ইসলাম

জাহান্নামীদের কুশ্রী আকৃতি এবং তাদের দৈহিক স্থূলতা

হাদীস ঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান— مَا بَيْنَ مَنْكِبَيِ الْكَافِرِ مَسِيْرَةَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ لِلْكَوَاكِبِ السَّرِيعِ জাহান্নামে কাফেরদের দুই কাঁধের মধ্যবর্তী দূরত্ব হল তেজি ঘোড়ার তিন দিনের পথ। —বুখারী, মুসলিম

হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান — ضِرْسُ الْكَافِرِ أَوْ نَابُ الْكَافِرِ مِثْلُ أُحُدٍ وَ غِلْظُ جِلْدِهِ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ

জাহান্নামে কাফেরদের মাড়ির দাঁত হবে অহুদ পাহাড়ের সমান। আর তাদের চামড়ার পুরুত্ব হবে তিন দিন চলার পথ ।

হাদীস ঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান- ضِرْسُ الْكَافِرِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِثْلُ أُحُدٍ وَ عِرْضُ جِلْدِهِ سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا وَ عَضُدَهُ مِثْلُ الْبَيْضَاءِ وَ فَخِذُهُ مِثْلُ وَرَقَانِ وَ مَقْعَدُهُ مِنَ النَّارِ مِثْلُ مَا بَيني وَبَيْنَ الرَّبَدَةِ –

কেয়ামতের দিবসে কাফেরদের মাড়ির দাঁত হবে অহুদ পাহাড়ের সমান। তাদের চামড়ার পুরুত্ব হবে সত্তর হাত বরাবর। তাদের এক বাহু হবে মদীনা থেকে বাইয়া নামক স্থান পর্যন্ত । তাদের রান হবে মদীনা থেকে ওয়ারকান নামক স্থান পর্যন্ত। তাদের আসনের স্থান হবে আমার এই স্থান থেকে রবযা নামক স্থান পর্যন্ত দীর্ঘ।—হাকেম ও আহমদ

হাদীস ঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান।

ضِرْسُ الْكَافِرِ مِثْلُ أُحُدٍ وَ فَخِذُهُ مِثْلُ الْبَيْضَاءِ وَ مَقْعَدُهُ مِنَ النَّارِ كَمَا بَيْنَ قَدِيْدٍ وَ مَكَّةَ وَ كِتَافَهُ جِلْدِهِ إِثْنَانِ وَ أَرْبَعُوْنَ ذِرَاعًا بِذِرَاعِ الْجَبَّارِ –

জাহান্নামে কাফেরদের দাঁত হবে অহুদ পাহাড়ের সমান । তাদের রান হবে বায়যা পাহাড়ের সমান। তাদের আসন হবে কদীদ ও মক্কা মুকাররমার মধ্যবর্তী স্থান সমান দূরত্ব। তাদের চামড়ার পুরুত্ব হবে বিয়াল্লিশ হাত। আল্লাহর ইলমে রয়েছে হাতের পরিমাণ কী ।

ফায়দা ঃ তিরমিযী শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জাহান্নামীদের আসনের চতুসীমা হবে মক্কা থেকে মদীনার মধ্যবর্তী দূরত্ব সমান ।

হাদীস ঃ হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন । তিনি এরশাদ ফরমান- يُعَظَّمُ أَهْلُ النَّارِ فِي النَّارِ حَتَّى أَنَّ مَا بَيْنَ شَحْمَةٍ أُذْنِ أَحَدِهِمْ إِلَى عَاتِقِهِ مَسِيْرَةَ سَبْعَ مِأَةٍ عَامٍ وَ أَنَّ غِلْطَ جِلْدِهِ سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا وَ أَنَّ ضِرْسَهُ مِثْلَ

জাহান্নামে জাহান্নামীদেরকে এত বেশি মোটা করে দেয়া হবে যে, তাদের মধ্যকার প্রত্যেকের কানের লতি এবং তাদের কাঁধের মধ্যবর্তী দূরত্ব হবে সাতশত বছরের পথ। তাদের চামড়ার পুরুত্ব হবে সত্তর হাত বরাবর। তাদের মাড়ির দাঁত হবে অহুদ পাহাড় সমান ।

হাদীস ঃ হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাযিঃ) রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নকল করেন, তিনি এরশাদ ফরমান— إِنَّ الْكَافِرَ لَيُعَظَّمُ حَتَّى اَنَّ ضِرْسَهُ لَأَعْظَمَ مِنْ أحُدٍ وَفَضِيْلَةَ جَسَدِم . ضِرْسِه كَفَضِيْلَةِ جَسَدِ أَحَدِكُمْ عَلَى ضِرْبهِ.

জাহান্নামীদের দেহকে এত মোটা করে দেয়া হবে যে, তাদের মাড়ির দাঁত হবে অহুদ পাহাড়ের সমান। আর তাদের দেহের আকার মাড়ির দাত অনুপাতে ততটুকু বড় হবে, যতটুকু তোমাদের দেহ তোমাদের মাড়ির দাঁত অনুপাতে বড় হয়ে থাকে । —ইবনে মাজাহ ও তাবরানী

হাদীস ঃ হযরত মেকদাদ ইবনে মা’দিকারাব (রাযিঃ) বলেন, নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান— ‘যারাই জাহান্নামী হবে তাদের দেহকে পাহাড়ের মত মোটা করে দেয়া হবে।’ হযরত ইবনে মাইমুনা (রাযিঃ) বলেন, কাফেরদের গোশত ও চামড়ার মধ্যখানে কীড়া ও পোকা-মাকড়ের আওয়াজ এত বেশি শোনা যাবে, কেমন যেন হিংস্র প্রাণী হুংকার দিচ্ছে। —আততাখরীফ

হাদীস ঃ হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান — কেয়ামতের দিবসে কাফেররা আপন জিহ্বাকে দুই ফরসখ অর্থাৎ, ষোলশত কিলোমিটার বরাবর পেছন থেকে টেনে আনতে থাকবে। আর অন্যান্য লোকেরা তার জিহ্বা পদদলিত করতে থাকবে ।

গুনাহগার মু’মিনদের দেহ

কোন কোন গোনাহগার মু’মিনের জন্যও এমন ভয়াবহ সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। যেমন হযরত হারেস ইবনে কায়েস (রাযিঃ) বর্ণনা করেন। হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান— إِنَّ مِنْ أُمَتى مَنْ يُعَظَّمُ لِنَّار حَتَّى يَكُوْنَ أَحَدٌ زَوَايَاهَا

আমার উম্মতের মধ্য থেকেও কিছু লোক এমন হবে, যাদের দেহকে এত বেশি মোটা করা হবে যে, জাহান্নামের এক কোণের জন্য তা যথেষ্ট হয়ে যাবে। পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান

হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান—জাহান্নামে একজন মুসলমানের রান হবে অহুদ পাহাড়ের সমান। তার মাড়ির দাত হবে বায়যা পাহাড় সমান। (হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ] বলেন,) আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাদের এমন অবস্থা হবে কেন? এরশাদ ফরমাইলেন, কারণ, তারা আপন পিতা-মাতার অবাধ্য ছিল। ——তাবরানী

অত্যাচারী শাসক

হাদীস ঃ হযরত আনাস (রাযিঃ) হুযুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন— কেয়ামতের দিবসে অত্যাচারী শাসকদেরকে পেশ করা হবে, যার সাথে তার প্রজারা ঝগড়া করতে থাকবে ও তার উপর বিজয়ী হয়ে যাবে। তারা তাকে বলবে, আমাদের পক্ষ থেকে জাহান্নামের কোন এক কোণা তোমার বিশাল দেহ দ্বারা ভরে দাও ।

ফায়দা ঃ যেহেতু দোযখ অনেক বড় ও সুপ্রশস্ত, তাই তার কোন এক কোণ ভরার জন্য প্রয়োজন হল বিশাল এক অস্তিত্বের। আর ঐ অত্যাচারী শাসক দ্বারা মুসলমান শাসক উদ্দেশ্য। অতএব বুঝা গেল, কিছু গোনাহগার মুসলমানকেও জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। সুতরাং, তাদের দেহকেও সেই অনুপাতে বড় করা হবে।

হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, জাহান্নামে জাহান্নামীদের দেহকে এত বড় করে দেয়া হবে যে, তাদের দৈর্ঘ্য হবে লম্বা লম্বা সাত রাত্রির সমান দূরত্ব।(সাত রাত্রির পরিমাণ আল্লাহই ভাল জানেন) তাদের একটি মাড়ির দাঁত হবে অহুদ পাহাড় সমপরিমাণ। তাদের ঠোটগুলো ঝুলে পড়বে তাদের বুকের উপর ।দেখতে খুবই বিশ্রি দেখাবে। তারা পিপাসার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিক-বিদিক ছুটে বেড়াবে।

হযরত হাসান বসরী (রহঃ) জাহান্নামীদের কথা উল্লেখ করে বলেন,জাহান্নামীদের দেহকে একটি তেজস্বী সওয়ারীর তিন দিন তিন রাত সফরের সমপরিমাণ বড় ও মোটা করা হবে। তাদের প্রত্যেকের মাড়ির দাতের উচ্চতা হবে খেজুর গাছের মত লম্বা। তাদের পায়খানার রাস্তা হবে বিশাল এক গুহা বা ঘাটির সমান। তাদের হাতগুলো থাকবে তাদের গলার সাথে বাধা। তাদের মাথার চুলগুলোকে তাদের পায়ের সাথে বেধে রাখা হবে। ফেরেশতারা তাদেরকে সামনে ও পেছন দিক থেকে প্রহার করতে থাকবে ও জাহান্নামের দিকে হাকিয়ে নিয়ে যেতে থাকবে। কোন জাহান্নামী ফেরেশতাকে বলবে আমাদের উপর একটু রহম কর। ফেরেশতা বলবে, আমি কিভাবে তোর উপর রহম করব, খোদ আরহামুর রাহেমীন তো তোর উপর রহম করেনি ।

ফায়দা ঃ জাহান্নামীদেরকে অধিক আযাব দেয়ার উদ্দেশ্যেই তাদের দেহকে অনেক বড় করা হবে। কারণ, দেহ যত বড় হবে আযাবও তত বেশি অনুভব হবে।

মুখমণ্ডল ঝলসে যাওয়া

আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ ফরমান- تَلْفَحُ وُجُوْهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ জাহান্নামের আগ্ন তাদের মুখমণ্ডল ঝলসে দেবে এবং তাদের চেহারা বিকৃত হয়ে খুব বিশ্রি দেখা যাবে ।

হাদীস ঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম وَهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ এর তাফসীরে বলেছেন— تَقُويْهِ النَّارُ تَفْقَلِصُ شَفَتُهُ الْعُلْيَا حَتَّى تَبْلُغَ وَسْطَ رَأْسِهِ وَ تَسْتَرْخِي تَفَتُهُ السُّفْلَى حَتَّى تَضْرِبَ سُرَّتَهُ –

জাহান্নামের আগুন তাদের মুখমণ্ডলকে এমনভাবে ভুনা করবে যে, তাদের উপরের ঠোট সংকোচিত হয়ে তাদের মাথার মধ্যখানে চলে যাবে, আর নিচের ঠোট লম্বা হয়ে নাভী পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। —আহমাদ ও তিরমিযী

এখানে একথাটিও লক্ষ্য রাখতে হবে যে, এমনিই তো জাহান্নামীদের দেহ এত বেশি বড় হবে যে, সে অনুপাতে তাদের ঠোটগুলো কত বিশাল হবে এবং কত বেশি বিশি দেখাবে।

নতুন চামড়া পরিধান করান হবে

আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ ফরমান— إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِايْتِنَا سَوْفَ نُصْلِيْهِمْ نَارًا كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُودُهُمْ بَدَّلْتهُمْ جُلُودًا غَيْرَهَا لِيَذُوقُوا الْعَذَابَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَزِيزًا حَكِيْمًا –

নিশ্চয়ই যারা আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। যখনই তাদের চামড়াগুলো জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যাবে, তখনই আমি তা অন্য চামড়া দিয়ে পাল্টে দেব। যাতে তারা (নতুন করে আযাব আস্বাদন করতে পারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা মহা পরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী । –সূরা নিসা-৫৬

হাদীস ঃ হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, জনৈক লোক হযরত উমর (রাযিঃ) এর সামনে আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, তিনি তাকে বললেন, আয়াতটি আবারও পড়। সে তা আবার পাঠ করল। তখন হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ) বললেন, আমার নিকট উক্ত আয়াতের তাফসীর হল, এক মুহূর্তে জাহান্নামীদের চামড়া একশত বার পরিবর্তন করা হবে। তখন হযরত উমর (রাযিঃ) বলেন, আমিও রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমনটি শুনেছি । —ইবনে আবী হাতেম

হাদীস ঃ হযরত উমর (রাযিঃ) হযরত কা’ব (রাযিঃ) এর নিকট এ আয়াতের তাফসীর জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তিনি বললেন, জাহান্নামীদের চামড়াকে জ্বালানো হবে এবং তাদের চামড়াকে এক মুহূর্তে এক লক্ষ বার তরজাতা চামড়া দিয়ে পরিবর্তন করা হবে। হযরত উমর (রাযিঃ) বললেন, তুমি সত্যই বলেছ। —ইবনে আবী হাতেম

দেহের দৈর্ঘ্য এবং চেহারার কৃষ্ণবর্ণ

হাদীস ঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নিম্নোক্ত আয়াত—يَوْمَ نَدْعُوْا كُلُّ أُناسٍ بِاِمَامِهِمْ যেদিন আমি সকল লোকদেরকে, তাদের নেতাদের সাথে আহ্বান করব। (—সূরা ইসরা-৭১) এর তাফসীরে ফরমান, মুসলমানদের মধ্য থেকে এক লোককে ডাকা হবে ও তার ডান হাতে তার আমল নামা দেয়া হবে। তার দেহকে ষাট হাত লম্বা করা হবে। চেহারাকে ধবধবে সাদা করা হবে। তার চেহারা নূরে ঝলমল করতে থাকবে। মাথায় নূরের মুকুট পরিধান করানো হবে। তখন সে দৌড়ে তার বন্ধুদের নিকট চলে যাবে। বন্ধুরা যখন তাকে দূর থেকে দেখতে থাকবে, তখন তারা দো’আ করতে থাকবে, হে আল্লাহ্, তাকে আমাদের নিকট পাঠিয়ে দিন তার থেকে কিছু বরকত আমাদেরকেও দান, করুন। ফলে সে তাদের নিকট গিয়ে পৌঁছবে। সে এসে বলতে থাকবে, সুসংবাদ তোমাদের সকলের জন্য । তোমাদের প্রত্যেকের জন্য এমন পুরস্কার রয়েছে ।

অতঃপর হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমান— আর কাফেরদের অবস্থা হবে এমন যে, তাদের মুখমণ্ডল হবে খুবই কৃষ্ণবর্ণ। তাদের পাগুলোকে আদম (আঃ)-এর পায়ের সমান বড় করা হবে। তার মাথায় আগুনের টুপি রাখা হবে। যখন তার বন্ধুরা তাকে দেখতে পাবে, তখন তারা আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দো’আ করতে থাকবে, হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের নিকট পাঠাবেন না । আপনি আমাদেরকে তার অকল্যাণ থেকে পানাহ দান করুন। কিন্তু এর পরও সে তাদের কাছে গিয়ে পৌঁছবে। তারা আবার দো’আ করবে, হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের থেকে দূর করে দিন। সে বলতে থাকবে, আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকেও তাঁর থেকে দূর করে দিয়েছেন। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য এমন আযাব রয়েছে। —তিরমিযী শরীফ

হাদীস ঃ হযরত আতা ইবনে ইয়াসার (রহঃ) বলেন, হযরত কা’ব আহবার (রাযিঃ) ফরমান, কেয়ামতের দিবসে অথর্ব লোকদের সর্দারকে ডাকা হবে। তাকে বলা হবে, চল আপন প্রভুর কাছে। অতঃপর তাকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট নিয়ে যাওয়া হবে। আল্লাহ্ তা’আলা তার থেকে পর্দা করে নিবেন । হুকুম দেয়া হবে, তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দাও। অতঃপর তাকে তার বন্ধুবান্ধবের ঠিকানা দেখিয়ে দেয়া হবে। বলা হবে, এটা অমুকের ঘর, এটা অমুকের ঘর এবং তাদের জন্য যেসব আযাব নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে, সেগুলোও সে প্রত্যক্ষ করতে পারবে এবং তাদের আবাসস্থলগুলোও প্রত্যক্ষ করতে পারবে। সে এটাও দেখতে পাবে যে, তার আবাসস্থলটি অন্যান্য সকল আবাস অপেক্ষা অধিক নিকৃষ্ট। হযরত কা’ব (রাযিঃ) বলেন, অতঃপর তাদের মুখমণ্ডলকে কৃষ্ণ বর্ণ করে দেয়া হবে। তাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেয়া হবে। মাথায় অগ্নিতাজ রাখা হবে। তার অবস্থা এমনই হবে। এক জামাত দূর থেকে তাকে দেখতে থাকবে। তারা তার দুর্দশা দেখে তার থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে থাকবে । অতঃপর সে আপন বন্ধু-বান্ধবের নিকট আসবে, যারা দুনিয়াতে তার সাথে মন্দ কাজে শরীক থাকত, তার সাহায্য সহায়তা করত। সে বন্ধুদের কাছে এসে জাহান্নামের বিবরণ দিতে থাকবে, যা আল্লাহ্ তা’আলা জাহান্নামে তৈরি করে রেখেছেন। এসব শুনে বন্ধু-বান্ধবের, মুখমণ্ডলও কৃষ্ণবর্ণ হয়ে যাবে। অন্যান্য লোকেরা তাদের এ কৃষ্ণবর্ণ চেহারা দেখেই চিনতে পারবে ও বলবে যে, এরাই হল জাহান্নামী । —আবু নুয়াঈম

তথ্যসূত্র:

বই :জাহান্নামের বর্ণনা মূল :আল্লামা মুফতী মোহাম্মদ এমদাদুল্লাহ আনওয়ার অনুবাদ :মাওলানা নাজমুল হুদা মিরপুরী

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *