দাজ্জাল সম্বন্ধে আকীদা
দাজ্জাল শব্দটি আরবী دجل থেকে উদ্ভুত, যার অর্থ ধোঁকা ও প্রতারণা। অতএব দাজ্জাল শব্দের অর্থ প্রতারক, ধোঁকাবাজ। আল্লাহ তা’আলা শেষ যামানায় লোকদের ঈমান পরীক্ষা করার জন্য একজন লোককে প্রচুর ক্ষমতা প্রদান করবেন। বিভিন্ন সহীহ হাদীছের বর্ণনা অনুযায়ী তার এক চোখ কানা আর এক চোখ টেরা থাকবে, চুল কোঁকড়া ও লাল বর্ণের হবে। সে খাটো দেহের অধিকারী হবে। তার কপালে লেখা থাকবে ك ف ر অর্থাৎ, কাফের। শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে সকল মু’মিনই সে লেখা পড়তে পারবে।
সে ইয়াহুদী বংশোদ্ভুত হবে। ইরাক ও শাম দেশের মাঝখানে তার আবির্ভাব ঘটবে। এক বর্ণনা অনুযায়ী খোরাসানে তার আবির্ভাব হবে। প্রথমে সে নবুওয়াতের দাবী করবে। তারপর ইস্পাহানে যাবে, সেখানে ৭০ হাজার ইয়াহূদী তার অনুগামী হবে, তখন খোদায়ী দাবী করবে। লোকেরা চাইলে সে বৃষ্টি বর্ষণ করে দেখাবে, মৃতকে পর্যন্ত জীবিত করে দেখাবে। কৃত্রিম বেহেশত দোযখ তার সঙ্গে থাকবে, কিন্ত প্রকৃতপক্ষে তার বেহেশ্ত হবে দোযখ আর তার দোযখ হবে বেহেস্ত। সে আরও অনেক অলৌকিক কান্ড দেখাতে পারবে, যা দেখে কাঁচা ঈমানের লোকেরা তার দলভুক্ত হয়ে জাহান্নামী হয়ে যাবে। এক ভীষণ ফেত্না ও এক ভীষণ পরীক্ষা হবে সেটা। দাজ্জাল একটা গাধার উপর সওয়ার হয়ে ঝড়ের বেগে সমগ্র ভূখন্ডে বিচরণ করবে এবং চল্লিশ দিনের মধ্যে মক্কা, মদীনা ও বায়তুল মুকাদ্দাস ব্যতীত (এসব এলাকায় সে প্রবেশ করতে পারবে না, ফেরেশতাগণ এসব এলাকার পাহারায় থাকবে।) সব স্থানে ফেনা বিস্তার করবে।
হযরত মাহ্দীর সময় তার আবির্ভাব হবে। সে সময় হযরত ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন এবং তাঁরই হাতে দাজ্জাল নিহত হবে। আবির্ভাবের পর দাজ্জাল সর্বমোট ৪০ দিন দুনিয়াতে থাকবে।
তথ্য সূত্রঃ
কিতাবঃ ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত মতবাদ
লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দিন শায়খুল হাদিস, জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, তাঁতিবাজার, ঢাকা – ১১০০। মুহাদ্দিছ, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, ৩৩২, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ঢাকা ১২৩৬