ইসলাম

কিয়ামতের ছোট আলামত ১,নবী (সা:)এর আগমণ ও মৃত্যুবরণ

কিয়ামত ও পরকালে বিশ্বাস ঈমানের অন্যতম অপরিহার্য শর্ত। আর কিয়ামতের আলামতের প্রতি ঈমান আনা আখিরাতের ওপর ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোরআন-হাদিসে কিয়ামতের ছোট-বড় বহু আলামত বর্ণিত হয়েছে। কিছু আলামত প্রকাশ হয়ে গেছে।

আর কিছু আলামত এখনো স্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়নি। মহানবী (সা.)-এর জীবন-মৃত্যু কিয়ামতের প্রকাশ হয়ে যাওয়া অন্যতম নিদর্শন।

কিয়ামতের প্রথম আলামত নবী করিম (সা.)-এর আগমন। কারণ তিনি শেষ যুগের নবী। আর তিনি চলে এসেছেন। তাঁর পরে ও কিয়ামতের আগে প্রেরিত নতুন কোনো নবী নেই।

হাদিসে এসেছে, সাহল ইবনু সাদ-সাঈদি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি প্রেরিত হয়েছি এমন সময় যে আমি ও কিয়ামত এই দুটি আঙুলের মতো কাছাকাছি। এটা বলে তিনি শাহাদাত ও মধ্যমা দুটি আঙুল মিলিয়ে দেখালেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৬, ৬৫০৪; মুসলিম, হাদিস : ৮৬৭)

মহানবী (সা.)-এর মৃত্যু : শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মৃত্যুবরণও কিয়ামতের একটি আলামত।

হাদিসে এসেছে, আউফ ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শন গণনা করে রাখো। আমার মৃত্যু, অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়, অতঃপর তোমাদের মধ্যে মহামারি ঘটবে বকরির পালের মহামারির মতো, সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে এক শ দিনার দেওয়ার পরও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। অতঃপর এমন এক ফিতনা আসবে, যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে। অতঃপর যুদ্ধবিরতির চুক্তি, যা তোমাদের ও বানি আসফার বা রোমকদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অতঃপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং ৮০টি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে; প্রতিটি পতাকার নিচে থাকবে ১২ হাজার সৈন্য। (বুখারি, হাদিস : ৩১৭৬)

মহানবী (সা.) প্রথম হস্তীবর্ষের ৯ রবিউল আউয়াল, মতান্তরে ১২ রবিউল আউয়াল (প্রসিদ্ধ মত অনুসারে) সোমবার সুবহে সাদিকের পর মক্কায় নিজ পিতৃগৃহে জন্মগ্রহণ করেন। আর ১১ হিজরি সনের ১ রবিউল আউয়াল সোমবার সকাল ১০টার দিকে মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন। রাসুল (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যু দুটিই সোমবার হয়েছিল।

সুলায়মান মানসুরপুরি (রহ.)-এর হিসাব মতে, সৌরবর্ষ হিসাবে রাসুল (সা.)-এর জন্ম ৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ২২ এপ্রিল সোমবার এবং মৃত্যু ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুন সোমবার।

চান্দ্রবর্ষ হিসাবে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর ৪ দিন এবং সৌরবর্ষ হিসাবে ৬১ বছর ১ মাস ১৪ দিন। তাঁর জন্ম হয়েছিল আবরাহা কর্তৃক কাবা আক্রমণের ৫০ দিন পর। (ইবনু হিশাম ১/১৫৮-টীকা ৪)

এটা ছিল ইবরাহিম (আ.) থেকে ২৫৮৫ বছর ৭ মাস ২০ দিন পর এবং নূহ (আ.)-এর প্লাবনের ৩৬৭৫ বছর পরের ঘটনা। রাসুল (সা.) দুনিয়াতে বেঁচে ছিলেন মোট ২২,৩৩০ দিন ৬ ঘণ্টা। তন্মধ্যে তাঁর নবুয়তকাল ছিল ৮১৫৬ দিন। (সালমান মানসুরপুরি, রহমাতুল্লিল আলামিন (দিল্লি : ১ম সংস্করণ ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ) ২/১৬, ৩৬৮; ১/৪০, ২৫১)

সঠিক হিসাব মহান আল্লাহ জানেন।

তথ্যসূত্র:

কিয়ামতের প্রকাশিত একটি নিদর্শন

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *