সাদ সাহেবের যত ভ্রান্ত মতবাদ
সা’দ সাহেবের ভ্রান্ত উক্তি ও আকিদাসমূহ
দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। মুসলিম, অমুসলিম সর্বত্র সমান তালে চলছে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ। নিজের টাকায় খেয়ে- মানুষের মন জয় করে এ জামাত কাজ করে যাচ্ছে। কারো তর্ক-বিতর্ক নয় বরং মহব্বতের সাথে দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছে।
পদ-পদবিহীন এ জামাতে দ্বিধা বিভক্ত ছিল না। তবে তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস শাহ (রাহ.)-এর নাতি মাওলানা সাদ-এর কিছু বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে বিশ্ব তাবলিগ জামাত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেছেন মাওলানা ইলিয়াস (রাহ.) এবং এরপর আমিরের দায়িত্বে ছিলেন তার ছেলে মাওলানা হারুন (রাহ.)। মাওলানা জুবায়েরুল আহসানের ইন্তেকালের পর আমিরের দায়িত্বে আসেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী। ইত:পূর্বে তাবলিগ জামাতের কোনো আমির বা মুরব্বির কোনো বক্তব্য নিয়ে এর আগে এতো বিতর্কের সৃষ্টি হয়নি। যেটি হচ্ছে মাওলানা সাদের দেয়া বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে।
মাওলানা সাদের বক্তব্যে অভিযোগ উঠেছে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় কুরআন, হাদিস, ইসলাম, নবি-রাসুল ও নবুয়ত এবং মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর বয়ান করেছেন। তার দেয়া বিতর্কিত বয়ানের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো,
১. প্রধান অভিযোগ হলো তিনি ঐতিহ্যবাহী শুরা ভেঙে আমিরতন্ত্র কায়েম করেছেন। এ বিষয়ে তাঁর একটি বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি তোমাদের আমির। যে আমাকে আমির মানবে না সে জাহান্নামে যাবে।’ এরপর কয়েকবার নিজামুদ্দিন মারকাজে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে ২০১৫ সালের নভেম্বরে রায়বেন্ড ইজতেমায় একত্রিত হয়ে নিজামুদ্দিনের মুরব্বিরা মারকাজের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং ১৩ জনের শুরা গঠন করা হয়। কিন্তু মাওলানা সাদ শুরা মানতে অস্বীকৃতি জানান। অতঃপর বিশেষ বাহিনীর মাধ্যমে তিনি নিজামুদ্দিন দখল করেন। তাঁর ওস্তাদসহ সব আলেমকে সেখান থেকে বের করে দেন, বের করতে গিয়ে আলেমদের শরীর থেকে রক্ত ঝরাতেও কসুর করেননি। (সূত্র: দাওয়াত ও তাবলিগ, ড. মুহাম্মদ আবদুল হাননান, বিশ্বসাহিত্য ভবন, নভেম্বর, ২০১৮ ভূমিকা দ্রষ্টব্য, পৃষ্ঠা-১৩)
২. মাওলানা সাদ বলেছেন, ‘মসজিদে ঈমানের আসর কায়েম করা ফরজ। মসজিদের বাইরে অন্য কোথাও হেদায়েত পাওয়া যাবে না।’ (সূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া: ১৫)
৩. সাদ সাহেব বলেন, ‘হজরত মুসা (আ.) নিজের জাতির মধ্যে দাওয়াতের কাজ ছেড়ে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কথা বলার উদ্দেশ্যে নির্জনবাসে চলে গিয়েছিলেন। যার ফলে পাঁচ লাখ ৮৮ হাজার বনি ইসরাইল গোমরাহ হয়ে যায় (মুরতাদ হয়ে যায়)।’ (সূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া: ১৮)
৪. মাওলানা সাদের মতে তাবলিগের ৬ নম্বরই প্রকৃত ইসলাম। সাদ সাহেব বলেন, ‘যে ব্যক্তি এই ৬ নম্বরকে পূর্ণ দীন মনে করে না, সে হলো ওই ব্যবসায়ীর মতো, যে নিজেই নিজের দধিকে টক বলে বেড়ায়। এমন ব্যবসায়ী কখনো সফল হতে পারে না।’ (সূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া: ১৭)
৫. ‘ক্যামেরা মোবাইল পকেটে থাকলে নামাজ হবে না। ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল থেকে দেখে দেখে কোরআন শোনা ও পড়া হারাম। এতে কোরআনের অবমাননা হয়। এর কারণে কোনো সওয়াব হবে না। যেসব আলেম তা বৈধ হওয়ার ফতোয়া দেন, তাঁরা উলামায়ে সু।’ (সূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া: ১৬)
৬. কুরআন পড়িয়ে অর্থ নেওয়া হারাম। তিনি বলেন, ‘বিনিময় নিয়ে কোরআনে কারিম পড়া নোংরা নারীর বিনিময়ের মতো। নোংরা নারী তার আগে জান্নাতে যাবে।’ (সূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া: ১৬)
৭. নিজামুদ্দিন থেকে বিচ্ছিন্ন হলে ধর্মত্যাগের গুনাহ হবে। এ বিষয়ে তার বক্তব্য হলো— ‘সাহাবায়ে কেরাম (রা.) ঈমান আনয়নের পর মদিনা থেকে ফিরে নিজের এলাকায় যাওয়াকে ইরতিদাদ তথা ধর্মত্যাগ মনে করতেন। কাজেই নিজামুদ্দিন মারকাজ (তাবলিগের মূল কেন্দ্র) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াকে সাধারণ বিষয় মনে করো না।’ (সূত্র: অব্যাহত বিভ্রান্তিকর বয়ান, পৃষ্ঠা-২৫)
৮. ‘আসহাবে কাহাফের সঙ্গী জন্তুটি কুকুর ছিল না; বাঘ ছিল।’ (সূত্র: অব্যাহত বিভ্রান্তিকর বয়ান, পৃষ্ঠা-৪৯) তাঁর এ বক্তব্য পবিত্র কোরআনের সুরা কাহফের ১৮ নম্বর আয়াতবিরোধী।
৯. তার মতে, নিজামুদ্দিন পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র স্থান। তিনি বলেন, ‘এই স্থানটির (নিজামুদ্দিন) সম্মান করো। সমগ্র পৃথিবীর অবস্থা হলো এমন যে মক্কা-মদিনার পরে যদি এমন কোনো সম্মানিত জায়গা থাকে, যে জায়গাকে আদর্শ মনে করতে হয়, যে জায়গার অনুসরণ করতে হয়, যে জায়গাকে মহান মনে করতে হয়, তাহলে সেটি হলো এই নিজামুদ্দিন বাংলাওয়ালি মসজিদ।’
১০. এত কিছু করেই তিনি থেমে যাননি। তিনি বদলে দেন নামাজের কাঠামোও! নামাজে কাওমা (রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায়) ও জলসায় (দুই সিজদার মাঝখানে বসা অবস্থায়) এমন সব দোয়া পাঠ করা শুরু করে দেন, যা হানাফি মাজহাব অনুসারে ফরজ নামাজে নয়; শুধু নফল নামাজে পড়া যাবে। এমন পরিবর্তনে তাবলিগ জামাতের সাথীরা বিস্মিত হলেও কেউ ‘উফ’ বলার সাহস পায়নি। একজন এ ব্যাপারে কারণ জানতে চাইলে তিনি জবাব দেন, ‘আমি মুহাম্মাদি। আমি সুন্নাহ অনুসরণ করি।’ এভাবেই তিনি তাবলিগ ও নামাজের কাঠামো বদলে দেন। (সূত্র: চৌধুরী আমানত উল্লাহ, সদস্য, মজলিশে আমেলা, মাদরাসায়ে কাশেফুল উলুম, বাংলাওয়ালি মসজিদ, নয়াদিল্লি; অনুবাদ : আবদুল্লাহ আল ফারুক, মাকতাবাতুল আসআদ, ঢাকা, ৫ আগস্ট ২০১৭)
১১.ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখা হারাম। এবং পকেটে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রেখে নামাজ হয় না। যে আলেমগন ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখাকে ‘জায়েজ’ বলেন তারা উলামায়ে ‘ছু’। বারবার কসম খেয়ে তিনি বলেন কারা হলেন উলামায়ে ‘ছু’। এমন আলেমররা হলো গাধা গাধা গাধা।
১২. রাসূল সঃ দাওয়াত ইলাল্লাহর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইশার নামাজকে পর্যন্ত বিলম্ব করে পড়েছেন। অর্থ্যাৎ নামাজের চেয়ে দাওয়াতের গুরুত্ব বেশি।
১৩. হযরত মুসা আঃ থেকে বড় এক ভুল হয়ে গেছে এবং তিনি এক অপরাধ করে ফেলেছেন- জামাত এবং কওমকে ছেড়ে তিনি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য নির্জনতা অবলাম্বন করেছেন।
১৪. হযরত মুসাঃ কর্তৃক হযরত হারুন আঃ কে নিজের স্থলাভিষিক্ত বানানো অনুচিৎ কাজ হয়েছে।
১৫. সকাল-সকাল কুরআন তেলোয়াত করা এবং নফল নামাজ পড়ার তো একটা অর্থ বুঝে আসে। কিন্তু আল্লাহ আল্লাহ বলে যিকির করে কী অর্জন হয়? কিছুই অর্জন হয় না।
১৬.এই এক তাবলীগই নবুওয়াতের কাজ। এ ছাড়া দ্বীনের যত কাজ আছে: দ্বীনি ইলম শিখানো, দ্বীনি ইলম শিখা, আত্নশুদ্ধি, কিতাবাদী রচনা করা কোনোটাই নবুওয়াতের কাজ না।
১৭. কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে জিজ্ঞেস করবেন, তালীমে বসেছিলে কিনা? গাশ্ত করেছিলে কিনা?
১৮. প্রত্যেক সাহাবী অপর সাহাবীর বিরুদ্ধাচারণ করেছেন।
১৯. হেদায়াতের সম্পর্ক যদি আল্লাহর হাতে হতো, তাহলে নবী পাঠাতেন না।
২০. কোরআন শরীফ বুঝে-শুনে তেলোয়াত করা ওয়াজিব। তরজমা না জেনে তেলোয়াত করলে তরকে ওয়াজিবের গোনাহ হবে।
২১. আপনাদের কাছে সবচাইতে বড় গুনাহ-চুরি, যিনা ঠিকই একটা বড় গুনাহ, তবে তার চাইতে বড় গুনাহ হলো খুরুজ (আল্লাহার রাস্তায় বের) না হওয়া।
শুধু এ উক্তিতেই তিনি ক্ষ্যান্ত হননি। ২৫ এরও অধিক বিষয়ে ভ্রান্ত আকিদা পোষন করে আসছেন তিনি। বৃহৎ এই পবিত্র তাবলীগ জামাতের মধ্যে কোরআন ও হাদীসের ভুল ব্যাখ্য দিয়ে পুরো জামাতের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি নিজেকে কী প্রমাণ করতে চান?
সর্বগ্রহনযোগ্য হক্কানি ওলামায়ে ক্যারামের মাসিক পত্রিকায় সাদ সাহেবের ভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা:
- মাসিক আল-কাওসার পত্রিকা তথ্যঃ https://www.alkawsar.com/bn/article/3444/
- মাসিক আদর্শ নারী তথ্যঃ https://adarshanari.com/featured-2/4893/
অন্যান্য তথ্যাবলিঃ
- দারুল উলূম দেওবন্দ-এর ফাতওয়া মাওলানা সাদ সাহেবের ভ্রান্ত আকিদা নিয়ে: বিস্তারিত >>
- অত্যন্ত উপকারী সাইট। যেখানে দেওবন্দের উর্দু ফতোয়া ও পিডিএফগুলো আছেঃ বিস্তারিত >>
- ২০১৮ সাল। এই এক বছরেই সাদ সাহেব অন্তত ৬০টি গুমরাহ বয়ান দিয়েছেন। যা এই ভিডিওলিস্টে আছে। এটাই আমি ‘২০১৮ সালে মাওলানা সাদ সাহেব প্রদত্ত আপত্তিকর বয়ান’ নামে অনুবাদ করেছিলাম। (আবদুল্লাহ আল ফারুক)ঃ বিস্তারিত >>
- বেফাকু উলামায়িল হিন্দের এই ইউটিউব চ্যানেলে সাদ সাহেবের আপত্তিকর বয়ানগুলোর ভিডিও পাওয়া যায়। – বিস্তারিত >>
- আবদুল্লাহ আল ফারুক এর অনূদিত বইগুলোর ‘ই-বুক’ সংস্করণ আছে। – বিস্তারিত >>
- আবদুল্লাহ আল ফারুক এর অনূদিত ‘তাবলীগ সিরিজের’ পিডিএফ কপি এখানে পাবেন – বিস্তারিত >>
ওলামায়ে ক্যারামগনের মন্তব্যঃ
- মুফতী আব্দুল মালেক দাঃবাঃ এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- মাওলানা তারিক জামিল দা বা এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- মুফতি নজরুল ইসলাম কাসেমী এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- Muti Rajaul karim abrar এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- মুফতি মুস্তাকুন্নবী কাসেমী এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- Maulana Tahmidul Mawla এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- Allama Mamunul Haque এর বক্তব্য – বিস্তারিত
- দলিল সহঃ হাদিসের সুস্পষ্ট অপব্যাখ্য করলেন মাওলানা সাদ || মাওলানা বেলাল বিন আলী – বিস্তারিত
- আরও ওলামায়ের তথ্য যোগ করা হবে…
প্রশ্ন এবং উত্তর
আল কাউসার
সংখ্যা- জানুয়ারি-২০১৯
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক
খতীব জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম
উত্তর:- মাওলানা সা‘দ সাহেব সম্পর্কে দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়া বা মুত্তাফিকাহ মাওকিফে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, তিনি জুমহুর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত-এর রাস্তা থেকে সরে যাচ্ছেন- যা নিঃসন্দেহে গোমরাহীর রাস্তা। তাই তার ঐসব বক্তব্যের ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করা যায় না। ফতোয়ার উর্দূ পাঠের সংশ্লিষ্ট অংশ এই-
جماعت تبلیغ ایک خالص دینی جماعت ہے، جو عملا ومسلکا جمہور امت اور اکابر رحمہم اللہ کے طریق سے ہٹ کر محفوظ نہیں رہ پائے گی، انبیاء کی شان میں بے ادبی، فکری انحرافات، تفسیر بالرائے، احادیث وآثار کی من مانی تشریحات سے علمائے حق کبھی متفق نہیں ہو سکتے اور اس پر سکوت اختیار نہیں کیا جا سکتا ؛ اس لئے کہ اسی قسم کے نظریات بعد میں پوری جماعت کو راہ حق سے منحرف کردیتے ہیں، جیسا کہ پہلے بھی بعض اصلاحی اور دینی جماعتوں کے ساتھ یہ حادثہ پیش آچکا ہے۔
তরজমা : তাবলীগ জামাত একটি খালেস দ্বীনী জামাত, যা কাজে-কর্মে ও মতাদর্শে জুমহূর উম্মত ও আকাবিরের মত ও পথ থেকে দূরে সরে নিরাপদ থাকতে পারবে না। আম্বিয়ায়ে কেরামের শানে বেআদবী, চিন্তাগত বিচ্যুতি, তাফসীর বির-রায়, হাদীস-আছারের মনগড়া ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের সঙ্গে হক্কানী উলামায়ে কেরাম কখনো একমত হতে পারেন না। এসব বিষয়ে চুপ থাকা যায় না। কারণ, এ ধরনের চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গিই পরবর্তীতে পুরো জামাতকে হক পথ থেকে সরিয়ে দেয়। যেমন অতীতে কিছু ইসলাহী ও দ্বীনী জামাতের ক্ষেত্রে এটা ঘটেছে।
اس لئے ہم ان معروضات کی روشنی میں امت مسلمہ بالخصوص عام تبلیغی احباب کو اس بات سے آگاہ کرنا اپنا دینی فریضہ سمجھتے ہیں کہ مولوی محمد سعد صاحب کم علمی کی بنا پر اپنے افکار ونظریات اور قرآن وحدیث کی تشریحا ت میں جمہور اہل السنۃ والجماعۃ کے راستے سے ہٹتے جارہے ہيں، جو بلا شبہ گمراہی کا راستہ ہے، اس لئے ان باتوں پر سکوت اختیار نہيں کیا جا سکتا، اس لئے کہ یہ نظریات اگر چہ ایک فرد کے ہیں؛ لیکن یہ چیزیں اب عوام الناس میں تیزی سے پھیلتی جارہی ہیں
তাই উপরিউক্ত বিষয়াবলির আলোকে গোটা মুসলিম উম্মাহ বিশেষত সাধারণ তাবলীগী ভাইদের এ বিষয়ে অবগত করা আমরা আমাদের দ্বীনী দায়িত্ব মনে করছি :
মওলবী মুহাম্মাদ সা‘দ সাহেব ইলমের স্বল্পতার দরুন নিজের চিন্তাধারা ও মতাদর্শ এবং কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে জুমহূর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের পথ থেকে ক্রমশ সরে যাচ্ছেন; যা নিঃসন্দেহে গোমরাহীর পথ। তাই এ বিষয়ে নিরব থাকা যায় না। কারণ, এ চিন্তাধারাগুলো যদিও এক ব্যক্তিবিশেষের, কিন্তু বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
جماعت کے حلقے میں اثر ورسوخ رکھنے والے معتدل مزاج اور سنجیدہ اہم ذمہ داران کو بھی ہم متوجہ کرنا چاہتے ہیں کہ اکابر کی قائم کردہ اس جماعت کو جمہور امت اور سابقہ اکابر ذمہ داران کے مسلک ومشرب پر قائم رکھنے کی سعی کریں اور مولوی محمد سعد صاحب کے جو غلط افکار ونظریات عوام الناس میں پھیل چکے ہیں، ان کی اصلاح کی بھر پور کوشش کریں، اگر ان پر فوری قدغن نہ لگائی گئی، تو خطرہ ہے کہ آگے چل کر جماعت تبلیغ سے وابستہ امت کا ایک بڑا طبقہ گمراہی کا شکار ہو فرقہ ضالہ کی شکل اختیار کرلے۔
তাবলীগী হালকায় প্রভাবশালী, ভারসাম্যপূর্ণ মেযাজের অধিকারী, বিচক্ষণ ও গুরুত্বপূর্ণ যিম্মাদারগণেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, আকাবিরের প্রতিষ্ঠিত এই জামাতকে জুমহূর উম্মত এবং অতীত আকাবির যিম্মাদারগণের মত ও পথের উপর রাখার চেষ্টা করুন। এবং মওলবী মুহাম্মাদ সা‘দ সাহেবের যে ভুল চিন্তা- চেতনা ও মতাদর্শ সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে তা সংশোধনের যথাসম্ভব চেষ্টা করুন। যদি এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে প্রবল আশংকা আছে যে, আগামীতে তাবলীগ জামাতের সাথে সম্পৃক্ত মুসলিম উম্মাহর একটি বড় অংশ গোমরাহীর শিকার হয়ে একটি ‘গোমরাহ ফেরকা’র রূপ নিবে।
মনে রাখবেন, দারুল উলূম দেওবন্দের সেই ফতোয়া এখনও বহাল আছে। কারণ এই বিষয়ে দারুল উলূমের সর্বশেষ লেখার ফলাফলও তাই যা এখানে উদ্ধৃত হল।
উত্তর : দেওবন্দকে উপেক্ষা করার অর্থ বুঝলাম না আমি। এর অর্থ কি দেওবন্দের হুকুম অমান্য করা? এমন কিছু তো এখানে ঘটেনি। এখানের আলেমরা তো দেওবন্দের ফতোয়ারই ব্যাখ্যা করেছেন এবং ঐ ফতোয়ার প্রয়োগের দিকে দৃষ্টি আকষর্ণ করছেন। থাকল কোনো বিষয়ে ফতোয়া দেওয়া। তো কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য ফতোয়া দেওয়ার ব্যাপারে যে শর্তগুলো রয়েছে বা ফতোয়া দেওয়ার যোগ্য কে- এক্ষেত্রে শরীয়তের যে নীতিমালা রয়েছে, ঐ নীতিমালা অনুসারে যার মধ্যে ঐ যোগ্যতা আছে সে-ই ফতোয়া দিতে পারে। দারুল উলূম দেওবন্দ কখনো এই ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। করার কথাও না।
জানি না আপনারা জানেন কি না। মাওলানা সা‘দ সাহেব হাফিযাহুল্লাহ-এর মারাত্মক ভুলগুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর এখানকার উলামায়ে কেরাম কাকরাইলের শুরার নিকট দরখাস্ত নিয়ে গিয়েছিলেন যে, সা‘দ সাহেবকে আপাতত ইজতিমায় দাওয়াত না দেওয়া হোক। এটা কিন্তু দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়া আসার আগে উলামায়ে কেরাম করেছেন। এতে দারুল উলূমের জিম্মাদারগণ কিন্তু নারাজ হননি; বরং যারা জানতে পেরেছেন তারা নাহি আনিল মুনকারের দায়িত্ব পালন করাতে খুশি হয়েছেন।
উত্তর : হাঁ, বিকৃতি তো বটেই। দেখুন, তালীম বা দ্বীনের শিক্ষাদান ছিল সাহাবাদের আমল। কিন্তু এমন লম্বা একটা ঘর হতে হবে, ঘণ্টাভিত্তিক ও ক্লাসভিত্তিক পড়াশোনা হতে হবে এটা তো ছিল না। দশ বছরের কারিকুলাম হতে হবে, এটাও তো ছিল না। কিন্তু তালীম ছিল। এগুলো স্পষ্ট কথা। দাওয়াতও এ রকম। মূল দাওয়াতের কাজ, আর তার বিশেষ পদ্ধতি এক কথা নয়। আল্লাহ তাআলা দাওয়াতকে ফরয নামাজের মতো করে দেননি যে, একটা নির্ধারিত বিশেষ পদ্ধতিতে করতে হবে। কারণ এটা হলে সংকীর্ণ হয়ে যাবে। মানুষের জন্য আল্লাহ তাআলা ইবাদতের পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন যেমন হজ¦, বিশেষ জায়গায় বিশেষ দিনে পালন করতে হয়।কিন্তু তালীম, দাওয়াত ও তাবলীগ, নুসরতে দ্বীন ও ইশাআতে দ্বীন- এসব কাজ এবং এগুলোর মতো অনেক কাজ আছে, যার জন্য আল্লাহ তাআলা মূলনীতি দিয়ে দিয়েছেন, এই মূলনীতিগুলো অবলম্বন করে দ্বীনের এসব কাজ করো। এখন যদি কেউ বিশেষ একটি মুবাহ পদ্ধতিকেই কুরআন-হাদীস ও সীরাতের নির্ধারণকৃত অবধারিত পদ্ধতি মনে করে তাহলে সেটা তাহরীফ তথা বিকৃতি কেন হবে না?
সারকথা হল, দ্বীনের যে কাজগুলোর পদ্ধতি আল্লাহ তাআলা প্রশস্ত রেখেছেন, সেই কাজের মধ্যে আপনি একটা পদ্ধতিকে নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন না। আপনি যে কোনো বৈধ পদ্ধতি অবলম্বন করুন, কিন্তু বলতে পারেন না, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এটাই হুকুম। তাহলে কি আগের ওয়ালারা ভুল করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। আর সামনে? সামনেও তো একাধিক পদ্ধতি হতে পারে। এখনও একাধিক পদ্ধতি চলতে পারে। চলছেও। দুনিয়ার সবাই কি নিযামুদ্দিনের তরীকায় দাওয়াত দেয়? ওদের দাওয়াত যদি শরীয়তের নীতিমালা অনুযায়ী হয়, তাহলে কি আপনি নাজায়েয বলবেন? কেবলই এই জন্য যে, এটা নিযামুদ্দিনের সাথে যুক্ত নয়। এ কথা বলা কি জায়েয আছে? যদি কেউ বলে তাহলে বিকৃতি হবে কি হবে না?
হয়ত আপনারা জানেন, দাওয়াতকে বিশেষ কোনো পদ্ধতিতে সীমাবদ্ধ করে দেওয়ার এই মারাত্মক ভুল থেকে কিন্তু তিনি রুজু করেছেন; কিন্তু রুজু করার পরও তা একাধারে বলে যাচ্ছেন।
উত্তর : এটার একটা আশঙ্কা আছে। কিন্তু তার বিষয়ে এই দাবি করতে হলে স্পষ্ট দলীল দরকার। তিনি অন্য দিকে এটাও বলেছেন যে, সাধারণ অর্থে বা নিজের অর্থ দিয়ে মাদরাসা পরিচালনা করো। যাকাতের টাকা দিয়ে নয়। বেতন-ভাতার বর্ণনার বিষয়ে এরা বারবার উমর রা.-এর উদ্ধৃতি দেয়। এ বিষয়ে আপনারা আলকাউসারে হয়তো পড়েছেন যে, বর্ণনাটা ঠিক নয়। এবং বর্ণনার যে পাঠ, সে পাঠের মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে। আবার বর্ণনাটির যে মর্ম তার সাথে তাদের কথিত মাসআলার কোনো মিল নেই। (বিস্তারিত জানার জন্য মাসিক আলকাউসার যিলহজ্ব ১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক সেপ্টেম্বর ২০১৮ ঈসায়ী সংখ্যা দেখুন।)
তো এ ব্যাপারে উমর রা.-এর দিকে সম্বন্ধ করে যে বর্ণনা উল্লেখ করা হয় তা উমর রা. থেকে প্রমাণিত নয়। কিন্তু মাওলানা সা‘দ সাহেব নিজেই অন্য এক জায়গায় এ বিষয়ে সঠিক কথা বলেছেন। সেখানে বলেছেন
যে, মাদরাসাওয়ালারা যে সম্মানী নেয়, তা হাবসে আওকাতের বিনিময়ে, তা‘লীমের বিনিময়ে নয়। মানে তারা যে নিজেদের পুরো সময়টা এ কাজে দিয়ে দিচ্ছেন, এ কাজের মধ্যেই ব্যস্ত থাকছেন, নিজেদের কামাই রোজগারের জন্য সময় পাচ্ছেন না, তাই এ সময় প্রদানের বিনিময়ে সম্মানী ভাতা নিচ্ছেন। যেহেতু এ বিষয়ে মাওলানা সা‘দ সাহেবের এ ধরনের বক্তব্যও রয়েছে সেজন্য আমরা তার নিয়তের উপর হামলা করতে পারি না। গায়েবের মালিক আল্লাহ। বাকী তার এতাআতীরা বা তাদের অনেকে যে মাদরাসা দেখতেই পারে না তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
উত্তর : তারা যদি এ কথা বলেন যে, ভাই তোমরা আমাদের ইসলাহের আশা করো না। আমাদের সা‘দ সাহেবেরও ইসলাহের আশা করো না। যেমন, একজন বলে দিয়েছে যে, মাইজভাণ্ডারীরা এদেশে আছে, তো আমরাও আছি। আরেকজন বলেছে, সা‘দ সাহেব জাহান্নামে গেলে আমরাও জাহান্নামে যাব। নাউযুবিল্লাহ। যদি ওরা বলে যে, আমাদেরকে ভিন্ন ফেরকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। তাহলে তাদেরকে প্রথমে বলতে হবে যে, ইলিয়াস রাহ. যে তাবলীগ করেছেন, তারা সেই তাবলীগের ওপর নাই। তারা যদি বলে, আমাদেরকে ভিন্ন ফেরকা হিসেবে থাকতে দাও, তাহলে এটা তাদের বিষয়। আমার তো এটা ভাবতেই কষ্ট লাগে। আমরা চাই সবাই হকের ভিত্তিতে এক হয়ে যাক। কিন্তু এ কথা বলা যে, আমরাও তাবলীগ ওরাও তাবলীগ, ওদের একদিন আমাদের একদিন- এ কথা বলা চলবে না। এটা হয় না।
কারণ, তুমি যখন ইলিয়াস রাহ.-এর তাবলীগের কথা বলছ তাহলে তোমাকে সেই আদর্শের ওপর চলতে হবে। তুমি যখন দ্বীনের তাবলীগের কথা বলছ, তাহলে তোমাকে প্রথমে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা, মানহাজ এবং তরীকা অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। এটা থেকে সরে তাবলীগের নাম নিলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। আরে ভাই! ভাগাভাগি তো হয় ধন-সম্পদের মধ্যে। হক আর বাতিলে ভাগাভাগি হয় নাকি?
দলীল হিসেবে তারা পেশ করে সা‘দ সাহেবের ঐ কথাটা যে, ‘হেদায়েত আল্লাহর হাতে হলে, আল্লাহ নবী কেন পাঠিয়েছেন’। তারা বলে, এই কথার আগ-পর শুনলে নাকি আর আপত্তি থাকে না।
উত্তরঃ শুনুন, একজন আড়াই ঘণ্টা বয়ান করেছেন। আড়াই ঘণ্টার মধ্যে দুই ঘণ্টার কথা শুদ্ধ। শুরুর এক ঘণ্টা আর শেষের এক ঘণ্টা, মাঝখানে আধাঘণ্টা ভুল বলেছেন। আমি যদি আপনাকে আড়াই ঘণ্টার বয়ান দিয়ে দিই আপনি কী বুঝবেন? আড়াই ঘণ্টার পুরোটা তো ভুল বলেননি তিনি? আড়াই ঘণ্টার পুরোটা আপনার সামনে রেখে দিলে ভুল কথাটা আপনি বের করবেন কীভাবে? সেটা তো চিহ্নিত করে দিতে হবে।
এটা তো স্বীকৃত তরীকা যে, বক্তব্যের যে অংশটার প্রতি আপনি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছেন, চাই তা সঠিক হোক বা ভুল, আপনার কর্তব্য হল, সে অংশটা চিহ্নিত করে দেয়া। কারণ সেটা চিহ্নিত করে না দিলে ধরবে কীভাবে মানুষ? এই চিহ্নিত করাকে যদি কেউ নাম দেয় ‘কাটপিস’ তাহলে সেটা অন্যায়।
কাটপিস তখন বলা যায় যখন আগ-পর থেকে এমন কথা বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে, যে কথাসহ হলে আর আপত্তি থাকে না। এজন্য আপত্তিকারী এক অংশ রেখেছে আরেক অংশ বাদ দিয়ে দিয়েছে।
এমন কাজ করেছেন আহমদ রেযা খান বেরলভী। তিনি আমাদের আকাবিরের বক্তব্যের আগ-পর বাদ দিয়ে নিজ থেকে আপত্তিকর বক্তব্য সৃষ্টি করে তাদের উপর আরোপ করে দিয়েছেন। এ ধরনের কাজ বেদআতীরা করে; উলামায়ে কেরাম করেন না। উলামায়ে কেরাম উদ্ধৃতি উল্লেখ করার ক্ষেত্রে আমানতদারী রক্ষা করে থাকেন। উদ্ধৃত অংশের সাথে সম্পৃক্ত এমন কোনো কিছু আগ-পর থেকে বাদ দেন না, যা যুক্ত হলে ভিন্ন অর্থ দাঁড়ায়। সুতরাং কাটপিসের আপত্তি তখন চলবে যখন আগ-পরের কথা যুক্ত করলে কোনো আপত্তি আর থাকে না।
আর জানা থাকা ভালো যে, কারো বক্তব্য উদ্ধৃত করার ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ট অংশ উল্লেখ করা- এটি একটি স্বীকৃত নীতি। কুরআনে কারীম ও হাদীস শরীফে তাই করা হয়েছে। সালাফের আমলও এমনই ছিল। তাই এটাকে ব্যঙ্গ করে কাটপিস নাম দেওয়া মারাত্মক অপরাধ।
এখন এরকম একটা দৃষ্টান্ত দেখান, যেখানে উলামায়ে কেরাম আপত্তি করেছেন অথচ আগ-পরের কথা যুক্ত করলে আপত্তি আর বহাল থাকে না।
উদাহরণস্বরূপ মাওলানা সা‘দ সাহেবের ঐ কথাটাই ধরুন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা বল, হেদায়েত আল্লাহর হাতে। হেদায়েত আল্লাহর হাতে হলে আল্লাহ নবী কেন পাঠিয়েছেন।’ একথাটা সঠিক না ভুল? ভুল। তিনি আরেক বয়ানে স্পষ্ট বলেছেন, ‘দেখ, হেদায়েত একমাত্র আল্লাহর হাতে।’ তার সে বয়ানও পড়েছি আমি।
প্রশ্ন হল, এক বয়ানে সহীহ বলেছেন, তাই বলে কি আরেক বয়ানে যে গলত কথা বলেছেন সেটা সহীহ হয়ে যাবে? গলতটা তো গলতই থাকবে।
তাই বলতে হবে, ঐ বয়ানে আমি যা বলেছি তা ঠিক। আর এই বয়ানে যেটা বলেছি সেটা ভুল। তার অনুসারীদের বলতে হবে- হাঁ, হযরতের এখানে ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু সহীহ কথাটা তিনি অন্য বয়ানে বলেছেন। এভাবে বলতে হবে! কিন্তু তা না করে উল্টো সিনাজুরি।
