ইশরাক নামাযের বিবরণ
হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি; মানুষের শরীরে তিনশত ষাটটি জোড়া রয়েছে। কাজেই তার প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা আদায় করা আবশ্যক। সাহাবায়ে কেরামগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সা.! কার এ সামর্থ আছে? তিনি বললেন, মাসজিদে থুথু দেখলে তা মুছে ফেলা একটি সদকা, পথের কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়াও একটি সদকা।যদি তিনশ ষাটটি সদকা করার কোন কিছু না থাকে (অর্থাৎ তুমি তা করতে সক্ষম না হও) তাহলে দুই রাকাত ইশরাকের নামায আদায় কর, তোমার পক্ষ থেকে যথেষ্ট হয়ে যাবে। (মেশকাত : পৃষ্ঠা- ১১৬)
হাদীসে পাকে ইশরাকের গুরুত্ব
১. হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ফজরের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে যিকির করতে থাকে; এরপর দু’রাকাত নামায আদায় করে, তার আমল নামায় এক হজ্জ ও এক উমরার সাওয়াব লিখে দেয়া হয়। (তিরমিযী)
২. রাসূল সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইশরাকের নামায আদায় করবে এবং ফজর ও ইশরাকের মাঝে ভালো কথা ছাড়া অন্য কথা বলবে না, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার চেয়েও বেশী হয়। (আবূ দাউদ)
৩. রাসূল সা. বলেন, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, হে আদম সন্তান! তুমি দিনের প্রথমাংশে আমার জন্য চার রাকাত নামায আদায় করো, আমি তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবো। (আবূ দাউদ)
ইশরাক নামাযের ওয়াক্ত
সূর্য উদয়ের আনুমানিক ১০/১২ মিনিট পর থেকে ইশরাকের সময় শুরু হয় এবং সূর্য মধ্য আকাশে উঠার পূর্ব পর্যন্ত ইশরাকের সময় থাকে। (যদিও সাধারণ মানুষ জানে যে, ইশরাকের সময় হলো সূর্যোদয়ের ২৩ মিনিট পরে, এটা জরুরী নয়)
আরবী নিয়ত : ইশরাক নামাযের নিয়ত
نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكَعَتَى صَلوةَ الإِشْرَاقِ سُنَّةَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَوَجِهَا إِلى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرْ
বাংলা নিয়ত : আমি কিবলামুখী হয়ে ইশরাকের দুই রাকাত সুন্নাত নামায আদায় করছি; আল্লাহু আকবার ।
ইশরাকের রাকাত সংখ্যা
ইশরাকের নামায দু’রাকাত অথবা দু’রাকাত করে চার রাকাত পড়া যায়। ইশরাকের নামাযে কোন সূরা বা কেরাত দিয়ে পড়া যায়। ফজর নামাযের পর যিকির- আযকার, দোয়া- দরূদ, কুরআন তিলাওয়াতে মশগুল থেকে, সময় হলে ইশরাকের নামায আদায় করলে সওয়াব বেশী হয়। তবে নামাযের স্থান থেকে উঠে গেলে বা দুনিয়াবী কাজে লিপ্ত হওয়ার পর ইশরাকের নামায আদায় করলেও সাওয়াব হয়।
তথ্যসূত্রঃ
বই: নামায পড়ি বেহেশতের পথে চলি
লিখক: মাওলানা মুমিনুল হক জাদিদ
মুহতামিম: ফেনী জামিয়া ইসলামিয়া