ইসলাম

সাপ ও বিচ্ছু

হাদীস ঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হারেস যুবায়দী (রহঃ) বলেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান— إِنَّ فِي النَّارِ حَيَّاتُ كَأَعْنَاقِ الْبُخَاتِي تَلْسَعُ إِحْدَاهُنَّ التَّسْعَةَ فَيَجِدُ حَموُهَا إِلى اَرْبَعِينَ خَرِيْفًا وَأَنَّ فِي النَّارِ عَقَارِبُ كَأَمْثَالِ الْبِغَالِ الْمُؤكَنَةِ تَلْسَعُ اِحْدَاهُنَّ التَّسْعَةَ فَيَجِدُ حَمْوَتَهَا أَرْبَعِينَ سَنَةً –

জাহান্নামে মোটা উটের গর্দানের মত সাপ রয়েছে। এ সাপ যাকেই দংশন করবে, তার বিষ চল্লিশ বছর পর্যন্ত বাকি থাকবে। অনুরূপ জাহান্নামে গাভীন খচ্চরের সমান বড় বিচ্ছু থাকবে। এদের কোন একটি যাকেই একবার দশংন করবে এ দংশনের যন্ত্রণা ও তাপ চল্লিশ বৎসর যাবৎ কষ্ট দিতে থাকবে।

আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ ফরমান— زِدْنَاهُمْ عَذَابًا فَوْقَ الْعَذَابِ “আমি তাদের জন্য আযাবকে একের পর এক বৃদ্ধি করতে থাকব।” —সূরা নাহল-৮৮

মুস্তাদরাকে হাকেমের এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে—এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেন, এ আযাবে এমন বিচ্ছু নিযুক্ত থাকবে, যার দংশন, হবে বড় মৌমাছির দংশনের মত। —মুস্তাদরাকে হাকেম

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, জাহান্নামের কিনারা হবে-বিচ্ছুর আবাসস্থল । যে সাপ-বিচ্ছুর গর্দান হবে মোটা উটের সমান।—ইবনে ওয়াহাব

হযরত ইয়াযীদ ইবনে শাজারা (রহঃ) বলেন, যেমন সমূদ্রে সৈকত রয়েছে, ঠিক তেমনি জাহান্নামে কিনারা রয়েছে। সেখানে রয়েছে অসংখ্য কূপ। সেই কূপে মোটা মোটা সাপ ও গাভীন খচ্চরের মত বিচ্ছু রয়েছে। জাহান্নামীরা যখন আগুনের আযাব সহ্য করতে অপারগ হয়ে যাবে, তখন তারা আবেদন করবে আযাবকে শিথিল করার জন্য। তখন তাদেরকে আদেশ দেওয়া হবে, তোমরা জাহান্নামের কিনারায় চলে যাও। ফলে তারা সেখানে চলে যাবে। সেখানে যাওয়ার সাথে সাথেই ঐ সাপ-বিচ্ছুগুলো একসাথে তাদেরকে দংশন করতে থাকবে এবং আল্লাহ্র যতটুকু হুকুম হবে, তাদের দেহের ততটুকু অংশ খেয়ে ফেলবে। শুধু তাই নয়; বরং সেগুলোর দশংনের সাথে সাথে তাদের দেহ টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে যাবে। আবার জোড়া লেগে যাবে। তারা অতিষ্ঠ হয়ে আবারও ঐ বড় আগুনের দিকে দৌড়ে চলে যাবে। এরপর তাদেরকে দেওয়া হবে চুলকানী রোগ। তারা যেখানেই চুলকাবে সেখান থেকেই গোশত খশে পড়বে এবং হাড্ডি প্রকাশ পেয়ে যাবে । জিজ্ঞাসা করা হবে, হে অমুক! এতে কি তোমার কষ্ট হচ্ছে? সে উত্তরে বলবে, হ্যাঁ, খুব কষ্ট হচ্ছে। তখন তাকে বলা হবে, তুমি দুনিয়াতে মু’মিনদেরকে কষ্ট দিতে, এর বিনিময়েই আজ তোমার এ দশা।—ইবনে আবিদ্দুয়া

হযরত মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, জাহান্নামে কালো খচ্চরের মত বিচ্ছু রয়েছে। যার দংশন হবে তীর বিদ্ধ হওয়ার মত কষ্টদায়ক। এসব বিষ্ণু যখনই কোন কাফেরের মাথায় দশংন করবে, তখনই মাথা থেকে গোশত খসে মাটিতে পড়ে যাবে।

হযরত আবু উসমান (রহঃ) বলেন, পুলসিরাতে এমন সাপ নিযুক্ত রয়েছে,যা দোযখীদেরকে দংশন করতে থাকবে। তখন তারা বিকট আওয়াজে চিৎকার করতে থাকবে। অথচ জান্নাতীরা জান্নাতে থেকে এসবের কোন আওয়াজই শুনতে পাবে না । এদিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ তা’আলা এরশাদ ফরমান-لا يَسْمَعُوْنَ حَسِيْسَهَا “মু’মিনগণ জাহান্নামের সামান্য আওয়াজও শুনতে পাবে না।”—সূরা আম্বিয়া-১০২

তথ্যসূত্র:

বই :জাহান্নামের বর্ণনা মূল :আল্লামা মুফতী মোহাম্মদ এমদাদুল্লাহ আনওয়ার অনুবাদ :মাওলানা নাজমুল হুদা মিরপুরী

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *