আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার কারণ সমূহ:
১. মূর্খতা :
কেউ কেউ হয়তো বা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার ইহ-কালীন ওপর-কালীন ভয়ানক পরিণতির কথা না জানার দরুনই আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হতে পারেন। তেমনিভাবে কেউ কেউ আবার আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার ইহ-কালীন ও পর-কালীন লাভ না জানার কারণেও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধ নাও হতে পারেন। তাই উক্ত সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য উভয় প্রকারের জ্ঞানই প্রয়োজন ।
২. তাকওয়া বা আল্লাহ সচেতনতা দুর্বল:
কেউ কেউ হয়ত বা উপরোক্ত জ্ঞান রাখেন। তবে তার মধ্যে আল্লাহ ভীরুতা খুবই দুর্বল। যার দরুন সে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করতে ভয় পায় না অথবা আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করতে উৎসাহী হয় না। এমনকি সে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার পরিণতি সম্পর্কে একটুও ভেবে দেখে না।
৩. অহঙ্কারঃ
কোনও কোনো আত্মীয়-স্বজন তো এমনও রয়েছে যে, যখন সে দুনিয়ার কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ-মর্যাদা লাভ করে অথবা বিশেষ কোনও সামাজিক প্রতিপত্তি অর্জন করে কিংবা বড় মাপের একজন ধনী হয়ে যায়, তখন সে নিজ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করা ও তাদের সাথে পরিচয় দেয়াকে মানহানি মনে করে। বরং সে মনে করে, আত্মীয়-স্বজনরা তার সাথেই সাক্ষাৎ করুক এটাই তার অধিকার।
৪. অলসতা করে দীর্ঘদিন সাক্ষাত না করাঃ
কখনো কখনো যে কোনও কারণে কারোর কোনও আত্মীয়- স্বজনের সাথে তার দীর্ঘ দিন যাবত দেখা-সাক্ষাৎ না হলে পরবর্তীতে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে সত্যিই তার লজ্জা লাগে। এমনকি দেখা করবো করবো বলে আর তাদের সাথে দেখা করা হয় না। এমনি ভাবেই তা এক সময় আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করায় রূপান্তরিত হয়।
৫. কঠিন তিরস্কার:
কেউ কেউ তার কোনও আত্মীয়-স্বজন দীর্ঘ সাক্ষাত হীনতার পর তার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলে তাকে খুব কঠিন ভাবে তিরস্কার করে। আর তখন তার আত্মীয় তার সাথে দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ করতে ভয় ও লজ্জা পায়। ফলে তার একে অপরের সাথে দেখা দেয় না। তখন এমনিভাবেই ধীরে ধীরে তাদের মধ্যকার সম্পর্কটুকু ছিন্ন হয়ে যায়।
৬. আপ্যায়নে বেশি বাড়াবাড়ি:
কোনও কোনো গরিব ব্যক্তি আবার তার কোনও আত্মীয়-স্বজন তার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলে তার জন্য প্রয়োজনাতিরিক্ত অধিক আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে এবং এ জন্য অনেক টাকাও খরচ করে। তখন তার কোনও বুদ্ধিমান আত্মীয়-স্বজন তার সাথে আর সাক্ষাৎ করতে চায় না। যেন সে আপ্যায়নের ঝামেলায় পড়ে আরও গরিব ও আরও ঋণগ্রস্ত না হয়ে যায়।
৭. মেহমানের প্রতি গুরুত্বহীনতাঃ
আবার কেউ কেউ এমনও রয়েছে যে, তার কোনও আত্মীয়-স্বজন তার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলে তাকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না। তার কথা-বার্তা গুরুত্ব দিয়ে শোনে না। তার আগমনে তেমন একটা খুশি প্রকাশ করে না। বরং তাকে মলিন চেহারায় অভ্যর্থনা জানায়। এমতাবস্থায় তার আত্মীয়-স্বজনরা তার সাথে দ্বিতীয়বার দেখা করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু এ ধরনের আচরণ কোনও ভাবেই কাম্য নয়। একজন ঈমানদারের জন্য উচিত হল, একজন মেহমানের মেহমানদারি করা। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخَرِ، فَلْيُكْرمْ ضَيْفَهُ “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি বিশ্বাস করে, সে যেন মেহমানের মেহমানদারি করে।
৮. অত্যধিক কার্পণ্য:
কেউ কেউ আবার অনেক ধন-সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও তার আত্মীয়-স্বজন থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। তার ধারণা, সে তাদের নিকটবর্তী হলে তারা তার কাছ থেকে ঋণ চাইবে। তার থেকে যে কোনও আর্থিক সহযোগিতা কামনা করবে। মূলত: সে সম্পদের কোনও মূল্যই নেই যে সম্পদ দিয়ে কারোর কোনও আত্মীয়-স্বজন তার কাছ থেকে এতটুকুও উপকৃত হতে পারলো না।
৯. মিরাস বণ্টনে অতি বিলম্ব:
কখনো কখনো অলসতা কিংবা কোনও কর্তা ব্যক্তির হঠকারিতার দরুন ওয়ারিশ আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে মিরাস বণ্টন করা হয় না। তখন মিরাস বণ্টনে উৎসাহী ও অনুৎসাহীদের মাঝে এক ধরনের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। আর এরই পরিণতিতে তাদের মধ্যকার আত্মীয়তার বন্ধনটুকুও ছিন্ন হয়ে যায়।
১০. যৌথ ব্যবসা-বাণিজ্য :
কখনো কখনো আবার কেউ কেউ নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বোন- ভাইদেরকে নিয়ে যৌথ ব্যবসা-বাণিজ্য করে থাকে ; অথচ তারা পরস্পরের মধ্যে এ সংক্রান্ত কোনও সুস্পষ্ট নিয়ম-নীতি ঠিক করেনি। বরং তারা পরস্পরের প্রতি ভালো ধারণার ভিত্তিতেই তা চালিয়ে যায়। কিন্তু যখন লাভ বেশি হতে শুরু করে এবং কাজের পরিধিও বেড়ে যায় তখন তাদের পরস্পরের মাঝে এক ধরনের কু-ধারণা জন্ম নেয়। আর তখনই তারা একে অপরের প্রতি যুলুম করতে উদ্যত হয়।
বিশেষ করে যখন তাদের মাঝে আল্লাহ ভীতি ও একে অপরকে অগ্রাধিকার দেয়ার নীতি লোপ পায় অথবা কেউ কোনও ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে একতরফা সিদ্ধান্ত নেয় কিংবা একজন অন্যের চাইতে কাজে বেশি উৎসাহী হয়। আর এভাবেই তখন তাদের মধ্যকার আত্মীয়তার বন্ধনটুকু ছিন্ন হতে শুরু করে। আল্লাহ তা’আলা বলেন: وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ الْخُلَطَاءِ لَيَبْغِي بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ إِلَّا الَّذِينَ ءَامَنُوا وَعَمِلُوا الصَّلِحَاتِ وَقَلِيلٌ مَّا هُمْ ) (ص : ٢٤] “নিশ্চয়ই শরীকদের অনেকেই একে অন্যের উপর অবিচার করে থাকে। তবে সৎকর্ম-শীল মু’মিনরা নয়। যারা সংখ্যায় খুবই কম”।সূরা সদ, আয়াত: ২৪
১১. দুনিয়া নিয়ে অতি ব্যস্ততা:
কেউ কেউ আবার দুনিয়া নিয়ে অতি ব্যস্ততার দরুন আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগই পায় না। এমনিভাবেই তা এক দিন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করায় রূপান্তরিত হয়।
১২. আত্মীয়দের মাঝে তালাক:
কখনো কখনো আবার কেউ কেউ নিজ আত্মীয়-স্বজনকে বিবাহ করার পর তাকে যে কোনও কারণে তালাক দিয়ে দেয়৷ তখন তাদের সন্তান কিংবা তাদের মধ্যকার কোনও লেন-দেন নিয়ে তাদের মাঝে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যার পরিণতিতে একদা তাদের মধ্যকার আত্মীয়তার বন্ধনটুকুও ছিন্ন হয়ে যায়।
১৩. অলসতা ও দূরত্ব:
কেউ কেউ চাকুরীর কারণে আত্মীয়-স্বজন থেকে বহু দূরে অবস্থান করে থাকে। অলসতা ও দূরত্বের কারণে ইচ্ছা থাকলেও আত্মীয়- স্বজনের সাথে আর সাক্ষাৎ করা হয় না। এমনিভাবেই তা এক দিন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করায় রুপান্তরিত হয়।
১৪. আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি অবস্থান:
আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি অবস্থানও কখনো কখনো আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার কারণ হতে পারে। কারণ, একে অপরের পাশে স্থায়ীভাবে অবস্থান করলে যে কোনও সময় তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব লাগতেই পারে। এ জন্যই উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: مُرُوْا ذَوِي الْقَرَابَاتِ أَنْ يَتَزَاوَرُوْا وَلَا يَتَجَاوَرُوا “তোমরা নিজ আত্মীয়-স্বজনদেরকে আদেশ করো যেন তারা পরস্পর সাক্ষাৎ করে এবং একে অপর থেকে দূরে অবস্থান করে”।
কারণ, আত্মীয়-স্বজনরা দীর্ঘ দিন যাবত একে অপরের পাশাপাশি অবস্থান করলে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে তাদের পরস্পরের মাঝে কোনও না কোনও সময় দ্বন্দ্ব-বিগ্রহ স্বভাবতই ঘটে থাকবে। আর এতে করে তাদের পরস্পরের মাঝে বৈরিতা ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার মতো ঘৃণ্য ব্যাপারটিও ঘটতে পারে। আবার কখনো কখনো আত্মীয়-স্বজনরা একে অপরের অতি নিকটে অবস্থান করার দরুন পরস্পরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্বে রূপান্তরিত হয়। কারণ, স্বভাবতই প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ সন্তানকে অপরের সামনে নির্দোষই প্রমাণ করতে চায়। আর এতে করে তাদের পরস্পরের মাঝে বৈরিতা ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার মতো ঘৃণ্য ব্যাপারটিও ঘটতে পারে।
আক্সাম ইবন স্বাইফী বলেন: تَبَاعَدُوا فِي الدَيَارِ تَقَارَبُوا فِي الْمَوَدَّةِ “তোমরা ঘর বাড়ি বানানো ক্ষেত্রে দূরত্ব বঝায় রাখ, আর ভালোবাসার ক্ষেত্রে কাছাকাছি থাক”।
১৫. আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ধৈর্যের পরিচয় না দেওয়া:
কোনও কোনো আত্মীয়-স্বজন তো এমনও রয়েছে যে, অন্য আত্মীয়ের সামান্যটুকু দোষ-ত্রুটিও তার এতটুকু সহ্য হয় না। কেউ তার প্রতি সামান্যটুকু দোষ করলেই তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য সে উদ্যত হয়।
১৬. যে কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে কোনও আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত দিতে ভুলে যাওয়া:
কেউ বিয়ে-শাদি কিংবা আক্বীকা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে সে সাধারণত তার নিজ আত্মীয়-স্বজন এবং নিকটতম বন্ধু- বান্ধবদেরকে মৌখিক, কার্ড দিয়ে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য দাওয়াত করে থাকে। এ দিকে অনুষ্ঠানের প্রচুর আয়োজনাদির ঝামেলার দরুন হয়তো বা সে তার আত্মীয়-স্বজনদের কাউকে দাওয়াত দিতে ভুলে গেলো। আর তখনই তার উক্ত আত্মীয় মানসিক দুর্বলতা ও অত্যধিক কু-ধারণা প্রবণ হওয়ার দরুন তার সম্পর্কে বাস্তবতা বহির্ভূত নিরেট খারাপ মন্তব্য করে বসে।
তখন সে মনে মনে বলে, আমার আত্মীয়টি আমাকে হীন মনে করেই ইচ্ছাকৃতভাবে দাওয়াত দিতে ভুলে গেলো। আর তখন এমনিভাবেই তা এক দিন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করায় রূপান্তরিত হয়৷
১৭. হিংসা:
আল্লাহ তা’আলা মানব সমাজের কোনও কোনো ব্যক্তিকে অন্যান্যদের তুলনায় অত্যধিক জ্ঞান, দুনিয়ার পদ মর্যাদা, ধন-সম্পদ ও মানুষের ভালোবাসা দিয়ে থাকেন। তখন তিনি নিজ আত্মীয়- স্বজনদের খবরাখবর নেন এবং তাদেরকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করে থাকেন। আর তখনই তাঁর কোনও হিংসুক আত্মীয়ের তা সহ্য নাও হতে পারে। তখন সে উক্ত ব্যক্তির নিষ্ঠার ব্যাপারে কথা তোলে এবং তাঁর সাথে হিংসাবশত শত্রুতা করতে থাকে। আর তখন এমনিভাবেই তা এক দিন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করায় রূপান্তরিত হয়।
১৮. অতিরিক্ত ঠাট্টা-মশকারা:
কেউ কেউ আবার স্বভাবগতভাবেই হাসি-ঠাট্টা করাকে বেশি পছন্দ করে। এমতাবস্থায় তার মুখ থেকে কখনো কখনো এমন শব্দ বা বাক্য বের হওয়া অস্বাভাবিক নয় যা অন্যের অনুভূতিকে দারুণভাবে আঘাত করে। তখন বক্তার প্রতি তার অন্তরে এক ধরনের ঘৃণা ও শত্রুতা জন্ম নেয়। আর এ ধরনের ব্যাপার আত্মীয়-স্বজনদের মাঝেই বেশি ঘটতে পারে। কারণ, তারাই তো বেশির ভাগ পরস্পর একত্রিত হয়।
আল্লামা ইব্বু আব্দিল বার [রাহিমাহুল্লাহ্] বলেন: কিছু কিছু বিজ্ঞ আলিম হাসি-ঠাট্টা করাকে অপছন্দ করতেন। কারণ, এর পরিণতি ভালো নয়। এর মাধ্যমে মানুষের ইজ্জত ও ভ্রাতৃত্ব বিনষ্ট হয়। মানুষে মানুষে শত্রুতা বৃদ্ধি পায়।
১৯. চুগলি করা অথবা তা শুনা:
কিছু মানুষের এমন কুরুচিপূর্ণ স্বভাব রয়েছে যে, এক জনের কথা অন্য জনের কাছে না লাগালে তার পেটের ভাতই হজম হয় না। তার কাজই হচ্ছে একের কথা অন্যের কাছে লাগিয়ে মানুষের মধ্যকার সুসম্পর্ক বিনষ্ট করা। এভাবে কখনো কখনো আত্মীয়তার বন্ধনও বিনষ্ট হয়। চুগলির চাইতে চুগলি শুনার অপরাধ কম নয়। কারণ, কেউ সর্বদা অন্যের কাছ থেকে চুগলি শুনলে ও বিশ্বাস করলে তার জীবনে একদা এমন এক সময় আসবে যখন সে তার জন্য কোনও খাঁটি বন্ধুই খুঁজে পাবে না।
২০. স্ত্রীর অসৎ চরিত্র:
কারো কারোর স্ত্রী তো এমন রয়েছে যে, সে তার স্বামীর কোনও আত্মীয়-স্বজনকে দেখতে পারে না। সে চায় না যে, কেউ তার স্বামীর অনুগ্রহভাজন হোক। সুতরাং সে তার স্বামীকে তার আত্মীয়- স্বজনদের প্রতি বিষিয়ে তোলে। তাদের সাথে তাকে সাক্ষাৎ করতে দেয় না। তাদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করতে সে তাকে নিরুৎসাহিত করে। সে তার বাসায় স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের কাউকে আপ্যায়ন করতে দেয় না। হঠাৎ তার স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের কেউ তার বাসায় এসে পড়লে সে তার প্রতি কোনও ধরনের উৎসাহই প্রকাশ করে না। এমনিভাবেই তা এক দিন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করায় রূপান্তরিত হয় ।
আর কিছু স্বামী তো এমনও রয়েছে যে, সে তার স্ত্রীর একান্ত গোলাম। তার স্ত্রী চাইলেই সে তার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনটুকু রক্ষা করবে। নতুবা নয়। এমনকি সে তার স্ত্রীর একান্ত আনুগত্যের কারণে নিজ মাতা-পিতারও অবাধ্য হয়ে যায়।
যখন আমরা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার ভয়াবহতা ও তার কারণসমূহ জানতে পারলাম তখন একজন বুদ্ধিমান মু’মিন হিসেবে আমাদের একান্ত কর্তব্য হবে, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন না হওয়ার ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন হয় এমন কারণসমূহ থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা। এরই পাশাপাশি আমাদেরকে আরও জানতে হবে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার গুরুত্ব এবং তা রক্ষা করার নিয়মকানুন ও মাধ্যমসমূহ ৷
সংকলক:
মুফতি রাশেদুল ইসলাম
ইফতা: জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম ঢাকা,মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স
মুহাদ্দিস: মিরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও জামিয়া মুহাম্মাদীয়া আরাবিয়া মাদরাসা কমপ্লেক্স