ইসলাম

নামাযে নিয়তের গুরুত্ব

নামাযের নিয়ত ফরয ও শর্ত। কিন্তু মুখে বলা আবশ্যক নয়। তাকবীরে তাহরীমার আগে নিয়ত করাই উত্তম তবে কেউ যদি তাকবীরে তাহরীমার সময় ‘আল্লাহু” বলতে বলতে নিয়ত করে ফেলেন, তাহলে তাও শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহ শব্দ বলার পর নিয়ত করলে শুদ্ধ হবে না। যেমন- আল্লামা শামী রহ. লিখেছেন যে, বিলম্বিত নিয়ত গ্রহণযোগ্য নয়। আর নিয়তমুক্ত অংশ ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়নি। আর যেটা ইবাদত হিসেবে গণ্য নয় তার উপর বাকী অংশের ভিত্তি ও সঠিক নয়। (২/৯৪)

এমনিভাবে আল্লাহু শব্দ বলার পর আকবার বলার পূর্বে নিয়ত করলেও সহীহ হবে না। হাঁ, নিয়ত তাকবীরে তাহরীমার আল্লাহু শব্দ বলার পূর্বে হলে নামায সহীহ হয়ে যাবে। সুতরাং কেউ যদি তাকবীরে তাহরীমার আল্লাহু বলার পরে নিয়ত করে তাহলে নামায সহীহ হবে না। কেননা আল্লাহু বলার মাধ্যমেই নামাযে অনুপ্রবেশ সহীহ হয়। কাজেই সে যেন তাকবীরে তাহরীমার পরেই নিয়ত করেছে।

মনে মনে এতটুকু খেয়াল রাখবে, (উদাহরণস্বরূপ) আমি আজকে যোহরের ফরয নামায পড়ছি। আর সুন্নাত হলে খেয়াল রাখবে, সুন্নাত নামায পড়ছি। এতটুকু খেয়াল করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধবে, এতেই নামাযের নিয়ত সহীহ হয়ে যাবে। সাধারণ মানুষের মাঝে লম্বা-চওড়া যে আরবী নিয়ত প্রচলিত আছে, তা বলা আবশ্যক নয়। তবে বুর্যুগানে দ্বীন আরবী নিয়ত পছন্দ করেন, তাই অর্থ বুঝে আরবীতে নিয়ত করতে পারলে উত্তম।

মনে রাখবে, অন্তরের সংকল্প ছাড়া শুধু মুখের উচ্চারণে নিয়ত আদায় হয় না। এছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম রাযি. থেকে মুখে নিয়ত উচ্চারণ করা প্রমাণিত নয়। তাই মুখে নিয়ত করাকে সুন্নাত বলা ভুল। তবে অন্তরের সংকল্পের পাশাপাশি মুখের নিয়তের ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই। কিন্তু আরবী ভাষায় নিয়ত করাকে সওয়াবের কাজ মনে করা নিতান্তই ভুল এবং প্রচলিত লম্বা আরবী নিয়ত করতে গিয়ে তাকবীরে উলা থেকে বঞ্চিত হওয়া বা জোরে জোরে উচ্চারণ করে অন্যের মনোযোগ নষ্ট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। —ইবনে নুজাইম, আল বাহরুর রায়েক ১/২৭৭

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *