তারাবিহ নামায
তারাবীর সংজ্ঞা: এ’ ব্যাপারে আমরা দু’জনের আলোচনা উল্লেখ করতে পারি। (১) আল্লামা মাজদুদ্দীন রহ. এর বক্তব্য (২) হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. (মৃঃ৮৫২হি.) এর বক্তব্য।
قال المجد فى (القاموس) ترويحة شهر رمضان سميت بها لاستراحة بعد كل أربع ركعات، وقال ابن نجيم فى (البحر) التراويح جمع ترويحة وهي في الأصل مصدر بمعنى الاستراحة سميت بها الأربع ركعات المخصوصة لاستلزامها استراحة بعدها كما هو السنة فيها . أوجز المسالك
অর্থাৎ: আল্লামা মাজদুদ্দীন রহ. তাঁর অভিধান গ্রন্থে বলেন, রমজান মাসের তারাবীnকে এজন্য তারাবীহ বলে নাম করণ করা হয়েছে যে, তারাবীর প্রত্যেক চার রাকাত পর পর এস্তেরাহাত অর্থাৎ আরাম গ্রহণ করা হয়।
আল্লামা ইবনে নুজাইম রহ.বাহরুর রায়েক গ্রন্থে বলেন,তারাবীহ শব্দটি তারবীহাহ (ترويحة) এর বহুবচন, এটির মূল A_© হলো, আরাম গ্রহণ করা,বিশেষ চার রাকাত নামাজকে তারাবীহ বলে নাম করণ করা হয়েছে,কারণ প্রতি চার রাকাত পর পর আরাম Kiv nq, ‡hgb Pvi ivKvZ ci ci emvUv mybœvZ। (আওজাযুল মাসালিক ২/৫১৪)
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন
والتراويح جمع ترويحة وهي المرة الواحدة من الراحة كتسليمة من السلام سميت الصلاة في الجماعة في ليالي رمضان التراويح لأنهم أول ما اجتمعوا عليهاكانوا يستريحون بين كل تسليمتين فتح الباري۲۹٥/٤
অর্থাৎ, تراويح শব্দটি ترويحة এর বহুবচন,যার অর্থ একবার আরাম করা, যেমন تسليمة এর অর্থ একবার সালাম করা।
শরীয়তের পরিভাষায় তারাবীহ বলা হয় ঐ নামাযকে যা রমজান মাসের রাতে জামাতবদ্ধ হয়ে আদায় করা হয়, তারাবীnকে তারাবীহ বলে নাম করণ করার কারণ হলো, সর্বপ্রথম যারা জামাতবদ্ধ তারাবীর নামায আদায় করেছিলেন তাঁরা প্রতি দুসালামের পর পর আরাম করতেন। (ফাতহুল বারী ৪/২৯৫)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তারাবীর বর্ণনা-
ইমাম মুসলিম রহ, (মৃত ১৬১ হি.) বলেন
حدثنا يحيى بن يحيى قال قرأت على مالك عن ابن شهاب، عن عروة، عن عائشة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى في المسجد ذات ليلة، عن فصلى بصلاته ،ناس ثم صلى من القابلة فكثر الناس، ثم اجتمعوا من الثالثة، أو الرابعة فلم يخرج إليهم رسول الله صلى الله عليه وسلم فلما أصبح قال: «قد رأيت الذي صنعتم، فلم يمنعني من الخروج إلا أني خشيت أن تفرض عليكم»، قال: وذلك في رمضان – صحيح البخاري ١/ ٤٧٩ (١٨٧٣) ط دار التقوى صحيح مسلم ۱ ۲۵۹ واللفظ لمسلم
অর্থাৎ, হযরত আয়েশা রাযি. (মৃঃ৫৭হি.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের এক রাতে মসজিদে তারাবীহ পড়লেন, সাহাবায়ে কেরাম তাঁর নামাযে শামিল হলেন। দ্বিতীয় রাতে যখন নামায পড়লেন তখন মুক্তাদিগনের সংখ্যা আরো বেড়ে গেল। এর পর তৃতীয় বা PZy_© রাতে তাঁরা জামায়েত হলেন, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের জন্য তাশরীফ আনলেন না। সকালে তিনি সকলকে সম্বোধন করে বললেন, আমি তোমাদের আগ্রহ ও উপস্থিতি লক্ষ করেছি, কিন্তু এ’ নামায তোমাদের উপর ফরজ হয়ে যাওয়ার আশংকায় আমি তোমাদের কাছে আসিনি। (সহীহ বুখারী ১/৪৭৯ (১৮৭৩) সহীহ মুসলিম ১/২৫৯)
হাদীসটি ভিন্ন সনদে ভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়-
ذكر مالك حديثا مسندا عن ابن شهاب عن عروة عن عائشة عنها أن رسول الله صلی الله عليه وسلم صلى في المسجد ذات يوم فصلي بصلاته ناس –
الاستذكار ٦٢/٢ ط دار الكتب العلمية
অর্থাৎ, ইমাম মালেক রহ. (১৭৯হি.) হযরত আয়েশা রাযি. (৫৭হি.) থেকে একটি হাদীসে মুসনাদ বর্ণনা করেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারাবীর নামায আদায় করেন, সাহাবায়ে কেরাম উক্ত নামাযে শরীক হলেন। (ইস্তিযকার, ২/৬২)
হাদীসটি সনদ সূত্রে mহীহ বরং মুসনাদ, সকলেই বুখারী, মুসলিমের রাবী)
এই হাদীস দু’টি দ্বারা বুঝা গেল যে, তারাবীর নামায রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত। একই সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামাযে সাহাবায়ে কেরামের জামাতবদ্ধ হওয়ার দ্বারা তারাবীর জামাতের প্রমানিক্যতাও সাব্যস্ত হয়।
রাসুলুল্লাহ সা. কর্তৃক তারাবীহ নামাযের প্রতি উৎসাহপ্রদান
حدثنا عبد بن حميد أخبرنا عبد الرزاق أخبرنا معمر عن الزهري عن أبي سلمة عن أبي هريرة قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يرغب في قيام رمضان من غير أن يأمرهم فيه بعزيمة، فيقول: «من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه» مسند أحمد (۷۷۸۷)
অর্থাৎ, হযরত আবু হুরাইরা রাযি. (৫৯হি.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারাবীহ নামাযের প্রতি উৎসাহিত করতেন, তবে তিনি তা অপরিহার্য ধারনা করেননি। তিনি বলতেন, যে ব্যক্তি রমজানের রাতে ইমানের সাথে সাওয়াবের আশায় তারাবীর নামায পড়ে তাঁর পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।(মুসনাদে আহমদ,৭৭৮৭,সুনানে আবু দাউদ,১৩৭১)
হাদীসের সনদটি mহীহ, আব্দুল হামীদ ব্যতিত সকলেই বুখারী মুসলিমের রাবী।
এই হাদীসে দুইটি বিষয় পরিস্কার হলো (১) তারাবীহ এবং তাহাজ্জুদ এক নয়, কারণ হাদীসে শুধু মাত্র রমজানের কিয়ামের ফwRলাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। (২) তারাবীহ সুন্নাত সাব্যস্ত হয়। ফরজ ওয়াজিব নয়। কারণ তিনি ফজিলাতের প্রতি উৎসাহিত করেছেন, নিজে পড়েছেন এবং সাহাবাদের পড়িয়েছেন কিন্তু ফরজ বা ওয়াজিব সাব্যস্ত করেননি।
হাফেজ ইবনে আব্দুল বার রহ. (মৃঃ ৪৬৩হি.) বলেন-
أن قيام رمضان سنة من النبي صلى الله عليه وسلّم : مندوب إليها مرغب فيها ولم يسن منها عمر إلا ماكان رسول الله صلى الله عليه وسلم – يحبه ويرضاه، وما لم يمنعه من المواظبة عليه إلا أن يفرض على أمته وكان بالمؤمنين رؤوفا رحيما صلى الله عليه وسلم – الاستذكار
অর্থাৎ, রমজানের তারাবীহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাত, ঐ ব্যাপারে তিনি আগ্রহ ও উৎসাহ প্রদান করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে জিনিস পছন্দ করতেন এবং তাতে খুশি হতেন সে জিনিসকেই ওমর (রাযি.) সুন্নাত সাব্যস্ত করতেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা নিয়মিত করা থেকে বিরত থেকেছেন যেন তা উম্মতের উপর ফরজ না হয়ে যায়। তিনি উম্মতের উপর অত্যন্ত স্নেহশীল ও অতিমেহেরবান ছিলেন। (ইস্তিজকার, ২/৬2)
তিনি আরো বলেন-
وَما يُؤَيِّدُ ذَلِكَ قَوْلُ عَائِشَةَ إِنْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَدَعُ الْعَمَلَ وَهُوَ يُحِبُّ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ لِئَلَّا يُفْرَضَ عَلَى النَّاسِ – الاستذكار
উল্লেখিত বক্তব্য আশেয়া রাযি. (মৃঃ৫৭হি.) এর উক্তি দ্বারা শক্তিশালী হয় যে, রাসূলুল্লাহ সা.কোন আমল করা পছন্দ করতেন, কিন্তু উম্মতের উপর যেন ফরজ হয়ে না যায় তাই আমল ছেড়েছেন। (ইস্তিজকার, ২/৬3)
রাসূলুল্লাহ সা. থেকে বিশ রাকাতের বর্ণনা-
শায়খুল হাদীস যাকারীয়া রহ. (মৃঃ১৪০২) বলেন-
وفى تقرير حسين علي البنجابي : صلى – صلى الله عليه وسلم – بهم ثلث ليالى ولم يصل معهم مخافة الوجوب، فيسنَّ فى كل رمضان بالجماعة لارتفاع المانع مع اتفاق الصحابة فى زمن عمر رضى الله عنه وبعده، ويصلّون عشرين ركعة لأن روى عن جابر رضی الله عنه – أنه صلى الله عليه وسلم صلى بهم في هذه الليا لي عشرين ركعة رواه ابن أبي شيبة في مصنفه وهذا وان كان إسناده ضعيفًا لكن قوي بإجماع الصحابة – لامع الدوري ١/ ٢٨٤ ناظم المكتبة
অর্থাৎ, হুছাইন আলী পাঞ্জাবী রহ. এর প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের তিন রাত নামায পড়িয়েছেন তারপর ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাদের সাথে আর পড়েননি। সুতরাং সমস্ত বাuধা দূর হয়ে যাওয়ায় ওমর রাযি.এর যামানায় সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমতে প্রতি রমজানে জামাতের সাথে বিশ রাকাত তারাবীহ নামায পড়া সুন্নাত সাব্যস্ত হয়েছে। কেননা, জাবের রাযি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ সমস্ত রাতে তাদের বিশ রাকাত তারাবীহ পড়িয়েছেন, যা ইবনে আবী শায়বা তাঁর মুছান্নাফে বর্ণনা করেছেন। তার সনদ যদি দুর্বলও হয়, সাহাবায়ে কেরামের এজমা দ্বারা তা শক্তিশালী হয়ে যায়। (লামিউদ দুরারী,১/২৮৪)
ইমাম আবু বকর ইবনে আবী শায়বা রহ. (মৃঃ২৩৫) বলেন-
حدثنا يزيد بن هارون قال أنا إبراهيم بن عثمان، عن الحكم، عن مقسم، عن ابن عباس أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلي في رمضان عشرين ركعة والوتر -مصنف ابن أبي شيبة ۵ / ۲۲۵ (٧٧٧٤)، نیل الاوطار
অর্থাৎ,হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. (মৃঃ ৬৮) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানে বিশ রাকাত তারাবীহ ও বিতর পড়তেন। (মুছান্নাফে ই. আ. শায়বা, ৫/২২৫ (হাদীস নং ৭৭৭৪) (শায়েখ আওয়ামাহ) মাআরিফুস সুনান, ৫/৫৪৭, মা: আশরাফিয়্যা, আউজাযুল মাসালিক ২/৫১৬)
উক্ত হাদীস ভিন্ন সনদে ভিন্ন শব্দে বর্ণিত হয়েছে
عن ابن عباس قال كان النبي صلى الله عليه وسلم يصلي في شهر رمضان في غير جماعة بعشرين ركعة والوتر – السنن الكبرى للبيهقي
অর্থাৎ, ইবনে আব্বাস রাযি. (মৃ৬৮) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে জামাত করা ছাড়াই বিশ রাকাত তারাবীর নামায ও বিতর পড়তেন। (সুনানে কুবরা, বায়হাকী, ৪/৬০ (হাদীস নং ৪৭২০), আদিল্লায়ে হানাফিয়্যা, পৃ: ২২৭, ফাতহুল মুলহিম ৪/১৭৩)
لاشك في أن تحديد التراويح في عشرين ركعة لم يثبت مرفوعا عن النبي صلی الله عليه وسلم – بطريق صحيح على أصول المحدثين، وماورد فيه من رواية ابن عباس، متكلم فيها على أصولهم . لكن مع هذا : لا يمكن الانكار عن ثبوته بفعل عمررضی الله عنه -وسكوت الصحابه على ذلك، وإجماعهم على قبوله بمنزلة النص على أن له أصلا عندهم – أوجز المسالك
অর্থাৎ, এ কথায় কোন সন্দেহ নেই যে, তারাবীর সামষ্টিক বিশ রাকাত হওয়া মুহাদ্দিসগণের মূলনীতি অনুযায়ী mহীহ সনদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত সাব্যস্ত নেই। আর ইবনে আব্বাস রাযি. কর্তৃক যা বর্ণিত আছে তাদের মূলনীতি অনুযায়ী তা আপত্তিজনক।এতদা সত্ত্বেও এ’ ব্যাপারে ওমর রাযি. এর কর্ম বর্ণিত এবং সাহাবায়ে কেরামের চুপ থেকে মৌনসমর্থনের কারণে বিশ রাকাত তারাবীহ অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বিশ রাকাতের উপর সাহাবায়ে কেরামের এজমা হওয়া, তা নছ সমপর্যায়ের। কারণ তাদের কাছে তার ভিত্তি আছে। (আউজাযুল মাসালিক ২/৫৩৪)
فان المعروف أن رواية عشرين ركعة المعروفة عن ابن عباس رضى الله عنه اخرجها عبد بن حميد في مسنده والبغوي في معجمه والطبراني في الكبير والبيهقي في سننه كلهم من طريق أبى شيبة ابراهيم بن عثمان وهو ضعيف كما في الأوجز وما قال فى التقرير من اتفاق الصحابة فلا ضير فى ذلك فإن الذين حكوا فيه اتفاقهم لم يعبأوا . – لامع الدرري
অর্থাৎ, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. (মৃঃ৬৮) কর্তৃক প্রসিদ্ধ বর্ণনা যা তিনি মারফু সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে রেওয়াতে করেছেন উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন, ইমাম আব্দ ইবনে হুমাইদ রহ. তাঁর মুসনাদে, ইমাম বগবী রহ. তাঁর মু’জামে, ইমাম ত্বাবরানী রহ. তাঁর মু’জামে কাবীরে, ইমাম বায়হাকী রহ. তাঁর সুনানে। প্রত্যেক রেওয়াতে আবু শায়বা-ইব্রাহীম ইবনে উসমানের মাধ্যমে, আর তাকে দুর্বল সাব্যস্ত করা হয়। শায়খুল হাদীস রহ. mহীহ বুখারীর প্রতিবেদনে বলেন, বিশ রাকাতের অধ্যায়ে mvহাবায়ে কেরামের ঐক্য হওয়ায় উক্ত রাবী, দুর্বল হওয়া কোন সমস্যা নয়। কেননা, যে সমস্ত মুহাদ্দিসগণ উক্ত হাদীস উল্লেখ করেছেন তাদের কেউ উক্ত দুর্বলতার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেন নি৷ (লামিউদ দুরারী ১/২৮৪)
হযরত ওমর রাযি. কর্তৃক বিশ রাকাত তারাবীহ নির্ধারণ- ওমর রাযি. এর হুকুম-
ذكر على المتقي في( كنز العمال) وعزاه الى ابن منيع، عن ابي ابن كعب ان عمر امره ان يصلي في رمضان فقال ان الناس يصومون النهار ولا يحسنون ان يقراوه فلو قرات عليهم بالليل فقال يا امير المؤمنين هذا شيء لم يكن فقال قد علمت ولكنه حسن فصلى بهم عشرين ركعة، اوجز المسالك
অর্থাৎ, আলাউদ্দীন আলী মুত্তাক্বী রহ. (মৃঃ৯৭৫) কানযুল উম্মাল গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হযরত ওমরে ফারুক রাযি. (মৃঃ২৩) হযরত উবাই ইবনে কা’ব রাযি. (মৃঃ) কে এই g‡g© আদেশ দেন যে, তিনি যেন রমজানের তারাবীর ইমামতি করেন, তিনি আরো বলেন, মানুষ দিনে রোজা রেখে রাতে তারাবীn পড়া পছন্দ করে না। সুতরাং ভাল হতো আপনি যদি তাদের পড়িয়ে দিতেন।উবাই ইবনে কা’ব রাযি. বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! এ কাজতো BwZc~‡e© কেউ করেনি। তিনি বললেন হ্যাঁ আমি জানি, কিন্তু তা DËg, তার পর উবাই ইবনে কা’ব রাযি.তাদের বিশ রাকাত তারাবী পড়ালেন। (আওজাল মাসালিক ২/৫৩৭)
হাদিসটি সনদ সূত্রে হাসান, মাউকুফ।
يقول الكاساني: ان عمر رضي الله عنه جمع اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم في شهر رمضان على ابي بن كعب فصلى بهم كل ليله عشرين ركعة ولم ينكر عليه احد فيكون اجماعا منهم على ذلك، معارف السنن
অর্থাৎ, ইমাম কাসানী রহ. বলেন, হযরত ওমর রাযি. (মৃঃ২৩) রমজান মাসে সাহাবায়ে কেরামকে উবাই ইবনে কা’ব রাযি. এর নিকট জমা করলেন এবং তিনি প্রতি রাতে তাদের বিশ রাকাত তারাবীহ পড়াতেন। আর তাঁদের কেউ তা অস্বিকার করেনি। সুতরাং বিশ রাকাত তারাবীর উপর সাহাবাদের এজমা সাব্যস্ত হলো। (মাআরিফুস সুনান,৫/৫৪৩)
ওমর রাযি. এর যামানায় তারাবীহ।
أخبرنا أبو طاهر الفقيه قال:أخبرنا أبوعثمان البصري قال: حدثنا أبو أحمد محمد بن عبد الوهاب قال أخبرنا خالد بن مخلد قال حدثنا محمد بن جعفر قال: حدثني يزيد بن خصيفة عن السائب بن يزيد قال: «كنا نقوم في زمان عمر بن الخطاب بعشرين » ركعة والوتر نصب الراية، دار الكتب العلمية السنن الكبرى للبيهقي، بلوغ الأماني دار إحياء التراث، إعلاء السنن ط دار الفكر، أدلة الحنفية، واللفظ للنصب
অর্থাৎ, হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযিদ রাযি. কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা ওমর রাযি. এর যুগে বিশ রাকাত তারাবীর নামায এবং বিতর পড়তাম। (সুনানে কুবরা বায়হাক্বী ৪/৬১ (হাদীস নং ৪৭২২), আসারুস সুনান, পৃঃ ২৮৯ (হাদীস নং ৭৭৭)
হাদীসটি সনদসূত্রে সহীহ।
روى البيهقي هذا الأثر بسند آخر بلفظ قال كانوا يقومون على عهد عمر بن الخطاب رضي الله عنه في شهر رمضان بعشرين ركعة وصحح إسناده النووي وغيره – تحفة الأحوذي
অর্থাৎ, ইমাম বায়হাক্বী রহ. (মৃঃ৪৫৮) এ’ হাদিসটি ভিন্ন সনদে বর্ণনা করেন যে, সাহাবায়ে কেরাম ওমর রাযি.এর যামানায় রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী, ৩/২৩৫)
ইমাম নিমভী রহ. (মৃঃ৬৭৬) সহ অনেক মুহাদ্দিস সনদটিকে mহীহ বলেছেন।
وأما أكثر أهل العلم، فعلى عشرين ركعة يروى ذلك عن عمر، وعلي وغيرهما من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم وهو قول الثوري وابن المبارك، والشافعي وأصحاب الرأي، قال الشافعي: وهكذا أدركت ببلدنا بمكة يصلون عشرين ركعة، سنن الترمذي
অর্থাৎ, অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম বিশ রাকাতের পক্ষ অবলম্বন করেছেন। এ ব্যাপারে হযরত আলী ও হযরত ওমর রাযি. সহ কতক সাহাবী থেকে বর্ণনা করা হয়েছে। এ’টি সুফিয়ান সাওরী, ইবনে মুবারক ও ইমাম শাফেয়ী রহ. এর উক্তি। ইমাম শাফেয়ী রহ. (মৃঃ২০৪) বলেন- আমাদের শহর মক্কাতে দেখেছি যে, তাঁরাও বিশ রাকাত তারাবীর নামায আদায় করেন। (সুনানে তিরমিযী, ১/১৬৬, মা’আরিফুস সুনান, ৫/৫৫৪)
ওমর রাযি. এর যামানায় সাহাবাদের ইজমা
وكذلك من عهد عمر بن الخطاب ولم يخالف أحد منهم – ذلك فصار إجماعا ولا تجتمع الصحابة على أمرٍ إلا إذا كان معلوما لديهم فعله صلى الله عليه وسلم . فمستند الإجماع فعله صلى الله عليه وسلم فلم يكن إحداث عمر الا استقرار الأمر على العشرين وجمعهم على إمام
হযরত ওমর রাযি. (মৃঃ২৩) এর যামানা পর্যন্ত মানুষ বিশ রাকাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জামাতে তারাবীহ পড়ে যাচ্ছিলেন। তাদের কেউ কোন মতানৈক্য করেন নাই। বিধায় তা এজমা হয়ে যায়। আর সাহাবায়ে কেরাম শুধু মাÎ ঐ সমস্ত ব্যাপারেই এজমা গঠিত করেন যে ব্যাপারে তাঁরা জ্ঞাত আছেন যে, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন। সুতরাং এজমার তাকাজা হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন করেছেন। আর এটি ওমর রাযি. এর পক্ষ থেকে নব্য আবিস্কৃত নয়। বরং তিনি বিশ রাকাতকেই নির্ধারণ করে দিলেন এবং সবাইকে এক ইমামের পিছনে জমা করে বড় জামাত তৈরী করার কাজটা করেছেন। (আওজাল মাসালিক ২/৫২৪)
শায়খুল হাদীস যাকারীয়া রহ. (১৪০২হি.) বলেন-
قلت : والروايات فى هذا الباب كثيرة صريحة في أن النبي – صلى الله عليه وسلم – صلاها، والصحابة كانوا يصلّونها أوزاعا متفرّقين من زمانه -صلى الله عليه وسلم إلى زمان عمر بن الخطاب، ثم استقر الأمر في خلافته على عشرين ركعة، كما استقر الأمر في خلافته على ضرب الثمانين في الخمر، وكما استقر الأمر على وجوب الغسل بالتقاء الختانين وكما استقر الأمر على النهي عن بيع أمهات الأولاد، وكما استقر الأمر على اربع تكبيرات الجنائز، وكما استقر الأمر على القراءة في خلافة عثمان ولها نظائر كثيرة فليت شعرى أي فرق بين التراويح وبين هذه الأمور كلها ؟ – أوجز المسالك ٥٢٤/٢
অর্থাৎ, আমি তো বলি এ অধ্যায়ে অনেকগুলো বর্ণনা আছে যে,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন, এবং সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যামানা থেকে ওমর রাযি. (মৃঃ২৩) এর যামানা পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছেন, অর্থাৎ জামাত ছাড়া একাকি ও ছোট-ছোট দুই-তিন জনের জামাতে এবং বিভিন্ন রাকাতে ষোল রাকাত, আঠার রাকাত বা বিশ রাকাত ইত্যাদি, অতঃপর ওমর রাযি. এর যামানায় তা বিশ রাকাতে নির্ধারিত হলো, যেমন তাঁর খেলাফতকালে নির্ধারিত হলো শরাব পানকারীর শাস্তি আশি বেত্রাঘাত। উভয় লজ্জাস্তান মিলিত হলে গোসল ফরজ হওয়ার বিধান।উম্মে আওলাদ বিক্রয় নিষেধাজ্ঞার বিধান।জানাযার নামাযে চার তাকবীরের বিধান। অনুরুপভাবে হযরত উসমান রাযি. (মৃঃ৩৫) এর খেলাফতকালে নির্ধারিত হয়েছে সাত ক্বেরাতের মধ্য থেকে বর্তমান পাঠিতব্য ক্বেরাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরবর্তীকালে নির্ধারণ হওয়ার আরো অনেকগুলো দৃষ্টান্ত আছে। শায়খুল হাদীস রহ. বলেন- আমার বুঝে আসে না এ’ সমস্ত বিষয় আর তারাবীর মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়? (আওজাল মাসালিক ২/৫২৩-৫২৪)
এ’ পর্যন্ত আলোচনায় আমাদের কাছে অনেকটা স্পষ্ট হলো যে, বিশেষ মাসলাহাতের কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে বিশ রাকাত তারাবীর জামাতের উপর পূর্নাঙ্গ গুরুত্ব আরোপ করা হয়নি বরং তা পুরাপুরি গুরুত্বসহকারে জামাতবদ্ধ ভাবে শুরু হয় হযরত ওমর রাযি. এর খেলাফতকালে সাহাবাদের মাধ্যমে। সুতারাং এখন আমাদের জানার বিষয় হলো হাদীসের পাতায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সন্তোষজনক খেলাফতকালের মেয়াদ এবং সাহাবগণ বিশেষত ঐ সময়ের খলিফাগণের সুন্নাতের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু, তা উম্মতের জন্য জরুরী কি না?
এ’ ব্যাপারে ইমাম তিরমিযী রহ. (মৃঃ২৭৯) বলেন-
حدثنا أحمد بن منيع قال حدثنا سريج بن النعمان قال: حدثنا حشرج بن نباتة، عن سعيد بن جمهان قال حدثني سفينة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم:«الخلافة في أمتي ثلاثون سنة، ثم ملك بعد ذلك أمسك خلافة أبي بكر، وخلافة عمر وخلافة عثمان، ثم قال لي: أمسك خلافة علي قال فوجدناها ثلاثين سنة، قال سعيد: فقلت له: إن بني أمية يزعمون أن الخلافة فيهم؟ قال كذب بنو الزرقاء بل هم ملوك من شر الملوك- سنن الترمذي » ثم قال لي سفينة:
অর্থাৎ সাঈদ ইবনে জুমহান রহ. (মৃঃ১৩৬হি.) কর্তৃক বর্ণিত, হযরত সাফিনা রাযি. (মৃঃ৭৮) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের খেলাফতকাল ত্রিশ বছর। এরপর হবে রাজত্ব। সাঈদ রহ. বলেন, সাফিনা রাযি. আমাকে বললেন, আবু বকর রাযি. ওমর রাযি. ও ওসমান রাযি. এর খেলাফতকে আuকড়ে ধর অতপর বললেন “আলী রাযি. এর খেলাফতকে আকড়ে ধর। সাফিনাহ বলেন, আমরা খেলাফত ত্রিশ বছর পর্যন্ত পেয়েছি, সাঈদ বলেন আমি তাকে বললাম বনু উমাইয়্যাহ গোত্রের লোকের ধারণা তাদের মধ্যে খেলাফত বিদ্যমান। সাফিনা বললেন, বনু ঝারক মিথ্যা বলেছে, বরং তারা নিকৃষ্ট বাদশাহদের অন্তর্ভূক্ত। (সুনানে তিরমিযী ৪/২৪৩ (হাদীস নং ২২২৬)
এ’ হাদীসের ব্যাখ্যায় তিরমিযী শরীফের টিকায় বলা হয়েছে-
قوله الخلافة في أمتي ثلاثون سنة أي الخلافة المرضية إنما هي للذين صدقوا الإسلام بإعمالهم وتمسكوا سنة النبي صلى الله عليه وسلم، فإذا خالفواها فهم ملوك، وإن سموا خلفاء – سنن الترمذي
অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বক্তব্যঃ “আমার উম্মতের খেলাফতকাল ত্রিশ বছর” অর্থাৎ সন্তোষজনক খেলাফতকাল, আর তা ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের জন্য, যারা নিজেদের আমল দ্বারা ইসলামকে সত্যায়ন করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাতকে আuকড়ে ধরে রেখেছেন। আর যখন ঐ সুন্নাতকে ডিঙ্গিয়ে চলছে তা খেলাফত নয়, যদিও তারা নিজেদের খলিফা নামে পরিচয় দেয়৷ (সুনানে তিরমিজি, হা, ২২২৬)
খুলাফায়ে রাশেদীন এর আমলের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বর্ণিত
حدثنا عبد الرحمن بن مهدي عن معاوية بن صالح، عن ضمرة بن حبيب، عن عبدالرحمن بن عمرو السلمي، أنه سمع العرباض بن سارية، يقول وعظنا رسول الله صلى الله عليه وسلم موعظة ذرفت منها العيون، ووجلت منها القلوب، فقلنا يا رسول الله إن هذه لموعظة مودع ، فماذا تعهد إلينا؟ قال: «قد تركتكم على البيضاء ليلها كنهارها ، لا يزيغ عنها بعدي إلا هالك، من يعش منكم فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بما عرفتم من سنتي، وسنة الخلفاء الراشدين المهديين، عضوا عليها بالنواجذ وعليكم بالطاعة وإن عبدا حبشيا، فإنما المؤمن كالجمل الأنف، حيثما قيد انقاد » – المسند لأحمد (۱۳/ ۲۷۸ (۱۷۷۷)، ط دار الحديث، سنن أبي داؤد ٤ / ۱۹۷٤ ، ط دارالحديث–
অর্থাৎ, হযরত ইরবাস ইবনে সারিয়া রাযি. (মৃঃ৫৭) বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাদের কিছু নছিহত করলেন, ফলে আমাদের চোখে অশ্রু প্রবাহিত হলো। আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটি মনে হচ্ছে আপনার বিদায়ী (নিকটবর্তীর) নছিহত, সুতরাং আপনি বলুন, আমাদের কিসের প্রতিশ্রুতি দিতে চান? তিনি বললেন, তোমাদেরকে স্পষ্ট দ্বীনের উপর রেখে যাচ্ছি যা রাত দিনের মত সচ্ছ। আমার পরে একমাত্র ধ্বংস্বশীল ব্যক্তিই তা থেকে বিচ্যুতগামী হবে। তোমাদের মধ্যে যে আমার পরে বেuচে থাকবে, সে অনেক মতানৈক্য দেখবে। সুতরাং তোমাদের উপর জরুরী হলো, আমার সুন্নাত এবং আমার হেদায়েতপ্রাপ্ত খলিফাদের সুন্নাত যা তোমরা পাও তা আঁকড়ে ধরো। তোমাদের উপর আরো জরুরী হলো আমিরের অনুগত্য করা, যদিও সে একজন হাবশী গোলামও হয়, এই রীতিকে মাড়ীর দাঁত দ্বারা মজবুত করে আঁকড়ে ধরো। নিশ্চয় মুমিন উটের মত। যেখানেই হাকানো/নিয়ে যাওয়া হয়, সে আনুগত্য করে। (মুসনাদে আহমদ ১৩/২৭৮ (হাদীস নং৭৭) মুস্তাদরাকে হাকেম ১/৯৫, সুনানে আবু দাউদ ৪/১৯৭৪ (হাঃ ৪৬০৭), সুনানে তিরমিযী ৪/৪৬৯ (হাঃ ২৬৭৬) সুনানে ইবনে মাজাহ ১/১৯ (হাঃ৪২), সুনানে দারমী ১/৪৫, হাঃ৯৫)
এই জাতীয় অর্থের হাদxস বিভিন্ন হাদxস গ্রন্থে রয়েছে, – প্রত্যেক কিতাবের হাদীসের উদ্দেশ্য এক, শুধু শব্দের পার্থক্য।
এই হাদীসটি সনদ সূত্রে mহীহ।
সেই সাথে আরো উৎসাহিত করা হয়েছে প্রথম শ্রেণীর সাহাবীদের অনুস্বরণ করার ব্যাপারে, যেমন কালামে পাকে এরশাদ হয়েছে।
- وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ – سورة التوبة
আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মাঝে পুরাতন, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে আর তাঁদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কাননকুঞ্জ যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত নহর সমূহ। (সূরা তাওবাহঃ ১০০)
উপরোল্লেখিত নছসমূহ দ্বারা বুঝা যায় সাহাবায়ে কেরামের কর্ম আদেশ, আমাদের জন্য অপরিহার্য-অনিবার্য, বিশেষ করে খুলাফায়ে রাশিদিনের তো আছেই। তা ছেড়ে গোমরা হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
উপরুক্ত বাণীসমূহ যদি স্পষ্ট হয় তাহলে সাহাবায়ে কেরামের আরো কিছু বাণী ও জীবন্ত কর্ম তুলে ধরার প্রয়াস চালানো যায়৷
সুতরাং তাuরা যদি কোন বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন (আমলের ব্যাপারে) উক্ত বিষয় আমাদের জন্যও অপরিহার্য সাব্যস্ত হয়। আর যে সমস্ত বিষয়ে তাঁরা ঐক্যমত পোষণ করেছেন তাuর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো তারাবীn নামায বিশ রাকাত হওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যামানা থেকে নিয়ে হযরত ওমর রাযি.এর যামানা পর্যন্ত তারাবীহ একটি স্বতন্ত্র আমল ছিলো, অর্থাৎ ব্যক্তিগতভাবে আদায় করা হত বা দু’চার জনের জামাতেই তা করা হত। প্রত্যেকেই পুরা তারাবীহ জামাত সহকারে পড়তে হবে বা বড় জামাতে পড়তে হবে এমন জরুরী তাuরা ভাবতেন না। এহেন পরিস্থিতিতে নিজ নিজ তারাবীর সংখ্যার আলোচনার প্রয়োজন পড়েনি। তারপর দিনের পর দিন যখন গাফলতি শুরু হতে লাগলো তখন ১৪ হিজরীতে হযরত ওমর রাযি. এর আদেশে উবাই ইবনে কা’ব রাযি. মসজিদে নববীতে ইমামতি শুরু করেন। আর ক্রমান্বয়ে জামাতে সাহাবায়ে কেরামের উপস্থিতি বাড়তে থাকে তখন তারাবীর রাকাত আর গোপন থাকেনি, অর্থাৎ উবাই ইবনে কা’ব রাযি. বিশ রাকাত তারাবীn পড়ালেন। উক্ত জামাতে উপস্থিত থাকতেন শীর্ষস্থানীয় সাহাবায়ে কেরাম, যারা কোরআন, হাদীস, ফিক্বাহ ফতোয়ার স্তম্ভ ছিলেন। তাদের উপরই নির্ভর করে হাদীস শুধু mহীহ হওয়া নয়, বরং সকল হাদীস আমাদের পর্যন্ত পৌছা।
উবাই ইবনে কা’ব রাযি. কর্তৃক সাহাবাদের ইমামতি-
حدثنا حميد بن عبد الرحمن عن حسن، عن عبد العزيز بن رفيع قال كان أبي بن كعب يصلي بالناس في رمضان بالمدينة عشرين ركعة، ويوتر بثلاث» – مصنف ابن أبي شيبة
অর্থাৎ,হযরত উবাই ইবনে কা’ব রাযি. মসজিদে নববীতে সাহাবাদের বিশ রাকাত তারাবীহ এবং বিতর পড়াতেন।(মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ ৫/২২৪ (হাঃ৭৭৬৬)
হাদীসটি সনদ সূত্রে মুরসালে কভীয়্যা,অর্থাৎ দলীলযোগ্য।
হযরত ইবনে আবী মুলাইকা রাযি. এর ইমামতি-
الله عنهما كان ابن أبي مليكة ، قال يصلي بنا في : عن نافع عن ابن عمر رضي رمضان عشرين ركعة – آثار السنن ص/۲۹۲ (۷۸۳)،
অর্থাৎ, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. (মৃঃ৭৩) বলেন-ইবনে আবী মুলাইকা রাযি. রমজান মাসে আমাদের বিশ রাকাত তারাবীn পড়াতেন। (আসারুস সুনান, পৃঃ ২৯২ (৭৮৩)
ইমাম নিমভী রহ. (মৃঃ) হাদীসটি সহীহ বলেছেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. এর ইমামতি-
قال النيموي : مارواه محمد بن نصر بسنده عن الأعمش عن زيد بن وهب قال : كان ابن مسعود: يصلى بنا شهر رمضان. قال الأعمش كان يصلي عشرين ركعة ويوتر بثلاث، قاله العينى – أوجز المسالك ۲/ ۵۳۸
অর্থাৎ যায়েদ ইবনে ওহাব রহ. (মৃঃ৯৫) বলেন- আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. (মৃঃ৩২) রমজান মাসে আমাদের তারাবীর নামায পড়াতেন। আল্লামা বদরুদ্দীন আঈনী রহ. বলেন, আ’মাশ রহ. বলেছেন, তিনি বিশ রাকাত তারাবীহ ও বিতর পড়তেন। (আওজাযুল মাসালিক ২/৫৩৮)
হাদীসটি সনদ সূত্রে সহীহ এবং এ হাদীসের রাবীগণ বুখারী মুসলিমের রাবী।
হযরত আলী রাযি. এর Kg©c×wZ ও ইমামতি।
তাঁর ব্যক্তি পর্যায়ের আমল-
علي بن أبي طالب رضي الله عنه صلى التراويح عشرين ركعة – تحفة الأحوذي ٢٣٤٣
হযরত আলী রাযি. (মৃঃ৪০) বিশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩/২৩৪)
হযরত আলী রাযি. এর আদেশ
আদেশ নং-১
حدثنا وكيع عن حسن بن صالح عن عمرو بن قيس، عن ابن أبي الحسناء، أن عليا أمر رجلا يصلي بهم في رمضان عشرين ركعة – مصنف ابن أبي شيبة ۲۳۳/۵ (٧٧٦٣) ، استذكار ۲/ ۷۰ ، إعلاء السنن ، اسناده مرسل
অর্থাৎ;আলী রাযি. (মৃঃ৪০) একজন ব্যক্তিকে বিশ রাকাত তারাবীn পড়ানোর হুকুম করেন।(ইসতিজকার,২/৭০)
সনদ সূত্রে হাদীসটি মুরসাল, দলীলযোগ্য।
আদেশ নং-২
عن أبي سعيد البقال، عن أبي الحسناء أن علي بن أبي طالب أمر رجلا أن يصلي بالناس خمس ترويحات عشرين ركعة، وفي هذا الإسناد ضعف، والله أعلم – السنن الكبرى للبيهقي ٦٢/٤ (٤٧٢٦) عمدة القاري ٢٠٨/٦ ط المكتبة التوفيقية،
অর্থাৎ, হযরত আলী রাযি. (মৃঃ৪০) একজন ব্যক্তিকে হুকুম করেছেন যে, তিনি যেন পাঁচ তারবীহাহ অর্থাৎ বিশ রাকাত তারাবীহ পড়ান৷ (সুনানে বায়হাকী,৪৭২৬)
হারেস ইবনে আউস রাযি. এর ইমামতি-
حدثنا أبو معاوية، عن حجاج عن أبي إسحاق، عن الحارث: «أنه كان يؤم الناس في رمضان بالليل بعشرين ركعة ويوتر بثلاث، ويقنت قبل الركوع، مصنف ابن أبي شيبة (٧٧٦٧) ط إدارة القرآن إدارة القرآن
অর্থাৎ, হারেস ইবনে আউস রাযি. (মৃঃ) রমজানের রাতে সাহাবাদের ইমামতি করতেন, বিশ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বিতর পড়াতেন, আর দোয়া কুনুত পড়তেন রুকুর পূর্বে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা,৭৭৬৭)
সুওয়াইদ ইবনে গাফলা রাযি. এর ইমামতি-
وأنبأ أبو زكريا بن أبي إسحاق، أنبأ أبو عبد الله محمد بن يعقوب، ثنا محمد بن عبد الوهاب أنبأ جعفر بن عون، أنبأ أبو الخصيب قال كان يؤمنا سويد بن غفلة في رمضان فيصلي خمس ترويحات عشرين ركعة (السنن الكبرى)
অর্থাৎ,আবুল খছীব রহ.বর্ণনা করেন, সুওয়াইদ ইবনে গাফলা রাযি. (মৃঃ৮১) আমাদের রমজান মাসে পাঁচ তারবীহাহ- বিশ রাকাত তারাবীহ পড়াতেন।( সুনানে কুবরা বায়হাক্বী ৪/৬১ (হাঃ ৪৭২৪)
এই হাদীসটি সনদ সূত্রে হাসান।
শুতায়ের ইবনে শাকল রহ. এর ইমামতি-
وروينا عن شتير بن شكل، وكان من أصحاب علي رضي الله عنه أنه كان يؤمهم في شهر رمضان بعشرين ركعة ويوتر بثلاث – السنن الكبرى للبيهقي
অর্থাৎ, আলী রাযি. এর শাগরেদ শুতায়ের ইবনে শাকল থেকে বর্ণনা আছে যে, তিনি রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতর পড়াতেন। (সুনানে কুবরা বায়হাক্বী ৪/৬১, নুখাবুল আফকার, ৩/২৭৮)
ইবনে রবিআর ইমামতি-
حدثنا الفضل بن دكين عن سعيد بن عبيد أن علي بن ربيعة كان يصلي بهم في رمضان خمس ترويحات، ويوتر بثلاث – مصنف ابن أبي شيبة ، بذل المجهود إسناده صحيح
অর্থাৎ, সাঈদ ইবনে উবাইদ কর্তৃক বর্ণিত, আলী ইবনে রবিআহ রহ. রমজান মাসে তাদের পাঁচ তারবীহাহ অর্থাৎ বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতর পড়াতেন। এই হাদীসটি সনদ সূত্রে সহীহ। (মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, ৫/২২৪ (হাঃ ৭৭৭২)
বিশ রাকাত তারাবীর উপর সাহাবাগণের আমল
সাহাবাগণের আমল-১
أنبأ أبو أحمد العدل، أنبأ محمد بن جعفر المزكي، ثنا محمد بن إبراهيم، ثنا ابن بكير، ثنا مالك، عن يزيد بن رومان قال كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب رضي الله عنه في رمضان بثلاث وعشرين ركعة رواه مالك واسناده مرسل قوي، وقال البيهقي والثلاث هو الوتر، عمدة القاري ٦/ ۲۰۸ ط مكتبة التوفيقية، صحيح البخاري
অর্থাৎ ইয়াযিদ ইবনে রোমান রহ. (মৃঃ১৩০) বলেন, ওমর রাযি. এর যামানায় রমজানের রাতে সাহাবায়ে কেরাম তেইশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। ইমাম মালেক রহ. (মৃঃ১৭৯) বলেন, হাদীসটির সনদ মুরসালে কভীয়্যাহ। ইমাম বায়হাক্বী রহ. (মৃঃ৪৫৮) বলেন, তিন রাকাত হলো বিতর। (উমদাতুল ক্বারী ৬/২০৮, সুনানে কুবরা বায়হাক্বী, ৪/৬১ (হাঃ৪৭২৩) ছহীহ বুখারী ১/১৫৪ )
এই হাদীসটি সনদ সূত্রে মুরসালে কভীয়্যা,অর্থাৎ দলীলযোগ্য।
সাহাবাগণের আমল-২
عن يزيد بن رومان قال: كان الناس يقومون في زمن عمر رضي الله عنه – في رمضان بثلاث وعشرين ركعة فهذه العشرون كانت تراويحهم شفعًا شفعًا، والثلاث كان وترهم وبهذا استدل أصحابنا على أن التراويح عشرون بعشر تسلیمات – نخب الأفكار ۳ ۲۷۷ ، لامع الدرري ۱/ ۲۸۵ ، آثار السنن ص / ۲۹۱ (۷۷۸
অর্থাৎ, ইয়াযিদ ইবনে রোমান রহ. (মৃঃ১৩০) বলেন, ওমর রাযি. এর যামানায় রমজানের রাতে সাহাবায়ে কেরাম তেইশ রাকাত নামায আদায় করতেন, বিশ রাকাত তারাবীহ ছিলো, দুই- দুই রাকাত করে, আর তিন রাকাত ছিলো তাদের বিতর। এ’ বর্ণনা দ্বারা আমাদের ইমামগণ দলীল সাব্যস্ত করেন যে, তারাবী নামায দশ সালামে বিশ রাকাত। (নুখাবুল আফকার ৩/২৭৭, লামেউদ দুরারী ১/২৮৫, আসারুস সুনান পৃঃ২৯১ (৭৭৮)
হাদীসটি সনদ সূত্রে মুরসাল, দলীলযোগ্য।
সাহাবাগণের আমল- ৩
حدثنا ابن نمير، عن عبد الملك، عن عطاء، قال: أدركت الناس وهم يصلون ثلاثا وعشرين ركعة بالوتر- مصنف ابن أبي شيبة، استذكار،
অর্থাৎ, আতা রহ. (মৃঃ১১৪) বলেন- আমি সাহাবাদের বিতরসহ তেইশ রাকাত পড়তে দেখেছি৷ (মুনাফে ইবনে আবী শায়বা ৫/২২৪ (৭৭৭০) নায়লুল আওতার ১/৫৮)
হাদীসটি সনদ সূত্রে সহীহ, এবং এই হাদীসের সমস্ত রাবী বুখারী মুসলিমের।
সাহাবাগণের আমল-৪
رواه البيهقي بإسناد صحيح عن السائب بن يزيد الصحابي، قال: كانوا يقومون على عهد عمر رضي الله تعالى عنه بعشرين ركعة، وعلى عهد عثمان وعلي رضي الله تعالى عنهما مثله، قال الإمام النبوي: اسناده صحيح- عمدة القاري .
অর্থাৎ, ইমাম বায়হাক্বী রহ.(মৃঃ৪৫৮) সাহাবী হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযিদ রাযি,থেকে mহীহ সনদ সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, সাহাবায়ে কেরাম হযরত ওমর, উসমান ও আলী রাযি. এর খেলাফতকালে বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। (উমদাতুল কারী ৫/২২৮,তহফাতুল আহওয়াজী ৩/২৩৫)
ইমাম নববী রহ. বলেb (মৃঃ৬৭৬) হাদীসটির সনদ mহীহ।
সাহাবাগণের আমল-৫
وروى محمد بن نصر في قيام الليل من رواية يزيد بن خصيعة عن السائب بن يزيد قال انهم كانوا يقومون في عهد عمر رضي الله عنه بعشرين ركعة – أوجز المسالك ۲/ ۵۲۸ ، آثار السنن ص/ ۲۸۹
অর্থাৎ, কিয়ামুল লাইল” গ্রন্থে আছে, সায়েব ইবনে ইয়াযিদ রাযি. (মৃঃ৯৯) বলেছেন, সাহাবায়ে কেরাম ওমর রাযি. (মৃঃ২৩) এর খেলাফতকালে বিশ রাকাত তারাবীn পড়তেন। (আউজাযুল মাসালিক ২/৫২৮, আসারুস সুনান পৃঃ২৯৮(৭৭৭)
ইমাম নিমভী রহ. (১৩২২হি.) বলেন- হাদীসটি সনদসূত্রে সহীহ।
সাহাবাগণের আমল- ৬
وروى محمد بن نصر من طريق عطاء :قال أدركتهم في رمضان يصلون عشرين ركعة وثلاث ركعات الوتر – نيل الأوطار
অর্থাৎ, আতা রহ. (মৃঃ১১৪) বলেন, আমি সাহাবাদের রমজান মাসে, বিশ রাকাত তারাবীn ও তিন রাকাত বিতর পড়তে দেখেছি ৷ (নায়লুল আওতার ৩/৫৮, আসারুস সুনান ২৯১ (৭৮১)
হাদীসটি সনদ সূত্রে মুরসালে কভীয়্যা, দলীলযোগ্য।
সাহাবা ও তাবেয়ীগণের আমল-৭
ويقول الدسوقي في (التدويل) بعشرين وثلاث الوتر كما كان عليه عمل الصحابة والتابعين – معارف السنن
অর্থাৎ “তাদউইল নামক গ্রন্থে উল্লেখ আছে, সাহাবা ও তাবেয়ীগণের আমল ছিলো, তারাবীর নামায বিশ রাকাত ও বিতর নামায তিন রাকাত।( মা’আরিফুস সুনান ৫/৫৪৬)
তারাবীর নামায বিশ রাকাত- জমহুর সাহাবাM‡Yi মাযহাব
بالجملة: فالمراد بقيام رمضان: التراويح ولم يقل أحد من الأئمة الأربعة بأقل من عشرين ركعة فيها، وكونها عشرين ركعة مذهب جمهور الصحابة – رضي الله عنهم معارف السنن ٥٤٣/٥ –
অর্থাৎ, মোট কথাঃ রমজানের কিয়াম দ্বারা উদ্দেশ্যঃ তারাবীর নামায। আর ইমাম চতুষ্ঠয়ের কেউ তা বিশ রাকাতের কমে বলেন নি। আর তারাবীর নামায বিশ রাকাত হওয়া তো জমহুর সাহাবাM‡Yi মাযহাব। (মা’আরিফুস সুনান ৫/৫৪৩)
বিশ রাকাত তারাবীর উপর তাবেয়ীগণের আমল
তাবেয়ীগণের আমল-১
حدثنا وكيع عن سفيان عن أبي إسحاق عن عبد الله بن قيس، عن شتير بن شكل أنه كان يصلي في رمضان عشرين ركعة والوتر، مصنف ابن أبي شيبة(٧٧٦۲)
অর্থাৎ, আব্দুল্লাহ ইবনে ক্বায়েস রহ. বলেন, শুতায়ের ইবনে শাকল রহ. রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবীn ও বিতর পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা,৫/২২২, হা,৭৭৬২)
তাবেয়ীগণের আমল-২
روي عشرون ركعة عن علي وشتير بن شكل وابن أبي مليكة، والحارث الهمداني وأبي البختري – الاستذكار ٢/ ٦٩
অর্থাৎ, বিশ রাকাত তারাবীর ব্যাপারে ১. আলী ইবনে রবিআহ ২. শুতায়ের ইবনে শাকল ৩. ইবনে আবী মুলাইকা ৪. হারেস হামদানী ৫. আবুল বুখতারী রহিমাহুমুল্লাহ থেকে বর্ণিত আছে। (ইসতিজকার,২/৬৯)
ইমাম চতুষ্ঠয়ের মতে তারাবীর নামায বিশ রাকাত।
لم يقل أحد من الأئمة الأربعة بأقل من عشرين ركعة في التراويح وإليه جمهور الصحابة – رضوان الله عنهم أجمعين – ثم ماخوذ الأئمة الأربعة من عشرين ركعة هو عمل الفاروق الأعظم – ترمذي ١/ ١٦٦
অর্থাৎ, ইমাম চতুষ্ঠয় কেউ তারাবীর নামায বিশ রাকাতের কম বলেন নি। এটিই জমহুর সাহাবাM‡Yi মাযহাব, আর ইমাম চতুষ্ঠয়ের বিশ রাকাতের আমল হযরত ওমর রাযি. এর আমল থেকে গৃহিত। (সুনানুত তিরমিজি,১/১৬৬)
قال ابن رشيد في بداية المجتهد واختلفوا في المختار من عدد الركعات التي يقوم) بها الناس فاختار مالك فى أحد قوليه وأبو حنيفة، والشافعي، وأحمد وداؤد: القيام بعشرين ركعة سوى الوتر – أوجز المسالك ۵۳۳/۲
অর্থাৎ, ইবনে রুশদ রহ.বেদায়াতুল মুজতাহিদ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, তাবেয়ীগণের মাঝে তাদের তারাবীর রাকাতের ব্যাপারে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। ইমাম মালেক রহ.এর দু’মতের একটি, ইমাম আবু হানিফা, শাফেয়ী, আহমদ ইবনে হাম্বল ও দাউদ জাহেরী রহ. প্রমূখের নিকট তারাবীn নামায বিশ রাকাত। (আওজাযুল মাসালিক ২/৫৩৩)
ইমাম আবু হানিফার মতে তারাবীর নামায বিশ রাকাত-
শায়খুল হাদীস যাকারীয়া রহ. (মৃঃ১৪০২) বলেন-
متون المالكية مرجّحة بعشرين قال في الأنوار الساطعة وتتأكد صلاة التراويح فى رمضان وهي عشرين ركعة بعد صلاة العشاء . وفي الدسوقي على الشرح الكبير) وهى ثلاث وعشرون ركعة بالشفع والوتر كما كان عليه عمل الصحابة والتابعين – أوجز المسالك
মালেকি মাযহাবের মূলপাঠ(মতনে) বিশ রাকাতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আনওয়ারুস সাতিয়া গ্রন্থকার বলেছেন, নিশ্চিত রূপে জানা যায় যে, রমজানের তারাবীn ইশার পর বিশ ivকাত পড়া হবে। আর ÔদুসূকীÕ গ্রন্থে আছে তা হবে দু-দু রাকাত তেইশ রাকাত বিতরসহ, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের আমল এমনই ছিলো।(আউজাযুল মাসালিক ২/৫৩৪)
তারাবীর নামায বিশ রাকাত- হাম্বলী মাযহাব মতে-
أما من كتب الحنابلة ففي (نيل المارب) التراويح سنة مؤكدة عشرون ركعة برمضان والأصل فى مسنونتها الإجماع، أوجز المسالك ٢/ ٥١٦
অর্থাৎ, হাম্বলী মাযহাবের কিতাব নায়লুল ÔমাআরিfÕ এ উল্লেখ আছে রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবীn সুন্নাতে মুআক্কাদাহ আর তা সুন্নাত হওয়ার ব্যাপারে ইজমা সংগঠিত হয়েছে। (আউজাযুল মাসালিক ২/৫১৬)
তারাবীর নামায বিশ রাকাত-সাহাবায়ে কেরামের ইজমা
সাহাবায়ে কেরামের ইজমা-১
قال القسطلاني في (شرح البخاري) جمع البيهقي بأنهم كانوا يقولون بإحدي عشرة ثم قاموا بعشرين ثم أوتر بثلاث. وقد عدوا ما وقع في زمان عمر رضي الله عنه كالإجماع – أوجز المسالك ۲/ ۵۲۹ ‘
অর্থাৎ, আল্লামা ক্বসতলানী রহ. (মৃঃ৯২৩) ইরশাদুস সারীতে বলেন, ইমাম বায়হাক্বী রহ. (মৃঃ৪৫৮) জমা করেছেন যে, সাহাবায়ে কেরাম প্রথমে তো এগারো রাকাতের বর্ণনা রেওয়ায়েত করেছেন, অতঃপর নিজেরাই বিশ রাকাত তারাবীn পড়ে তিন রাকাত বিতর পড়েছেন।ওমর রাযি. এর যামানায় সাহাবায়ে কেরামের বিশ রাকাত তারাবীn সংগঠিত সংখ্যাকে তাuরা ইজমার সমতুল্য গণনা করেছেন। (আউজাল মাসালিক ২/৫২৯)
সাহাবায়ে কেরামের ইজমা -২
وقال علي القاري – رحمه الله – في شرح النقاية فصار إجماعا لما روى البيهقي بإسناد صحيح إنهم كانوا يقيمون على عهد عمر رضي الله عنه بعشرين ركعة وعلى عهد عثمان وعلي الله عنهما وهكذا هو في عمدةالقاري، –
অর্থাৎ, মোল্লা আলী ক্বারী রহ. (মৃঃ১০১৪) শরহে নুকায়া গ্রন্থে বলেন, ইমাম বায়হাকী রহ. (মৃঃ৪৫৮) mহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন, তাতে ইজমা হয়েছে যে, সাহাবায়ে কেরাম ওমর, উসমান ও আলী রাযি. এর খেলাফতকালে বিশ রাকাত তারাবীহ আদায় করেছেন, যেমনটি উমদাতুল ক্বারীতে আছে । (ফাতহুল মুলহিম ৪/১৭৪)
সাহাবায়ে কেরামের ইজমা -৩
وكفى الإثبات شرعيّتها إجماع الصحابة رضي الله عنهم على ذلك بلا نكير منهم. فلم يروعن احدٍ من الصحابة فى زمن الخلفاء، ولا من بعدهم الإنكار على ذلك. بل قد وافقوا عمر في كونه حسنا وباشروا به وأمروا واهتموا كما لا يخفى على من له أدنى ممارسة بالأثر . – أوجز المسالك ۵۱۷/۲
অর্থাৎ, বিশ রাকাতের বিধিবদ্ধতা প্রমাণিত হওয়ার জন্য সাহাবায়ে কেরামের এজমাই যথেষ্ট যে, তাদের কারো এ’ ব্যাপারে Aw¯^Kv‡ii উক্তি নেই। না খোলাফায়ে রাশেদিনের সমকালীন কোন সাহাবী অস্বিকাi করেছেন, না তাদের পরবর্তিকালে কেউ অস্বিকার করেছেন। বরং তা সুন্দর হওয়ার ব্যাপারে সবাই ওমর রাযি. এর সাথে ঐক্য হয়েছেন, তাuরা ঐ ব্যাপারে নিজেরা আত্বনিয়োগ করেছেন। অন্যদের আদায় করার হুকুম করেছেন এবং তাuরা তা আদায় করার ব্যাপারে বিশেষ যত্নবান ছিলেন। যে ব্যক্তির কাছে হাদীসের ব্যাপারে সামান্যতম ধারণাও আছে তার কাছে বিষয়টি অস্পষ্ট নয়। (আউজাল মাসালিক ২/৫১৭)
তারাবীর নামায বিশ রাকাত- ফুকাহায়ে কেরামের ইজমা-
ফুকাহায়ে কেরামের ইজমা-১
وفي (الأنور) صلاة التراويح سنة مؤكدة عشرون ركعة في كل ليلة من رمضان، فهؤلاء فقهاء الأمصار – رضي الله عنهم أجمعين بأجمعم كلهم مجموعون على سُنّتها، بل تأكدها، أوجز المسالك ٢/ ٥١٦ مركز الندوي
অর্থাৎ,আনওয়ারুস সাতিয়া” গ্রন্থে বর্ণিত আছে, রমজান মাসের প্রতি রাতে বিশ রাকাত তারাবীn পড়া সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। বিভিন্ন রাষ্ট্রের ফুকাহায়ে কেরাম তারা প্রত্যেকেই তা সুন্নাতে মুআক্কাদা হওয়ার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন। (আউজাযুল মাসালিক ২/৫১৬)
ফুকাহায়ে কেরামের ইজমা -২
بالجملة العشرون من التراويح وثلاثون الوتر هو الذي استقر عليه الأمر أخيرا – معارف السنن ٥٤٦/٥
অর্থাৎ, মোট কথাঃ তারাবীর নামায বিশ রাকাত ও বিতর নামায তিন রাকাত, এটি এমন আমল, যার উপর চূড়ান্ত পর্যায়ে হুকুম স্থীর হয়েছে। (মা’আরিফুস সুনান ৫/৫৪৬)
ফুকাহায়ে কেরামের ইজমা -৩
قال ابن عبد البر : هو قول جمهور العلماء وبه قال الكوفيون، والشافعي، وأكثر الفقهاء وهو الصحيح عن أبي بن كعب من غير خلاف في الصحابة كذا في الأوجـز وقاله الموفق المختـار عـنـد أبي عبد الله رحمه الله – فيها عشرين ركعة، وبهذا قال الثوري وأبوحنيفة والشافعي – لامع الدرري ۲۵۸/۱
অর্থাৎ, শায়খুল হাদীস যাকারীয়া রহ. (মৃঃ১৪০২) বলেছেন, এটি জামহুর উলামাM‡Yi বক্তব্য, এ ব্যাপারে আরো বলেছেন- কুফার অধিবাসীগণ ইমাম শাফেয়ী, এবং অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, এটিই সঠিক যা উবাই ইবনে কা’ব রাযি. থেকে বর্ণিত আছে যে ব্যাপারে সাহাবাদের মাঝে কোন দ্বিমত ছিলো না। যেমনটি আছে “আওজাযুল মাসালিক” গ্রন্থে। হাফেজ ইবনে আব্দুল বার রহ. আরো বলেন, হাফেজ আবু আব্দুল্লাহ রহ. এর নিকট সমৃদ্ধ ও বাছাইকৃত মত হলো তা অর্থাৎ তারাবীহ বিশ রাকাত, এ’ কারণেই বিশ রাকাত তারাবীর কথা বলেছেন ইমাম আবু হানিফা রহ. সুফিয়ান সাওরী ও ইমাম শাফেয়ী রহ.। (লামিউদ দুরারী ১/২৫
ফুকাহায়ে কেরামের ইজমা -৪
قال ابن عبد البر : هو قول جمهور العلماء وبه قال الكوفيون والشافعي وأكثر الفقهاء وهو الصحيح عن أبي بن كعب من غير خلاف في الصحابة، قال في (المغني) وقيام شهر رمضان عشرون ركعة يعني صلوة التراويح، وأول من سنها رسول الله – صلى الله عليه وسلم – ثم ذكر الروايات الدالة على قيامه صلى الله عليه وسلم – في رمضان، ثم قال: والمختار عند أبي عبد الله فيها عشرون ركعة، وبهذا قال الثوري والشافعي وأبو حنيفة – معارف السنن، أوجز المسالك
অর্থাৎ, হাফেজ ইবনে আব্দুল বার রহ. (মৃঃ৪৬৩) বলেছেন, এটি বিরাট সংখ্যক উলামায়ে কেরামের উক্তি, কুফার অধিবাসীগণ, ইমাম শাফেয়ী রহ. এবং অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরামও এমন বলেছেন, উবাই ইবনে কা’ব রাযি. থেকে বিশুদ্ধ মতে এমনই বর্ণিত হয়েছে যে, ঐ ব্যাপারে সাহাবাদের মাঝে কারো দ্বিমত ছিলো না। “মুগনী গ্রন্থকার রহ. বলেছেন, রমজান মাসের রাতের নামায অর্থাৎ তারাবীর নামায বিশ রাকাত। আর সর্বপ্রথম যার থেকে সুন্নাত সাব্যস্ত হয় তিনি হলেন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তারপর “মুগনী গ্রন্থকার কতগুলো রেওয়ায়েত উল্লেখ করেন যেগুলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তারাবীহ বর্ণিত হওয়ার প্রমাণ বহন করে। তারপর তিনি আরো বলেন, হাফেজ আবু আব্দুল্লাহ রহ. এর নিকট গ্রহণীয় আমল হলো তারাবীর নামায বিশ রাকাত। এটিই বলেছেন ইমাম আযম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী ও সুফিয়ান সাওরী রহ.। (মা’আরিফুস সুনান ৫/৫৪২, আউজাযুল মাসালিক ২/৫৩৩)
ফুকাহায়ে কেরামের ইজমা -৫
وبالجملة: عشرون ركعة من التراويح هو قدر متفق بين الأئمة من غير خلاف، وإنما الخلاف فيما زاد
মোট কথাঃ তারাবীর নামাযের ব্যাপারে উম্মত ও ইমামগণের ঐক্যপূর্ণ পরিমাণ হলো তা বিশ রাকাত হওয়া, যার মধ্যে কোন মতানৈক্য নেই। মতানৈক্য হলো বিশ রাকাতের বেশীর মধ্যে। (মা’আরিফুস সুনান ৫/৫৪৫)
প্রিয় পাঠক। এই পর্যন্ত আলোচনার দ্বারা আমাদের কাছে দিবা- লোকের ন্যায় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে যে, সুন্নাত তারাবীর পরিমাণ হলো বিশ রাকাত তা থেকে কমানোর কোন সুযোগ নেই। যেখানে আলোচনা করা হয়েছে, হাদীসে মারফু ক্বওলী থেকে, হাদীসে মাওকুফ, ফে’লী থেকে, হাদীসে মাওকুফ ক্বওলী থেকে হাদীসে মাক্বতু কওলী ও ফে’লী থেকে সর্বোপরি ঐ সমস্ত ইমামগণের কর্মপদ্ধতী ও বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে যাদের উপর নির্ভর করে হাদীস Pহীহ হওয়া, এবং আমাদের পর্যন্ত পৌছা। বরং (১২০০) বার শত শতাব্দী পর্যন্ত বিশ রাকাতের কম, আট রাকাত বা দশ রাকাত তারাবীn আছে বলে কেউ জানত না।
আট রাকাত তারাবীর সূচনা
আজ থেকে দেড় শত (১৫০) বৎসর পূর্বে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত যেমন বিশ রাকাত তারাবীn পড়তো অন্যান্য সকল মুসলিম তখন বিশ রাকাত তারাবীn পড়তো। এমন কি স্বয়ং গায়রে মুকাল্লিদীন তথা লা-মাযহাবী ভাইয়েরা বা তাদের আলেমরাও কখনো কল্পনা করেনি যে, যমীনের বুকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত সোনালী তিন যুগ অতিবাহিত হওয়ার এত দীর্ঘকাল পরে কেউ তারাবীর নামায বিশ রাকাতের কম বলার মত দুঃসাহস দেখাবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, ১২৮৪ হিজরী সনে তাদের সেই অনাকাঙ্খিত দুর আশার বাস্তবায়ন ঘটাল, ভারতের আMÖvবাদ থেকে লা-মাযহাবী একজন আলেম। এই ব্যক্তিই সর্বপ্রথম ফতোয়া দেয় আট রাকাতের পক্ষে। তবে তীব্র প্রতিবাদের মুখে তা টিকে থাকতে পারেনি। এরপর ১২৮৫ হিজরীতে পাঞ্জাব সিমান্তে মাওলানা মুহাম্মদ হুছাইন বাটালভী নামে তাদের আরেকজন এজেন্ট পূর্বের সূত্র ধরে ফতোয়া দেয় আট রাকাতের। সে আরো বলে, এই আট রাকাত পড়াই এক মাত্র সুন্নাত আর বিশ রাকাত পড়া বেদআত। তখন থেকে পাঞ্জাবের বেশ কিছু মসজিদে আট রাকাত তারাবীর প্রচলন শুরু হয়। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে তা বিস্তার লাভ করে।
এখানে একটি লক্ষণীয় বিষয় হলো উবাই ইবনে কা’ব রাযি. এর বর্ণনা মতে বিশ রাকাতের সূচনা হয় মসজিদে নববী থেকে, আর আট রাকাতের সূচনা এই ইতিহাস অনুপাতে পাঞ্জাবের সিমান্ত থেকে। বাটালভীর ফতোয়ার কারণে সে সময় উপ-মহাদেশের মুসলমানদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের উলামায়ে কেরামগণ ঐ ফতোয়ার যথাযথ উত্তর দিয়েছিলেন। এমনকি ন্যায় নিষ্টাবান গায়রে মুকাল্লিদ আলেমগণও এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন, প্রসিদ্ধ গায়রে মুকাল্লিদ মাওলানা গোলাম রাসুল সাহেব, তিনি ১২৯০ হিজরীতে তার ফতোয়ার জবাব লিখেন, তিনি তার বক্তব্যকে স্পষ্ট করে বলেন, নবীজী সা. খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাতকে মাড়ির দাঁত দ্বারা আঁকড়ে ধরতে বলেছেন, সুতরাং তাuদের বিরোধিতা করা নবীজীর সাথে বিরোধিতা করার নামান্তর, যেটি কখনো ক্ষমাযোগ্য নয়, আর নিজের কাপুরুষতার কারণে নিজেরা শুধু এগার বা আট রাকাত পড়ে সাহাবায়ে কেরামের আমলকে বেদআত বলে আখ্যা দেওয়া, তাদের ইজমার (সম্মিলিত সিদ্ধান্তের) সমালোচনা করা, এমনকি বিশ রাকাত আদায়কারীদেরকে মুশরিক সুলভ কথা বার্তা বলা চরম জঘন্য।
ইত্যকাল পর্যন্ত মসজিদে নববী তো দুরের কথা, আরব বিশ্বেও আট রাকাত স্লোগানের ফেত্bv দেখা দেয়নি। সর্বপ্রথম আরব বিশ্বে ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছেন শায়েখ নাসীব রেফায়ী। এক রেসালা লিখে তিনি তৎকালীন ওলামাগণের তোপের মুখে পড়েন। ওলামাগণ তার মতামতের অকাট্য জবাব দিয়ে নিশ্চুপ করে দিয়েছেন। তারপর ১৩৭৭ হিজরীতে শায়েখ আলবানী (মৃঃ১৪২০) রেফায়ীর সমর্থনে “তাসদীদুল ইসাবাহ নামক একটি কিতাব রচনা করে ইলমে উসূলে হাদীসে ও জারহ তাদীল বিষয়ে তার অপরিপক্বতার প্রমাণ করেন। যার ফলাফল রমজানের মত পবিত্র মাসে মসজিদের মত পবিত্র ঘরে ফেত্bvi সয়লাব, যা আজকের সমাজে চাক্ষুশমান। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে হেফাযত করুন। আমীন।