ইসলাম

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্পর্কে বিশেষ যে সব আকীদা রাখতে হবে তা হল :

১. আমাদের নবী (সাঃ)-এর নবুওয়াত বিশেষ কোন দেশ বা গোষ্টির জন্য নয় বরং তিনি কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র জাহানের সকল জাতির জন্য নবী। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন , আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য প্রেরণ করেছি। (সূরাঃ ৩৪-সাবাঃ ২) আল্লাহ আরো বলেন, তুমি বলে দাও, হে লোক সকলেরা! আমি তোমাদের সকলের নিকট আল্লাহর রাসূল। (সূরাঃ ৭-আ’রাফ : ১৫৮) আল্লাহ আরো বলেন, মহান ঐ সত্তা যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফুরকান (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন, যাতে সে বিশ্ববাসীর জন্য সতর্ককারী হতে পারে। (সূরাঃ ২৫ – ফুরকান : ১)

নবী কারীম (সা:) ইরশাদ করেন, পূর্বে (কোন কোন) নবী বিশেষভাবে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরিত হতেন আর আমি সমগ্র মানব জাতির নিকট প্রেরিত হয়েছি।(বুখারী,মুসলিম)

তিনি আরো বলেন, ঐ সত্তার কছম যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, এই উম্মতের ইয়াহুদী নাসারা যে কেউ আমার কথা জানার পরও আমার প্রতি ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করলে সে জাহান্নামী হবে।(মুসলিম)

২. আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সকল নবীর চেয়ে মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ। তিনি নবী রাসূলদের সর্দার এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। কুরআন, হাদীছ, ইজমা ও কেয়াস দ্বারা এটা প্রমাণিত যেমন :

(এক) এ কারণেই আল্লাহ্ তা’আলা সব নবী-রাসূল থেকে আমাদের নবী (সাঃ)-এর যুগ পাওয়ার শর্তে তাঁর প্রতি ঈমান আনয়ন ও তাঁর নুসরত করার অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন।

(দুই) তাঁর উম্মতকে সকল উম্মতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। আর উম্মত শ্রেষ্ঠ হয় দ্বীনী কামালিয়াতের ভিত্তিতে। আর দ্বীনী কামালিয়াত রাসূলের কামালিয়াতের অধীন। অতএব রাসূলের উম্মতের শ্রেষ্ঠ হওয়া তাঁরই শ্রেষ্ঠ হওয়ার প্রমাণ। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে।(সূরাঃ ৩-আলু ইমরানঃ ১১০)

(তিন) হাদীছে এসেছে : অন্যান্য নবীদের উপর ছয়টি বিষয়ে আমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে। ( তার মধ্যে একটি হল আমি সমগ্র মানব জাতির জন্য প্রেরিত হয়েছি।(বুখারী,মুসলিম)

(চার) রাসূল (সাঃ)-এর শরী‘আত সকল শরী‘আতের চেয়ে কামেল ও পূর্ণাঙ্গ । আর শরীআত পূর্ণাঙ্গ ও কামেল হওয়া নবূওয়াত কামেল হওয়ার প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরাঃ ৫ – মায়িদাঃ ৩)

৪. তিনি খাতামুন্নাবীয়্যীন অর্থাৎ, শেষ নবী। তাঁর পর আর কোন নবী আসবেন না। অন্য কেউ নবী হওয়ার দাবী করলে সে ভন্ড এবং কাফের। রাসূল সা: ইরশাদ করেন , মুহাম্মাদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নয় বরং সে আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী । (সূরাঃ ৩৩ – আহযাব : ৪০) রাসূল সা: ইরশাদ করেন , , আমি শেষ নবী; আমার পর আর কোন নবী নেই ।

তথ্য সূত্রঃ

কিতাবঃ ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত মতবাদ

লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দিন শায়খুল হাদিস, জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, তাঁতিবাজার, ঢাকা – ১১০০। মুহাদ্দিছ, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, ৩৩২, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ঢাকা ১২৩৬

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *