কোরআন হাদীসের আলোকে নামাজের গুরুত্ব
কোরআনের আলোকে নামাজের গুরুত্ব
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান গ্রহণ এবং তাওহীদ ও রিসালতের প্রতি সাক্ষ্য প্রদানের পর আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে দায়িত্বটি অর্পিত হয়— তা হলো নামায। পবিত্র কুরআনের অসংখ্য জায়গায় ঈমান ও তাওহীদের পর প্রথম ফরয আমল হিসেবে নামাযের কথা আলোচনা করা হয়েছে।
নামাযের আদেশ
কোনো বিষয়ে গুরুত্বারোপের একটি সহজ-সরল পদ্ধতি হল সে বিষয়টির আদেশ করা। নামাযের উপর গুরুত্বারোপের জন্য এ পদ্ধতিটি কুরআনে অনেক ব্যবহার করা হয়েছে। কুরআনে নামাযের সুস্পষ্ট আদেশ করা হয়েছে এবং বারবার বিভিন্নভাবে করা হয়েছে।
যেমন আল্লাহ বলেন- وَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ وَارْكَعُوْا مَعَ الرّٰكِعِیْنَ
এবং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর এবং রুকূকারীদের সঙ্গে রুকূ কর।-সূরা বাকারা (২) : ৪৩
অন্যত্র বলেছেন-وَجَاهِدُوْا فِی اللهِ حَقَّ جِهَادِهٖ هُوَ اجْتَبٰىكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْكُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍ مِلَّةَ اَبِیْكُمْ اِبْرٰهِیْمَ هُوَ سَمّٰىكُمُ الْمُسْلِمِیْنَ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ هٰذَا لِیَكُوْنَ الرَّسُوْلُ شَهِیْدًا عَلَیْكُمْ وَتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَی النَّاسِ فَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ وَاعْتَصِمُوْا بِاللهِ هُوَ مَوْلٰىكُمْ فَنِعْمَ الْمَوْلٰی وَنِعْمَ النَّصِیْرُ.
এবং তোমরা আল্লাহর পথে সাধনা কর, যেমন সাধনা করা উচিত। তিনি তোমাদের মনোনীত করেছেন এবং দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনো সংকীর্ণতা আরোপ করেননি। তোমাদের পিতা ইবরাহীমের দ্বীন (-কে আঁকড়ে ধর)। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম, পূর্বেও এবং এ কিতাবেও, যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা (অন্যান্য) মানুষের জন্য সাক্ষী হও। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর এবং আল্লাহকে মজবুতভাবে ধর। তিনিই তোমাদের অভিভাবক। তিনি কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।-সূরা হজ্ব (২২) : ৭৮
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা এই উম্মতকে (উম্মতে মুহাম্মাদী) সাক্ষী সাব্যস্ত করেছেন। কিয়ামতের দিন যখন অন্য উম্মতেরা অস্বীকার করে বলবে যে, নবীগণ আমাদের নিকট দ্বীনের কথা পৌঁছাননি তখন উম্মতে মুহাম্মাদী নবীদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে-নিশ্চয় নবীগণ দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। বলাবাহুল্য, উম্মতে মুহাম্মাদীর উপর এটা আল্লাহর বড় নিআমত। এ নিআমতের শোকরিয়া স্বরূপ আল্লাহ তাদেরকে নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা এবং তাঁকে মজবুতভাবে ধরার আদেশ করেছেন।
এ থেকে নামাযের বিশেষ গুরুত্ব যেমন প্রমাণিত হয়, তেমনি এও বোঝা যায়, এই নিআমতের শুধু মৌখিক শোকরিয়া আদায় করা যথেষ্ট নয়; বরং আমলগতভাবেও শোকরিয়া আদায় করতে হবে। যে সকল আমল দ্বারা এ নিআমতের শোকরিয়া আদায় করা যায় তার শীর্ষে রয়েছে নামায, যাকাতসহ সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা।
অপর আয়াতে নবীজীকে লক্ষ করে বলেছেন-
قُلْ لِّعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یُقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَیُنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِیَةً مِّنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَ یَوْمٌ لَّا بَیْعٌ فِیْهِ وَلَا خِلٰلٌ.
আমার যে বান্দাগণ ঈমান এনেছে তুমি তাদেরকে বল, তারা যেন নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করে, সেই দিন আসার আগে, যে দিন কোনো বেচাকেনা থাকবে না এবং বন্ধুত্বও থাকবে না।-সূরা ইবরাহীম (১৪) : ৩১
এখানে আল্লাহ তাআলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদেরকে নামাযের আদেশ করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় নামায অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কিয়ামতের কঠিন সময়ে তা উপকারে আসবে।
অন্যত্র আল্লাহ সরাসরি নবীজীকে নামাযের আদেশ করেছেন-
اَقِمِ الصَّلٰوةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ اِلٰی غَسَقِ الَّیْلِ وَقُرْاٰنَ الْفَجْرِ اِنَّ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدًا.
তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম কর এবং ফজরের নামায (কায়েম কর)। নিশ্চয় ফজরের নামাযে সমাবেশ ঘটে।-সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৭৮
সূর্য হেলার পর থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম দ্বারা কোন্ কোন্ নামায বুঝানো হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ ও সীরাতে এর স্পষ্ট বিবরণ রয়েছে। তা হল, যোহর, আসর, মাগরিব ও এশার নামায। আর ফজরের নামাযকে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা এর বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব নির্দেশ করে। এর বিশেষত্বের একটি দিক হল এ সময়ে ফিরিশতাদের সমাবেশ ঘটে থাকে।
নবীজীকে নামাযের আদেশ করে আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন-
وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ طَرَفَیِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِّنَ الَّیْلِ اِنَّ الْحَسَنٰتِ یُذْهِبْنَ السَّیِّاٰتِ ذٰلِكَ ذِكْرٰی لِلذّٰكِرِیْنَ.
এবং তুমি নামায কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তে ও রাতের কিছু অংশে। নিশ্চয় নেক আমলসমূহ মন্দ কর্মগুলোকে দূর করে দেয়। স্মরণকারীদের জন্য এ একটি স্মারক।–সূরা হূদ (১১) : ১১৪
দিনের দুই প্রান্তে ও রাতের কিছু অংশে নামায কায়েম দ্বারা ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব ও এশার নামায বুঝানো হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত ও সুন্নাহ্য় এর পরিষ্কার বিবরণ রয়েছে।
আমরা লক্ষ করেছি এখানে নামাযের আদেশ করা হয়েছে, সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, পুণ্য পাপকে দূর করে দেয়। এ থেকে বোঝা যায় নামায খুব মর্যাদাপূর্ণ আমল এবং এর দ্বারা গোনাহ মাফ হবে।
নবীজীকে লক্ষ করে আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেছেন- ওহীর মাধ্যমে তোমার প্রতি যে কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা তিলাওয়াত কর ও নামায কায়েম কর। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে আর আল্লাহর যিকিরই সবচেয়ে বড়। তোমরা যা কর,আল্লাহ তা জানেন।-সূরা আনকাবুত (২৯) : ৪৫
এখানেও নামাযের আদেশ করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এর কিছু উপকারিতাও উল্লেখ করা হয়েছে যে, তা অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। হাঁ, নামাযের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তা অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখে। তবে প্রাণবন্ত নামায হতে হবে। যেরূপ নামাযের কথা কুরআন ও হাদীস বলে।
কুরআন হুকুম-আহকাম আলোচনার ক্ষেত্রে সাধারণত পুঃলিঙ্গের সম্বোধন করে। দ্বিমত নেই যে, পুরুষের মত মহিলারাও এসব আদেশ-নিষেধের আওতাভুক্ত। কুরআনে এক স্থানে নবীপত্নীদের বিশেষভাবে সম্বোধন করে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাতে নামাযের আদেশও রয়েছে।
যেমন আল্লাহ বলেন-
یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ لَسْتُنَّ كَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَیْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَیَطْمَعَ الَّذِیْ فِیْ قَلْبِهٖ مَرَضٌ وَّقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوْفًا وَقَرْنَ فِیْ بُیُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِیَّةِ الْاُوْلٰی وَاَقِمْنَ الصَّلٰوةَ وَ اٰتِیْنَ الزَّكٰوةَ وَاَطِعْنَ اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ اِنَّمَا یُرِیْدُ اللهُ لِیُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَیْتِ وَیُطَهِّرَكُمْ تَطْهِیْرًا.
হে নবী পত্নীগণ, তোমরা সাধারণ কোনো নারীর মত নও যদি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। তোমরা কোমলভাবে কথা বলো না, অন্যথায় যার অন্তরে ব্যাধি আছে সে লালসায় পড়বে আর তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বল। এবং তোমাদের ঘরে অবস্থান কর। প্রাচীন জাহিলিয়াতের মতো সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়িও না এবং নামায কায়েম কর। যাকাত আদায় কর। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। হে নবী পরিবার! আল্লাহ তো চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে উত্তমভাবে পবিত্র করতে।-সূরা আহযাব (৩৩) : ৩২-৩৩
নামাযের আদেশ সম্পর্কিত আরো আয়াতের জন্য দেখুন, সূরা বাকারা ১১০, সূরা আনআম ৭২, সূরা নূর ৫৬, সূরা রূম ৩১, সূরা মুজাদালা ১৩
আদেশমাত্রই গুরুত্বপূর্ণ। আদেশকারীর মর্যাদা এবং আদেশের ধরন ও অবস্থা অনুপাতে গুরুত্ব আরো বেশি হয়। আদেশকারী যত বড় হয় আদেশ তত বেশি গুরুত্ব বহন করে। এমনিভাবে যখন বারবার ও বিভিন্নভাবে আদেশ করা হয় তখনো আদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। নামাযের আদেশ যেহেতু স্বয়ং আল্লাহ করেছেন যিনি সবচেয়ে বড় এবং বিভিন্নরূপে করেছেন, সরাসরি বান্দাদের করেছেন, নবীর মাধ্যমে করেছেন, সরাসরি নবীকে করেছেন, নবীপত্নীদের করেছেন, তাই নামাযের মর্যাদা ও গুরুত্ব বেশি।
হাদীসের আলোকে নামাযের আলোচনা
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ « مِفْتَاحُ الْجَنَّةِ الصَّلاةُ وَمِفْتَاحُ الصَّلاةِ الْوُضُوءُ »
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, বেহেশতের চাবি হলো নামায আর নামাযের চাবি হল অযু। (তিরমিযী শরীফ : হাদীস-৪২)
عَنْ نَوْفَلِ بْنِ مُعَاوِيَةَ قَالَ : أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ « مَنْ فَاتَتْهُ الصَّلَاةُ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ »
নাওফেল ইবনে মুয়াবিয়া রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন যে ব্যক্তির নামায ছুটে গেল, কেমন যেন তার মাল দৌলত, ছেলে- মেয়ে, পরিবার-পরিজন সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেল। (ইবনে হিব্বান : খন্ড ৪ পৃষ্ঠা- ৩৩০)
: عَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ « الْعَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمُ الصَّلاةُ فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ »
হযরত বুরাইদা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেছেন আমাদের ও তাদের (মুনাফিকদের) মাঝে যে অঙ্গীকার রয়েছে তা হলো নামায। অতএব, যে ব্যক্তি নামায ছেড়ে দিলো সে কুফুরী করলো । (তিরমিযী : হাদীস- ২৬২১)
عَنْ عَلِيِّ قَالَ كَانَ آخِرُ كَلاَمِ رَسُولِ اللهِ ﷺ « الصَّلاةَ الصَّلاةَ اتَّقُوا اللَّهَ فِيمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ »
হযরত আলী রাযি. হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সা. এর জীবনের সর্বশেষ নসীহত ছিল এই যে, নামায নামায! আপন গোলাম ও অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। (অর্থাৎ তাদের হক আদায় কর) (আবূ দাউদ : হাদীস- ৫১৫৬)
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم « مُرُوا أَوْلادَكُمْ بِالصَّلاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ »
হযরত আমর ইবনে শুয়াইব রাযি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে সাত বছর বয়সে নামাযের হুকুম কর এবং দশ বছর বয়সে নামায না পড়ার কারণে প্রহার কর এবং দশ বছর বয়সে ছেলে- মেয়েদের বিছানা আলাদা করে দাও। (আবূ দাউদ : খন্ড-১ পৃষ্টা- ৪৯৫)
عَنْ جَابِرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ « بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلاةِ »
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি, বান্দা এবং নামায পরিত্যাগ করা। (মুসলিম : ৮২)
শিরক-কুফরের মাঝে পার্থক্য
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ سَمعَ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ « أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهَرًا بِبَابٍ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ فِيهِ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسًا مَا تَقُولُ ذَلِكَ يُبْقِي مِنْ دَرَنِهِ ؟ قَالُوا لَا يُبْقِى مِنْ دَرَنِهِ شَيْئًا قَالَ « فَذَلِكَ مِثْلُ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ يَمْحُو اللَّهُ بِهِ الْخَطَايَا »
হযরত আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছেন যে, বলো দেখি যদি, কোন ব্যক্তির দরজার সম্মুখে একটি নদী প্রবাহিত থাকে যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে তবে তার শরীরে কি কোন ময়লা বাকি থাকবে? সাহাবায়ে কেরাম রাযি. বললেন; কিছুই বাকি থাকবেনা। রাসূল সা. বললেন, পাঁচওয়াক্ত সমূহ মিটিয়ে দেন। (বুখারী : ৫২৮)
নামাযের অবস্থাও এরুপ যে, আল্লাহ তাআলা উহার বিনিময়ে গুনাহ عَنْ أَبِي مُوسَى أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ « مَنْ صَلَّى الْبَرْدَيْنِ دَخَلَ
হযরত আবূ মুসা রাযি. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঠান্ডার (ফজর ও আসরের) নামায আদায় করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম : ৬৩৫)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ « الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ مَا لَمْ تُغْش الْكَبَائِرُ
হযরত আবূ হুরাইয়া রাযি. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন পাঁচ ওয়াক্ত নামায এবং এক জুমআ থেকে আরেক জুমআ এবং উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহের জন্য কাফফারা স্বরূপ। যদি সে কবীরা গুনাহে লিপ্ত না হয়। (মুসলিম : ২৩৩)
مَنْ تَوَضَّأَ لِلصَّلاَةِ فَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ ثُمَّ مَشَى إِلَى الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ فَصَلاهَا مَعَ النَّاسِ أَوْ مَعَ الْجَمَاعَةِ أَوْ فِي الْمَسْجِدِ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ الله قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ « غَفَرَ اللهُ لَهُ ذُنُوبَهُ »
হযরত উসমান ইবনে আফফান রাযি. থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, আমি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি; তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি নামায আদায়ের জন্য পরিপূর্ণভাবে অযু করে ফরয নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে যায় এবং লোকদের সাথে অথবা জামাতের সাথে অথবা মসজিদের মধ্যে নামায আদায় করে, আল্লাহ তাআলা তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। (মুসলিম : ২৩২)
সংকলক:
মুফতি রাশেদুল ইসলাম
ইফতা: জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম ঢাকা,মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স