয়েছে, যেমন ছিলো আপনার নানার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর।

ইমাম বাকের বসলেন। ইমাম আবু হানীফা রহ. তার সামনে ছাত্রের ন্যায় বসে বললেন, হযরত! পুরুষ দুর্বল না মহিলা? ইমাম বাকের বললেন, মহিলা । ইমাম আবু হানীফা রহ. জিজ্ঞেস করলেন, উত্তরাধিকার সূত্রে মহিলা কত ভাগ পায় আর পুরুষ কত ভাগ পায়? পুরুষ দুই ভাগ আর মহিলা এক ভাগ পায় ।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, যদি আমি কিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম, তাহলে মহিলাকে দিতাম দুই ভাগ আর পুরুষকে দিতাম এক ভাগ। কারণ, মহিলা দুর্বল আর দুর্বলকে বেশি দেয়াই যুক্তিযুক্ত। ইমাম আবু হানীফা রহ. আবার জিজ্ঞেস করলেন, হযরত! নামায শ্রেষ্ঠ না রোযা শ্রেষ্ঠ? নামায শ্ৰেষ্ঠ ৷

হযরত! যদি আমি কিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম, তাহলে রোযার পরিবর্তে মহিলাদের মাসিকের সময়ের নামায কাযা করার ফাতওয়া দিতাম । কারণ, নামায রোযার চেয়ে শ্রেষ্ঠ।

ইমাম আবু হানীফা রহ. পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, হযরত! বীর্য বেশি নাপাক নাকি পেশাব? পেশাব বেশি নাপাক ।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, হযরত! আমি যদি কিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম, তাহলে পেশাবের কারণে গোসল ফরয হওয়ার ফাতওয়া দিতাম । আর বীর্যের কারণে শুধু উযূ করার ফাতওয়া দিতাম। কিন্তু আমি এরূপ করিনি। হাদীসের বিপরীত বলা থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। বরং আমি তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসের খেদমত করছি।

এই বক্তব্য শুনে ইমাম বাকের রহ. ইমাম আবু হানীফা রহ. এর অনেক প্রশংসা করলেন এবং তাঁর কপালে চুমু খেলেন।

তথ্যসূত্র:

বই : ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. এর ঈমানদীপ্ত গল্প

লেখক : মুফতি মাহফুজ মোসলেহ

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *