জাহান্নামের শাস্তি হতে মুক্তিলাভের ব্যর্থ চেষ্টা
আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামীদের জন্য কঠিন থেকে কঠিনতর বিভিন্ন প্রকার অত্যন্ত ভয়ংকর শাস্তি নির্ধারণ করেছেন, যা থেকে জাহান্নামীরা জীবনের সবকিছুর বিনিময়ে মুক্তিলাভের চেষ্টা করবে। কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে না ।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوا وَمَاتُوْا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِمْ مِلْءُ الْأَرْضِ ذَهَبًا وَلَوِ افْتَدَى بِهِ أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ وَمَا لَهُمْ مِنْ نَاصِرِينَ
‘যারা কুফরী করে এবং কাফিররূপে যাদের মৃত্যু ঘটে তাদের কারো নিকট হতে পৃথিবী পূর্ণ স্বর্ণ বিনিময়-স্বরূপ প্রদান করলেও তা কখনও কবুল করা হবে না। এরাই তারা যাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে, এদের কোন সাহায্যকারী নাই।(সূরা আলে ইমরান ৩/১১)
তিনি অন্যত্র বলেন, إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوا لَوْ أَنَّ لَهُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيْعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُوا بِهِ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ –
‘যারা কুফরী করেছে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি হতে মুক্তি লাভের জন্য বিনিময়- স্বরূপ দুনিয়ায় যা কিছু আছে তাদের তার সমস্তই থাকে এবং তার সহিত সমপরিমাণ আরও থাকে তবুও তাদের নিকট হতে তা গৃহীত হবে না এবং তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে’ (সূরা মায়িদা ৫/৩৬)।
হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُؤْتَى بِأَنْعَمِ أَهْلِ الدُّنْيَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُصْبَغُ فِي النَّارِ صَبْغَةً ثُمَّ يُقَالُ يَا ابْنَ آدَمَ هَلْ رَأَيْتَ خَيْرًا قَطُّ هَلْ مَرَّ بِكَ نَعِيمٌ قَطُّ فَيَقُولُ لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ.
আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য হতে দুনিয়ার সর্বাধিক মালদার- সম্পদশালী ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে জাহান্নামের আগুনে ঢুকিয়ে তোলা হবে। অতঃপর তাকে বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও আরাম-আয়েশ দেখেছ? পূর্বে কখনও তোমার নে‘আমতের সুখ অর্জিত হয়েছিল সে বলবে, না। আল্লাহর কসম (হে পরওয়ারদেগার আমি কখনো সুখ ভোগ করিনি) মুসলিম হা/২৮০৭; মিশকাত হা/৫৬৬৯, ‘জাহান্নাম ও তার অধিবাসিদের বর্ণনা’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ (এমদাদিয়া) ১০/১৬১ পৃঃ।
অন্য হাদীছে এসেছে,
عن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَقُوْلُ الله تَعَالَى لِأَهْوَنِ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَوْ أَنَّ لَكَ مَا فِي الْأَرْضِ مِنْ شَيْءٍ أَكُنْتَ تَفْتَدِي بِهِ؟ فَيَقُولُ نَعَمْ، فَيَقُولُ أَرَدْتُ مِنْكَ أَهْوَنَ مِنْ هَذَا وَأَنْتَ فِي صُلْبِ آدَمَ أَنْ لَا تُشْرِكَ بِي شَيْئًا فَأَبَيْتَ إِلَّا أَنْ تُشْرِكَ بِي –
আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন সর্বাপেক্ষা কম ও সহজতর শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তিকে বলবেন, যদি গোটা পৃথিবী পরিমাণ সম্পদ তোমার থাকত, তাহলে তুমি কি সমূদয়ের বিনিময়ে এই আযাব হতে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করতে? সে বলবে, হাঁ, তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, আদমের ঔরসে থাকাকালে এর চাইতেও সহজতর বিষয়ের আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম যে, আমার সহিত কাউকে শরীক কর না, কিন্তু তুমি তা অমান্য করেছ এবং আমার সহিত শরীক করেছ । (বুখারী হা/৬৫৫৭, ‘জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ৬/৬৫ পৃঃ; মুসলিম হা/২৮০৫; মিশকাত হা/৫৬৭০।)
তথ্যসূত্র:
জাহান্নামের ভয়াভহ আযাব
শরীফুল ইসলাম বিন জয়নাল আবেদীন