বেঁচে গেলো ইমাম আ‘মাশের স্ত্রী
প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ইমাম আ‘মাশ রহ. স্বভাবগতভাবে রুক্ষ মেযাজের লোক ছিলেন। বদ মেযাজের কারণে বিভিন্ন সময় তার বিবিধ সমস্যায়ও পড়েছেন। একদা তিনি তার স্ত্রীর সাথে রাগ করে এই মর্মে কসম খেলেন যে, যদি তুমি আমাকে আটা শেষ হওয়ার সংবাদ দাও, কিংবা এ ব্যাপারে কিছু লিখে পাঠাও, অথবা কারো মাধ্যমে কিছু জানাও, তাহলে তুমি তালাক!
ইমাম আ‘মাশ রহ. এর স্ত্রী এ কসমের পর মহাবিপাকে পড়ে গেলেন। কিভাবে রক্ষা পাওয়া যায় এর থেকে ? নিষ্কৃতির পথ খুঁজছিলেন। আটা ছাড়া তো সংসার চলে না। আবার কিছু বললেও বিপদ; একেবারে তালাক ৷ উপায়ন্তর না দেখে স্ত্রী বড় বড় আলেমদের শরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু কারো নিকট কোনো সমাধান পাওয়া গেলো না ।
তার এক নিকটজন পরামর্শ দিলো, তুমি বিভিন্নজনের নিকট ঘোরাঘুরি না করে সোজা ইমাম আবু হানীফা রহ. এর নিকট যাও। তিনিই এর সঠিক সমাধান দিতে পারবেন।
মহিলা তা-ই করলো। ইমাম আবু হানীফার রহ. নিকট এসে ঘটনা খুলে বললো। ইমাম আযম ঘটনা শুনে বললেন, চিন্তার কোনো কারণ নেই, এর সমাধান একদম সহজ।
ইমাম আযম রহ. ইমাম আ‘মাশ রহ. এর স্ত্রীকে বললেন, রাতে যখন ইমাম আ‘মাশ ঘুমিয়ে যাবেন, তখন চুপিসারে তার চাদর, লুঙ্গি কিংবা জামার সাথে আটার থলেটি বেঁধে রাখবেন। নিজের কাপড়ের সাথে আটার থলে ঝুলতে দেখলেই আ‘মাশ বুঝতে পারবে, আটা শেষ হয়ে গিয়েছে। আর এভাবেই তোমাদের দাম্পত্যজীবন ঠিক থাকবে এবং আটারও ব্যবস্থা হবে।
ইমাম আ‘মাশ রহ. ঘুম থেকে উঠে কাপড় টান দিতেই দেখতে পেলেন কাপড়ের সাথে আটার খালি থলে লেগে আছে। এতে তিনি বুঝতে পারলেন আটা শেষ। তিনি সাথে সাথে এটাও বুঝে নিলেন, এ বুদ্ধি তাকে কে শেখাতে পারেন ।
তাই তিনি বলতে লাগলেন, আল্লাহর কসম, এটা আবু হানীফার কৌশল। সে জীবিত থাকা অবস্থায় কিভাবে আমরা সফল হবো? এ লোকটি তো স্ত্রীদের কাছে আমাদের স্বল্পবুদ্ধি ও অপারগতা প্রকাশ করে আমাদেরকে লজ্জায় ফেলে দিচ্ছে।
তথ্যসূত্র:
বই : ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. এর ঈমানদীপ্ত গল্প
লেখক : মুফতি মাহফুজ মোসলেহ