মাতাপিতার খেদমত হজ্জ ও উমরার সমতুল্য
হজ্জ ও উমরা করলে যে সওয়াব হয় মাতা-পিতার খেদমত করলেও সেরূপ সওয়াব পাওয়া যায়। এ সম্পর্কিত একটি হাদীস : عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ أَتَى رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ ﷺ فَقَالَ إِنِّي أَشْتَهِي الْجِهَادَ وَلَا أَقْدَرُ عَلَيْهِ قَالَ هَلْ بَقِي مِنْ وَالِدَيْكَ أَحَدٌ ؟ قَالَ أَمِّي، قَالَ فَأَقْبَلِ اللهَ فِي بِرْهَا فَإِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ فَأَنْتَ حَاجٌ وَمُعْتَمِر وَمُجَاهِدٌ –
“হযরত আনাস বিন মালিক রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ স.-এর নিকট এসে বলল : আমি জিহাদে যেতে আগ্রহী, কিন্তু আমার জিহাদ করার মত ক্ষমতা নেই। রাসূলুল্লাহ্ স. বললেন, তোমার মাতা-পিতার কেউ বেঁচে আছেন কি ? লোকটি বললো : আমার মা আছেন। রাসূলুল্লাহ স. বললেন, তার সাথে ভালো ব্যবহার কর। এতেই আল্লাহ বরকত রেখেছেন। যদি তুমি তা কর তবে তুমি হাজী, উমরাহকারী ও মুজাহিদের সমপর্যায়ভুক্ত হবে।”
আবু ইয়ালা হাদীসটি স্বীয় মুসনাদে এবং তাবারানী স্বীয় আওসাত ও সাগীরে বর্ণনা করেছেন। অন্য আর একটি হাদীস : عَنِ ابْنِ عَبَّاس قَالَ كَانَ الْفَضْلُ رَكَيْفَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَجَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنْ خَشْعَمَ فَجَعَلَ الفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَتَنْظُرُ إِلَيْهِ وَجَعَلَ النَّبِيُّ ﷺ يَصْرِفُ وَجْهَ الْفَضْلِ إِلَى الشَّقِّ الْآخَرِ، فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ فَرِيضَةَ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ فِي الحَج ادركت أبي شَيْخًا كَبِيرًا لا يَثْبُتُ عَلَى الرَّاحِلَةِ أَفَاحُجٌ عَنْهُ ؟ قَالَ نَعَمْ وَذَلِكَ فِي حَجَّةِ الْوِدَاعِ –
“ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফযল রা. রাসূলুল্লাহ স. -এর পশ্চাতে (সওয়ারীতে উপবিষ্ট) ছিলেন। এমতাবস্থায় থাশআ’ম গোত্রের এক মহিলা এলো। ফযল তার দিকে দেখছিলেন আর ঐ মহিলা ফখলের দিকে তাকাচ্ছিল। (এটা দেখে) রাসূলুল্লাহ স. ফযলের মুখাবয়ব অন্যদিকে পরিবর্তন করে দিলেন। অতপর ঐ মহিলা বললো, আমার বৃদ্ধ পিতার ওপর হজ্জ্ব ফরয হয়েছে। কিন্তু তিনি সওয়ারীর উপর বসে থাকতে পারেন না। সুতরাং আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্জ করব? রাসূলুল্লাহ স. বললেন, হ্যাঁ। এটা বিদায় হজ্জের ঘটনা।”-বুখারী
আরো একটি হাদীস : وَأَخْرَجَ الْبُخَارِيُّ فِي صَحِيحِهِ أَيْضًا عَنْ ابْنِ عَبَّاسِ أَنَّ امْرَأَةٌ مِنْ جَهَيْنَةَ جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّى نَذَرَتْ أَنْ تَحْجِّ فَمَاتَتْ قَبْلَ أَنْ تَحجَّ أَفَاحُجَّ عَنْهَا ؟ قَالَ نَعَمْ، حَجَى عَنْهَا، أَفَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دين أكُنْتِ قَاضِيْتِهَا ، قَالَتْ نَعَمْ قَالَ فَاقْضِي الَّذِي لَهُ فَإِنَّ اللَّهَ أَحَقُّ
“ইমাম বুখারী র. ইবনে আব্বাস রা. হতে এরূপও বর্ণনা করেছেন যে, জুহাইনা গোত্রের এক মহিলা রাসূলুল্লাহ স.-এর কাছে এসে বললো, আমার মা হজ্জ পালনের (নযর) মানত করেছেন। কিন্তু পালন করার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। এখন আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্জ করব ? রাসূলুল্লাহ স.বললেন, হ্যাঁ, তার পক্ষ থেকে তুমি হজ্জ পালন কর। তোমার মায়ের উপর যদি ঋণ থাকত তবে কি তুমি তা আদায় করতে না ? ঐ মহিলা বললো, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ স. বললেন, সুতরাং আল্লাহর প্রাপ্যকে আদায় কর। প্রাপ্য আদায়ে আল্লাহ বেশী হকদার।
বই : মাতা-পিতা ও সন্তানের হক
অধ্যাপক মুহাম্মদ মতিউর রহমান