যাকাত ফরজ হওয়ার ইতিহাস।
কুরআন- সুন্নাহর আলোকে সঠিক কথা এটাই যে, মুসলমানদের জন্য মক্কা মুকাররামাতেই নামাযের সাথে সাথে যাকাতও ফরজ করা হয়। অবশ্য যাকাতের নেসাব ও পরিমাণ এবং ক্ষেত্র- সমূহ নির্ধারণ এবং তা উসূল করার সরকারী ব্যবস্থা মদীনা মুনাওয়ারায় পৌঁছার পরে ধীরে ধীরে সম্পাদিত হয়। দ্বিতীয় হিজরীতে সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব ঘোষিত হয় এবং এর পরেই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় যাকাত, উশর ইত্যাদি উসূল করার জন্য মদীনায় ইসলামী হুকুমতের পক্ষ হতে দায়িত্বশীল কর্মচারী নির্ধারণ করা হয় এবং এ জাতীয় সাদাকার সমস্ত মাল বাইতুল মাল বা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করে ফকীর মিসকীনদের মাঝে ব্যয় করার সুব্যবস্থা করা হয় । নামায যে রূপ দৈহিক ইবাদত, যাকাত ও তদ্রুপ আর্থিক ইবাদত, যা আদায় করা প্রত্যেক সম্পদশালির যিম্মায় সর্ববাস্থায় জরুরী। কোনো ইসলামী হুকুমত এবং ইসলামী বাইতুল মাল তা উসূল করুক বা নাই করুক।
পূর্ববর্তী আম্বিয়ায়ে কেরাম আ. এর প্রত্যেকের শরীয়তে নামাযের ন্যয় যাকাতের প্রতিও গুরুত্ব দেয়া ফরজ ছিলো, কিন্তু ঐসব শরীয়তে যাকাতের সম্পদ ফকীর মিসকীনদের প্রয়োজনে খরচ করার অনুমতি ছিল না; বরং তা কোন নির্ধারিত স্থানে রেখে দেয়া হত যেটাকে আসমানি বিদ্যুৎ এসে জ্বালিয়ে দিত, আর এটাই ছিলো কবূল হওয়ার আলামত। এ উম্মত মহান আল্লাহর অনুগ্রহে ধন্য, এ জন্যে আল্লাহ পাক আপন দয়ার দ্বারা এটির অনুমতি দিয়েছেন যে, এ সম্পদকে মুসলমান ফকীর ও মিসকীনদের উপর খরচ করা হবে। উম্মতের ফকীর- মিসকীনদের সমস্যা সমাধানের এটা এমনই এক উত্তম পদ্ধতি যে, যদি সঠিকভাবে যাকাত আদায় করা হয় এবং সঠিক পাত্রে তা খরচ করার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া যায় তবে জনৈক ইউরোপিয়ান এর ভাষ্যানুযায়ী “মুসলমানদের মধ্যে একজন মানুষও বিবস্ত্র ও ক্ষুধার্ত থাকতে পারে না ।”
তথ্যসূত্রঃ
যাকাত আদায় করি, দোযখ থেকে বাচি।
লেখকঃমাওলানা মুমিনুল হক জাদীদ, ফেনী