‘মূল ঈমান’ বাড়েও না, কমেও না;
‘মূল ঈমান’ বাড়েও না, কমেও না তবে ঈমানের গুণগত অবস্থা বাড়ে-কমে ‘মূল ঈমান’ তথা উল্লিখিত তালিকার সকল বিষয়ের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে সবাই সমান। ফেরেশতা, নবী, সাহাবী, তাবেয়ী, ইমাম, আলেম, সাধারণ সকলকেই উল্লিখিত সব বিষয়ের ওপর ঈমান আনতে হবে।
এদিক থেকে কোনো বেশ-কম নেই। তাই এদিক থেকে ঈমান বাড়া বা কমার সুযোগ নেই। কাজেই ঈমান আনার দিক থেকে সকলের ঈমান এক; তা বাড়েও না, কমেও না।
ইমাম আবু হানীফা রাহ. বলেন, “আমল ঈমানের অংশ নয়। আমাদের ঈমান ফেরেশতাদের ঈমানের মতো। কারণ, আল্লাহর তাওহীদ, রুবুবিয়্যাত, কুদরতসহ তাঁর পক্ষ থেকে আসা যে সকল বিষয়ের ওপর ফেরেশতারা ঈমান এনেছেন, আমরাও ঠিক সেসব বিষয়েই ঈমান এনেছি।
নবী রাসূলগণও ঠিক সেসব বিষয়ই সত্যায়ন করেছেন। এ কারণেই আমরা বলেছি, আমাদের ঈমান ফেরেশতাদের ঈমানের মতো। কারণ, তারা যেসব বিষয় দেখে ঈমান এনেছেন, আমরা সেসব বিষয় না দেখেও ঈমান এনেছি।’
তবে ঈমানের গুণগত অবস্থা সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন কারণে বাড়ে ও কমে। যেমন : গুনাহ করলে কমে; আবার আল্লাহ তাআলার কুদরত দেখলে বা শুনলে, অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে, তাকওয়া, আমল ইত্যাদির কারণে বাড়ে। তাই গুণগত অবস্থার দিক থেকে সকল মানুষের মধ্যে নবীগণের ঈমান সবচেয়ে বেশি।
ইমাম তাহাবী রাহ. (মৃ. ৩২১ হি.) তাঁর বিখ্যাত ‘আকীদা’ গ্রন্থে বলেন, ‘ঈমান এক (জিনিসের নাম, তথা অকাট্য সব বিষয়ের ওপর ঈমান আনা) । আর মূল ঈমানের ক্ষেত্রে সকল ঈমানদার সমান। তবে আল্লাহর ভয়, তাকওয়া, কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধাচরণ এবং সর্বদা উত্তম আমলের মাধ্যমে মুমিনদের মাঝে মর্যাদার বেশ-কম ও পার্থক্য হয়।
সারকথা, মূল ঈমানে কারও জন্যই বেশ-কম করার সুযোগ নেই। তাই এদিক থেকে সকলের ঈমান এক–বাড়েও না, কমেও না। তবে ঈমানের গুণগত অবস্থা পরিবর্তন হয় বিভিন্ন কারণে। তাই এদিক থেকে কারও ঈমান বাড়ে বা কমে।
তথ্য সূত্রঃ
কিতাবঃ ঈমান – আকিদা ১
লেখকঃ মাওলানা সাঈদ আহমদ উস্তাদঃ দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম