ইসলাম

মেহমান এবং মেজবানের করণীয় আমল সমূহ

মেহমানের করণীয় বিশেষ আমল সমূহ

কেউ নিঃসবার্থভাবে দাওয়াত দিলে তা কবুল করবে। এটা সুন্নাত। তবে দাওয়াত দাতার সম্পূর্ণ বা অধিকাংশ সম্পদ হারাম উপায়ে অর্জিত হলে তার দাওয়াত কবুল করা উচিত নয়।

সুন্নাতের অনুসরণ ও মুসলমানদের মন খুশি করার নিয়তে দাওয়াত কবুল করতে হবে!

একই সময়ে একাধিক ব্যক্তি দাওয়াত দিলে যার ঘর অধিক নিকটে তার দাওয়াত কবৃল করা সুন্নাত।

দাওয়াত বা পূর্ব এত্তেলা (তথ্য) ছাড়াই খাওয়ার সময় কারও নিকট মেহমান হিসেবে উপস্থিত হওয়া উচিত নয়। একান্তই এরূপ সময় যেতে হলে বাইরে থেকে খেয়ে যাবে, যাতে অসময়ে মেজবানকে খানা পাকানোর/খানার ব্যবস্থা করার বিড়াম্বনা পোহাতে না হয়। কিংবা তাদের খাবার মেহমানকে দিয়ে তাদেরকে অভুক্ত থাকতে না হয়। আর বাইরে থেকে খেয়ে গেলে যেয়েই মেজবানকে তা অবহিত করা আদব। অন্যথায় মেহমানের খানার প্রয়োজন ভেবে মেজবান খাবারের ব্যবস্থা করবে তারপরে দেখা যাবে মেহমানের প্রয়োজন নেই। এতে করে খাবার নষ্ট হবে কিংবা অন্ততঃ মেজবান বিব্রতবোধ করবেই । তবে বিশেষ কারও ব্যাপারে যদি জানা থাকে যে, পূর্ব এত্রে’লা ছাড়া মেহমান হলেও তিনি কোনরূপ বিব্রতবোধ করবেন না, তাহলে তার ব্যাপারটা ভিন্ন ।

দাওয়াত দেয়া হয়নি- এমন কাউকে মেহমান সাথে আনবে না। আনলে মেজবানের অনুমতি গ্রহণ করবে। তবে মেজবানের কোনই আপত্তি থাকবে না- এমন বুঝতে পারলে অনুমতির প্রয়োজন নেই।

মেহমান মেজবান কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে বসবে এবং থাকবে ।

মেহমান মেজবানের অনুমতি বা সম্মতি ব্যতীত কাউকে ডেকে খানায় শরীক করবে না বা কাউকে খানা থেকে কিছু প্রদান করবে না!

মেহমান খাওয়ার মজলিসে এমন কিছু আবদার করবে না, যা যোগাড় করা মেজবানের জন্য মুশকিল হতে পারে ।

খাওয়ার ব্যাপারে মেহমানের কোন বাছ-বিচার থাকলে কিংবা বিশেষ কোন অভ্যাস বা রুটিন থাকলে পূর্বেই তা মেজবানকে অবহিত করা উচিত। দত্তরখানে এসে এরূপ কিছু উথাপন করে মেজবানকে বিব্রত করা উচিৎ নয়।

কোন বিশেষ অসুবিধা না থাকলে মেজবান কর্তৃক উপস্থিত সব রকম খাবার থেকে কিছু কিছু গ্রহণ করে তাকে খুশি করা উচিত।

মেহমান মেজবানের নিকট এত বেশী সময় বা এত বেশী দিন অবস্থান করবে নাঁ, যাতে মেজবানের কষ্ট, ক্ষতি বা বিরক্তি হতে পারে। এরূপ করা নিষিদ্ধ।

কারও নিকট দাওয়াত খেলে খানা শেষে (খানা শেষের পঠিতব্য সাধারণ দুআ পড়ার পর) এই দুআ পড়বে- অর্থঃ হে আল্লাহ, যে আমাকে আহার করাল তৃমি তাকে আহার করাও এবং যে আমাকে পান করাল তুমি তাকে পান করাও।

বিদায় গ্রহণের সময় মেজবান থেকে অনুমতি নিয়ে বিদায় নেয়া আদব।

মেজবানের ঘর থেকে বিদায় নেয়ার সময় মেহমান পড়বে- অর্থঃ হে আল্লাহ, তুমি তাদেরকে যে রিিক দান করেছ তাতে বরকত দীও, তাদেরকে ক্ষমা কর এবং তাদের উপর রহম কর।


মেজবানের করণীয় বিশেষ আমল সমূহ

মেহমানকে সাদর অভ্যর্থনার সাথে, সম্মানের সাথে ও সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করবে।

প্রত্যেক মেহমানকে তার মর্যাদা অনুসারে গ্রহণ করবে এবং সে হিসেবে তার খাতের যত্ন করবে । সকলকে এক পাল্লায় মাপা ঠিক নয়।

খাওয়ার সময় হয়ে গেলে যথাশীঘ্র মেহমানের সামনে খাবার উপস্থিত করা আদব।

মেজবান মেহমানের সাথে এমন কাউকে খানায় একত্রে বসাবে না, যার মন মানসিকতা, রুচি ও মেজায ভিন্ন হওয়ার কারণে মেহমানের খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷

মেজবান অতিরিক্ত খাওয়ানোর জন্য মেহমানকে পীড়াপীড়ি করবে না।

সম্ভব হলে মেহমানের রুচির প্রতি লক্ষ্য রেখে সে অনুযায়ী খাদ্য প্রস্তুত করবে

সাধ্য এবং প্রচলন অনুযায়ী মেহমানের জন্য অন্ততঃ একদিন আড়ম্বরের সাথে খাবারের আয়োজন করা সুন্নাত।

বিদায়ের সময় মেহমানকে ঘর থেকে দরজা পর্যন্ত পৌছানো সুন্নাত। তো’লীমুদ্দীন)

তথ্যসূত্রঃ
কিতাবঃ আহকামে যিন্দেগী
লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দিন
শায়খুল হাদিস, জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, তাঁতিবাজার, ঢাকা - ১১০০।
মুহাদ্দিছ, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, ৩৩২, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ঢাকা ১২৩৬।

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
2
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *