মৃত ব্যক্তির যাকাত সম্পর্কিত ৫ টি মাসআলা।
যাকাত আদায় না করে মারা গেলে তার বিধান। ০১.মাসআলা : জনৈক নিসাবের মালিকের উপর যাকাত আদায় করা ওয়াজিব ছিল । যাকাত আদায় না করে একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চা রেখে মারা যায়, যদি উক্ত ব্যক্তি অসিয়ত না করে মারা যায়, তার পরিত্যক্ত যৌথ সম্পদ থেকে যাকাত আদায় করা যাবে না । কেননা উত্তরাধিকারীদের মধ্যে নাবালেগ বাচ্চাও রয়েছে। অসিয়ত ব্যতীত তার (নাবালেগ) সম্পদে হস্তক্ষেপ করা যাবে না । (রাদ্দুল মুহতার : ২/৯৮)
মৃত স্বামীর যাকাতের বিধান। ০২.মাসআলা : মৃত স্বামীর যাকাত বিধবা স্ত্রীর উপর ফরজ নয়; বরং তা মৃত স্বামীর উপরই ফরজ। অনাদায়ে সে-ই গুনাহগার হবে। ওয়ারিশরা তার পক্ষ থেকে আদায় করে দেওয়া উত্তম। (ফিকহুয যাকাত : ২/৩৮০)
যাকাত ওয়াজিব হওয়ার পর মারা গেলে ০৩.মাসআলা : যাকাত ওয়াজিব হওয়ার পর কেউ মারা গেলে তার সম্পদ থেকে যাকাত নেয়া যাবে না। হ্যাঁ! যদি সে অসিয়ত করে যায়, তবে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ থেকে যাকাত দিতে হবে। এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তি যাকাতের জন্য যথেষ্ট না হলে এবং ওয়ারিশরাও এক তৃতীয়াংশের বেশী দিতে সম্মত না হলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা যতটুকু প্রদান করে, ততটুকুই গ্রহণ করা হবে।(ইলমুল ফিকহ : ৪/৩১)
যাকাতের নিয়তে টাকা পৃথক করে মারা গেলে। ০৪.মাসআলা : যাকাতের নিয়তে টাকা পৃথক করে কিংবা উকীলকে দেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করলে, অথবা মৃত ব্যক্তি অসিয়ত করে গেলে এবং পরিত্যক্ত সম্পদের এক তৃতীয়াংশের অধিক না হলে উক্ত পৃথক কৃত টাকা যাকাত হিসেবে দেয়া যাবে । আর অসিয়ত না করে গেলে পরিত্যক্ত সম্পদের সাথে যোগ হয়ে ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন হয়ে যাবে ।
যাকাত আদায়ের উকীল (যাকে মৃত ব্যক্তি নিজের যাকাত আদায়ের প্রতিনিধি বানিয়ে যাকাত আদায়ের ক্ষমতা দিয়েছে) ফকীরের স্থলাভিষিক্ত নয়। এমনিভাবে মুআক্কিলের মৃত্যুতে সেও পদচ্যুত হয়ে যাবে। তাই উক্ত টাকা যাকাত খাতে ব্যয় করার অধিকার তার অবশিষ্ট থাকবে না। (আহসানুল ফাতাওয়া: ৪/২৬৫)
মৃতের সম্পদে যাকাতের বিধান ০৫.মাসআলা : মৃত ব্যক্তির সম্পদ থেকে যাকাত আদায় করা যাবে না।কেননা যাকাতের জন্য নিয়ত শর্ত অথচ এক্ষেত্রে তা পাওয়া যায় না। অবশ্য মৃত ব্যক্তি যাকাত আদায়ের জন্য অসিয়ত করে গেলে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ থেকে যাকাত আদায় করতে হবে। তবে উত্তরাধিকারীরা পূর্ণ সম্পত্তি থেকে দিতে চাইলে তাও গ্রহণ করা যাবে। (আলমগীরী : ৪/৪৬)
তথ্যসূত্রঃ
যাকাত আদায় করি, দোযখ থেকে বাচি।
লেখকঃমাওলানা মুমিনুল হক জাদীদ, ফেনী