ইসলাম

খলীফার জুলুমে ইমাম আযমের কৌশল

আব্বাসী খেলাফত আমলে যখন বাগদাদ নগরীর গোড়াপত্তন হচ্ছিলো, তখন খলীফা মারসুর ইমাম আবু হানীফা রহ. -কে বিচারকের দায়িত্ব গ্রহণ করার অনুরোধ করেন। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা রহ. বিচারকের দায়িত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে খলীফা অত্যন্ত রাগান্বিত হন ।

কয়েকদিন পর ইমাম আবু হানীফা রহ. -কে ডেকে বললেন, রাষ্ট্রের কোনো কাজের সাথে আপনাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট হতে হবে। এ জন্য বিচারকের দায়িত্ব আপনার জন্য উত্তম এবং কল্যাণকর হবে। অন্যথায় তার চেয়ে কঠিন দায়িত্ব আপনার উপর ন্যস্ত করা হবে ।

ইমাম আবু হানীফা রহ. তাঁর সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। তিনি এবারও রাজি হলেন না। খলীফা যখন ইমাম আবু হানীফা রহ. -কে রাজি করাতে পারলেন না, তখন তিনি বললেন, বাগদাদ নগরীতে নির্মাণ কাজের জন্য যত ইট আনা হবে, সেগুলো আপনার গণনা করতে হবে।

খলীফা মানসুর ইমাম আবু হানীফা রহ. এর দ্বারা এ কাজ সারাদিন করাবেন বলে কসম খেয়ে ফেললেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো, একটি একটি করে ইট গুনে গুনে ইমাম আযমের হাত ছিলে যাবে এবং নিরুপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি বিচারকের দায়িত গ্রহণ করবেন।

কিন্তু ইমাম আবু হানীফা রহ. যেমন ছিলেন বিজ্ঞ মুত্তাকী আলেম, তেমনি ছিলেন বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান, সচেতন নায়েবে রাসূল। তাই তিনি সারাদিন একটি একটি করে ইট গণনার পরিবর্তে এমন এক কৌশল অবলম্বন করলেন, যার দ্বারা মুহূর্তেই সকল ইট গণা হয়ে যায় ৷

ইট আনয়নকারী লেবারগণ সারাদিন ইট এনে সাজিয়ে স্তূপ করে রাখার পর সন্ধ্যার পর ইমাম আবু হানীফা রহ. লম্বা বাঁশ দিয়ে বড় বড় ইটের স্তূপ মুহূর্তের মধ্যে গণনা করে সরকারকে মোট সংখ্যা জানিয়ে দিতেন। এভাবেই সরকারের যাবতীয় কাজ থেকে আবু হানীফা রহ. নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

তথ্যসূত্র:

বই : ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. এর ঈমানদীপ্ত গল্প

লেখক : মুফতি মাহফুজ মোসলেহ

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *