ইসলাম

খারেজী যাহহাক নিরুত্তর হয়ে গেলো

প্রসিদ্ধ খারেজী সরদার যাহহাক। সে উমাইয়াদের আমলে ইরাকের কিছু এলাকা দখল করে নিয়েছিলো। একদা সে উন্মুক্ত তরবারী হাতে ইমাম আবু হানীফা রহ. এর নিকট এসে বললো, আবু হানীফা! তুমি তাওবা করো । ইমাম আবু হানীফা রহ. জিজ্ঞেস করলেন, কী থেকে তাওবা করবো? যাহহাক খারেজী বললো, তোমার ভ্রান্ত আকীদা থেকে। ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, ভ্রান্ত আকীদা আবার কোনটি ? যাহহাক খারেজী বললো, তোমার আকীদা তো হচ্ছে, আলী রা. ও মুয়াবিয়া রা. এর মধ্যকার বিরোধ নিরসনে হযরত আলী রা. তৃতীয় পক্ষকে শালিশ (বিচারক) মেনে নিয়েছিলেন। অথচ হযরত আলীই হকের উপর ছিলেন। তাহলে শালিস মানার কী প্রয়োজন ছিলো? আর আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে বিচারক মানা কুফরী।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, আমাকে যদি হত্যা করা তোমার উদ্দেশ্য থাকে তাহলে ভিন্ন কথা। আর যদি সত্য বলার সুযোগ দাও, তাহলে কিছু বলতে চাই ।

যাহহাক খারেজী বললো, আমি বিতর্কের জন্যেই এসেছি। ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, বিতর্কে যদি আমরা কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারি, তাহলে কী করবো?

যাহ্হাক খারেজী বললো, দুজনে মিলে একজন বিচারক নির্ধারণ করবো। সে যা ফায়সালা দেবে, তা আমরা দুজনই মানতে বাধ্য থাকবো। তখন যাহহাক তার সাথীদের একজনকে বিচারক নির্ধারণ করলো।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, ভাই যাহহাক! তুমি ভালো করে ভেবে-চিন্তে বলো, তুমি কী সন্তুষ্টচিত্তে আমাদের মাঝে এই ব্যক্তিকে বিচারক হিসেবে নির্ধারণ করছো?

যাহহাক খারেজী বললো, হ্যাঁ, তাকে ভেবে-চিন্তেই বিচারক হিসেবে নির্ধারণ করেছি।

ইমাম আবু হানীফা রহ. বললেন, এ কর্মপদ্ধতির দ্বারা তুমিই তৃতীয় পক্ষকে বিচারক হিসেবে মেনে নিয়েছো। আমরা যেমন ফায়সালা দেয়ার জন্য তৃতীয় এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করলাম, হযরত আলী রা. -ও এ কাজটিই করেছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে না। অতএব এই আকীদাই সঠিক।

ইমাম আবু হানীফার রহ. উত্তর শুনে যাহহাক খারেজী নিরুত্তর হয়ে গেলো এবং লজ্জিত হয়ে, মাথা নিচু চলে গেলো ।

তথ্যসূত্র:

বই : ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. এর ঈমানদীপ্ত গল্প

লেখক : মুফতি মাহফুজ মোসলেহ

এই ব্লগটি পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুশি
0
আরও উন্নত হতে পারে
0

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *