মাযহাবের তাৎপর্য
আজকাল মুসলিম সমাজে মাযহাব, তাকলীদ, মুকাল্লিদ, গাইরে মুকাল্লিদ, ইজতিহাদ ও মুজতাহিদ ইত্যাদি বহুল আলোচিত শব্দ। এ পর্বে, আমরা শব্দগুলোর কিছুটা বিশ্লেষণের প্রয়াস চালাবো।
মাযহাব শব্দের অর্থ চলার পথ। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুরআন-সুন্নাহর প্রদর্শিত, রাসূল, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ অন্য শব্দে এটাই সীরাতে মুস্তাকীম ও সরল মনোনীত পথেরই নাম মাযহাব পথ। যে পথের লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নৈকট্য অর্জন করা। সর্বোপরি জান্নাতের স্থায়ী নিয়ামত লাভ। আর এ পথ সম্পর্কেই আল-কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে- وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ أَنَابَ إِلَى ثُمَّ إِلَى مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ.
“পথ অনুসরণ কর আমার প্রতি মনোনিবেশকারীর। অত:পর তোমাদের পত্যাবর্তন আমার দিকে এবং তোমরা যা করতে আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে অবগত করব। সূরা লুকমান ১৫।
কিন্তু কুরআন-সুন্নাহর প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সুস্পষ্ট অস্পষ্ট বিরোধপূর্ণ জটিল বিষয়ের যথার্থ সমাধান বের করত তা অনুসরণ করে মূল লক্ষ্যে পৌছা সকলের পক্ষ্যে মোটেও সম্ভবপর নয়; বরং এ সকল বিষয়ে পূর্ণ পারদর্শী ব্যক্তিবর্গের দেয়া সমাধান দিয়েছেন, তাদেরকেই বলা হয় মুজতাহিদ এবং তাদের পরিশ্রম ও গবেষণাকে বলা হয় ইজতিহাদ। মুজতাহিদগণের প্রদত্ত সমাধান ও ব্যাখ্যার অনুসরণ করেন তারাই মুকাল্লিদ। আর এ অনুসরণেরই নাম তাকলীদ।
আর যারা মুজতাহিদ ইমামগণের সমাধান ও ব্যাখ্যার অনুসরণ করে না বলে দাবী করে এবং কুরআন-সুন্নাহ থেকে সরাসরি মনগড়াভাবে বিধান আহরণের চেষ্টা করে, তারাই গাইরে মুকাল্লিদ বা লা-মাযহাবী কথিত আহলে হাদীস, মুহাম্মদী ও সালাফী ইত্যাদি নামে পরিচিত।
তথসূত্র:
তাকলীদ ও মাযহাব প্রসঙ্গ
মুফতি হিফজুর রহমান
প্রধান মুফতি,জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া,সাতমসজিদ,মুহাম্মদপুর,ঢাকা।