মাওলানা সা‘দ সাহেব এ কথার আগে পরে যতই বলেছেন কিন্তু এ কথার ইসলাহ বা সংশোধনী আসেনি। তার মুখে ভুল কথা, ভুল উপস্থাপন এসে গেছে। নিয়ম হল, ভুল উপস্থাপন হলে তওবা করতে হবে। বলতে হবে, ‘এটা ভুল হয়ে গেছে আমার। এভাবে না বলে কথাটা এভাবে বলা উচিত ছিল।’ কিন্তু তিনি সংশোধনী দিচ্ছেন না অথচ তারা তার পক্ষ থেকে সাফাই বয়ান করছে। আবার উল্টো উলামায়ে কেরাম সম্পর্কে বলছে, তারা কাটপিস শুনে ফতোয়া দেন।
আপনি পুরো আলোচনা শুনুন এবং তার যে কথা ‘তোমরা বল, হেদায়েত আল্লাহর হাতে। হেদায়েত আল্লাহর হাতে হলে আল্লাহ নবী কেন পাঠালেন?’ এ কথার সংশোধনী এসেছে কি না পুরো বয়ানে তা দেখুন। পুরো বয়ানে অন্যান্য কথা ভালো বলেছেন সেজন্য কি এই ভুল শুদ্ধ হয়ে যাবে? এতে যে বলার ও উপস্থাপনার ভুল হয়েছে তা মেনে নিতে হবে। এটা না মানা হঠকারিতা।
কাটপিছ বলে বলে কোনো কোনো এতাআতী ভাই যে অভিযোগ করছে, যদি তাদের এই অভিযোগ সত্য হত তাহলে তারা দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়াতে উদ্ধৃত সা‘দ সাহেবের বক্তব্যগুলো উল্লেখ করে ওনার অডিও পেশ করতে পারত যে, এই দেখুন, সা‘দ সাহেবের পুরো বয়ান। এতে কোনো আপত্তি নেই। আর এই দেখুন দেওবন্দের পেশকৃত উদ্ধৃিত। তাতে আগ-পর থেকে এই এই কথা বাদ দেওয়া হয়েছে, যার কারণে আপত্তি সৃষ্টি হয়েছে। পেয়েছেন এই পর্যন্ত এমন কোনো অডিও এতাআতীদের পক্ষ থেকে?! পাননি। পাবেনও না ইনশাআল্লাহ।
উত্তরঃ প্রশস্ত মানসিকতার সীমারেখা কী? ‘প্রশস্ত’ মানসিকতার একটি রূপ হল, আপনি বলবেন যে, এ ভুলগুলো ভুল না। আরেকটা হল এ ভুলগুলো থাকা সত্ত্বেও তার এতাআত করতে হবে। তার সাথে ভুলগুলোর পূর্বে যে আচরণ করা হয়েছে সে আচরণই করা হবে। তো এমন প্রশস্ততা তো শরীয়তে অনুমোদিত নয়।
আমরা বুঝতে চাই- প্রশস্ততা মানে কী? এটাও তো প্রশস্ততা যে, তার এতসব সমস্যা সত্ত্বেও শুধু এতটুকু বলা হল যে, তিনি আহলুস্সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের রাস্তা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, যা গোমরাহীর রাস্তা। তার অনেক বক্তব্য আহলুস্সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ইজমা পরিপন্থী। তিনি ফিকরী বে-রাহরবীর শিকার। এরচে কঠিন বা কড়া কোনো মন্তব্য করা হল না- এটাও এক ধরনের প্রশস্ততা।
আপনি যদি চান যে, এ ভুলগুলোকে সাধারণ ভুল হিসেবে ধরা হোক- এটাতো হবে না। এমন প্রশস্ততা যদি আশা করা হয় যে, কঠিন ভুলকে আপনি বলবেন হালকা ভুল- এটা তো হবে না। এটা তো অন্যায়। উনারা এ ধরনের প্রশস্ততা চাচ্ছেন।
সংকীর্ণতা ও প্রশস্ততার শরঈ যে সীমারেখা তার মধ্যেই আমাদের থাকতে হবে। নিজেদের থেকে প্রশস্ততা আবিষ্কার করা যাবে না।
মাওলানা সাদ সাহেবের ব্যাপারে দারুল উলুম দেওবন্দের অবস্থানে কোন রূপ পরিবর্তন হয়নি।
মাওলানা সাদ সাহেবের কিছু গলদ বয়ানের লিংক
লেখকঃ মুফতি রাশেদুল ইসলাম