কবরের আজাব হওয়ার কারণ
কবর পরকালের প্রথম ঘাঁটি। যে ব্যক্তি ভালো আমল করবে এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য প্রস্তুতি নেবে, কবর তার জন্য বন্ধুত্ব ও আনন্দের ঘর। আর যে ব্যক্তি খারাপ আমল করবে এবং আল্লাহর আনুগত্যের ক্ষেত্রে ত্রুটি করবে, কবর তার জন্য ভীতি ও অন্ধকারের ঘর। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কবর পরকালের প্রথম ঘাঁটি।
কেউ যদি এখান থেকে মুক্তি পায়, তাহলে পরবর্তী ঘাঁটিগুলো তার জন্য সহজ হবে। আর যদি কেউ কবর থেকে মুক্তি না পায়, তাহলে পরবর্তী ঘাঁটিগুলো তার জন্য আরো কঠিন হবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৮)
কোনো ব্যক্তি যখন মারা যায়, তখন সে বরজখে প্রবেশ করে এবং পুনরুত্থান পর্যন্ত সেখানে থাকবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘এরপর যখন তাদের কারো মৃত্যু আসবে, তখন সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে ফিরিয়ে দাও। যাতে আমি যেগুলো রেখে এসেছি, সেগুলোর ব্যাপারে নেক আমল করতে পারি। কখনো নয়। এটি একটি কথার কথা, সে তা বলবে। আর মানুষের পশ্চাতে রয়েছে বরজখ—পুনরুত্থান পর্যন্ত। ’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৯৯-১০০)
মহানবী (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, ‘যদি এই ভয় না থাকত যে তোমরা মৃতকে দাফন করবে না, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম, যাতে তিনি কবরের যে আজাব আমি শুনতে পাই, তা যেন তোমাদের শুনিয়ে দেন। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৯২)
মহানবী (সা.) প্রায়ই এই দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৮২২)
এসব হাদিস থেকে কবরের আজাবের সত্যতা প্রমাণিত হয়।
প্রশ্ন হলো, কী কী কারণে কবরবাসীরা আজাব ভোগ করবে? এ প্রশ্নের জবাব সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত দুইভাবে দেওয়া যায়। সংক্ষেপে বললে, আল্লাহকে না চেনা, তাঁর আদেশ অমান্য করা এবং গুনাহর কাজে লিপ্ত হওয়া কবরের আজাবের অন্যতম কারণ। বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে বলা যায়, রাসুল (সা.) নিম্নোক্ত লোকদের সম্পর্কে কবরের আজাব ভোগের কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো—
- কুৎসাকারী ও পরনিন্দুক।
- গীবত করা
- যে ব্যক্তি পেশাব করা থেকে উত্তমরূপে পবিত্র হয় না।
- মিথ্যুক।
- জিনাকারী।
- সুদখোর।
- নামাজ ছেড়ে দেয়া
- মুনাফেকি করা
- শিরক করা
এ ছাড়া অনেকের কথা রাসুল (সা.) উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ আমাদের কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন।
তথ্যসূত্রঃ